ছোটবেলার স্মৃতিতে ফিরে যেতে কার না ভালো লাগে! তা সে আম আদিম হোক কিংবা তারকা। বিশেষ করে বহু মানুষের জীবনেই তাঁদের স্কুল জীবনের স্মৃতি বড়ই মধুর। সম্প্রতি আরও একবার নিজের স্কুল জীবনের স্মৃতিতে ফিরলেন জনপ্রিয় টলি অভিনেতা আবির চট্টোপাধ্য়ায়। কিন্তু কোন স্কুলে পড়তেন আবির?
জানা যাচ্ছে, সল্টলেকের ‘লবণহ্রদ বিদ্যাপীঠ’-এর ছাত্র ছিলেন তিনি। ২১ জানুয়ারি, সোমবার ছিল স্কুলের ৪৬ বছরের জন্মদিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন অভিনেতা। মঞ্চে উঠে আবির চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এখানে আমার প্রিয় স্যারেরা সকলে আছেন, আর আমরা ছোটবেলায় আন্টি বলতাম, এখন তো শুনি যে ম্য়াডাম বলতে হয়…, তাঁদেরকে এবং দিদিমণিরাও আছেন, সকলকেই আমার প্রণাম। আমার সিনিয়ার, ব্যাচমেট যাঁরা আছেন, সকলকে আমার ভালোবাসা। আমি শুনলাম, ৯৭ মাধ্যমিক ব্যাচে আমার স্কুলে সবথেকে বেশি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ওটা আমাদের ব্যাচ ছিল। তাই একটা জোরে হাততালি হয়ে যাক।’
ফের আবির বলেন, ‘আমি খুব বেশি কথা বলব না, তবে দুটো মজার জিনিস বলি, (গলার আইকার্ড দেখিয়ে) এখানে লেখা আছে, আমি যেটা আশা করিনি, আবির চট্টোপাধ্যায় ১৯৯৭ ফিল্ম অ্যাক্টর…। (শুনেই উপস্থিত অনেকে হেসে ফেললেন) আর এখানে লেখা আছে আবির চট্টোপাধ্যায় প্রখ্যাত অভিনেতা, একেবারেই সেটা নয়। আমি এই লবণহ্রদ বিদ্যপীঠের ছাত্র, এটাই আমার সবথেকে বড় পরিচয়।’
এরপর অভিনেতা বলেন, ‘ একটু মজা করেই বলি, স্যার যখন বলছিলেন চুল কাটার বিষয়টা, এখানে অজয়, স্যার, ভৈরব স্যারও রয়েছেন, আর আমি আমার সঙ্গে দুজন এসেছে, ওরা আমার সঙ্গেই থাকে সবসময় থাকে, ওদের আমি বলি, হাতের নখগুলো কাটা আছে তো? হঠাৎ সারপ্রাইজ ভিজিট হত আমাদের, যে হাতে নখ কাটা আছে কিনা! অনেকেই চেষ্টা করতাম (মুখভঙ্গি করে দেখিয়ে) দাঁত দিয়ে কেটে ফেলার, কিন্তু হত না। তখন অনেককিছুই হয়েছে। তবে সে সবকিছুরই প্রয়োজন ছিল। এই এখানেই স্টেজ বাঁধা হত, শিক্ষার্থী উৎসব হত। আমার বাড়িতে হয়ত বাবা-মা, কাকুর কাছে শিখেছি, তবে তখন বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে নাটক হোক, ছবি আঁকা হোক, কিংবা স্কুলের ঘর সাজানো, এগুলো করেছি, যে শেখাগুলো আজ কাজে আসছে।’
আরও পড়ুন-সত্যজিৎ-এর ‘তারিণীখুড়ো’কে নিয়ে ছবি, কলকাতায় এসে কী বললেন পরিচালক অনন্ত মহাদেবন?
আবির বলেন, ‘একটু লজ্জা নিয়েই বলছি, আজ স্যার যখন বলছিলেন, বহুদিন পর ওঁর পুরো বক্তব্য বসে শুনলাম। পুরো বাংলায় বললেন, যেটা আমিও হয়ত এখ কথা বলতে গেলে বাংলার মধ্যে ইংরাজি মিশে যাবে, যেটা লজ্জার, তবু চেষ্টা করি। আরও একটা বিষয়, আমার স্কুলের জার্নি ৮০ সালে শুরু, আমরা ৮৭ ব্যাচ। এই স্কুল থেকেই ক্রিকেট খেলা হোক, কিংবা ফুটবল খেলা হোক সব টিমেই টিমে খেলতাম। (বাইরের দিকে দেখিয়ে) ওই যে আমাদের ফুটবল টিমের সকলে বাইরে দাঁড়িয়ে জয়ন্ত, দেবজিৎ, শান্তনু সবাই। এখন যত বয়স বাড়ছে বুঝতে পারি ওই ট্রেনিংগুলো কতটা দরকার ছিল। এখন হয়ত বলি, স্কুলের ব্যাগটা ভারি হয়ে গেছে, তবে সেটা আমাদের সময়ও ছিল। তবে সেই ভারি ব্যাগের সঙ্গেও আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের অনেক কিছু শিখেয়েছেন, সেটা এখন আমি প্রতি মুহূর্তে টের পাই।’
আবির আরও বলেন, ‘আরও একটা বিষয়, আমি কোভিডের সময় হিন্দিতে, বাইরে কাজ করতে গিয়েছিলাম, তখন আমি যেমন আমার বাংলার ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিত্ব করেছি, তেমনই আমার স্কুল-শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও প্রতিনিধিত্ব করেছি, ওঁর আমায় যা কিছু শিখিয়েছেন, আজ তা সবই ফুটে উঠছে। আর খুব বেশি স্কুলে ফেরত না আসার কারণ, একটা মন খারাপ থাকে।’