ফের একবার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। বুধবার সামাজিক মাধ্যমে ভাই দেবদীপ চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে মুখ খুলতে দেখা গেল তাঁকে। ওয়েব সিরিজের আউটডোর শ্যুটে গিয়ে নির্যাতনের শিকার তাঁর ভাই বলে অভিযোগ। বোলপুরে ইউনিটের ম্যানেজার অমিত তাঁর ভাইয়ের ওপর নির্যাতন করেন। বোলপুর স্টেশনে মারধরও করা হয় দেবদীপকে অভিযোগ।
ঠিক কী ঘটেছিল? ভাস্বর লিখেছেন, দেবদীপ একটি ওয়েব সিরিজে নায়কের চরিত্রে অভিনয় করছেন। করোনা মহামারীর সচেতনতার কথা মাথায় রেখে, বোলপুরে শ্যুটে যাওয়ার আগে আলাদা ঘর এবং নিরামিষ খাবারের অনুরোধ করেছিলেন তিনি। দেবদীপের কথায় ইউনিটের ম্যানেজার অমিত প্রাথমিক ভাবে রাজি থাকলেও, সমস্যার সূত্রপাত হয় বোলপুরে গিয়ে।
ভাস্বরের কথায়, তাঁর ভাই গিয়ে দেখেন আলাদা ঘর তো দূর নিরামিষ খাবারেরও কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। শৌচাগারও প্রচণ্ড নোংরা থাকায় পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর ছিল। বাধ্য হয়ে গোটা একটি দিন না খেয়ে, স্নান না করে, শৌচাগারে না গিয়েই কাটান তাঁর ভাই। বিষয়টা প্রযোজকের কানে যেতেই তিনি দেবদীপের অনুরোধ মতো সব ব্যবস্থা করেন। এমনকি নিজের রুমে থাকার ব্যবস্থাও করেন।
ভাস্বরের কথায়, দেবদীপের অভিযোগ, তাঁর বরাদ্দের পনির খেয়ে নিত ইউনিটের অন্যান্য আমিষাশীরা। সকলের জলকাটা বাসি ভাত রাতে খেতে দেওয়া হত তাঁকে। এক সপ্তাহ প্রায় এই পরিস্থিতিতে কাজ করে সে। সোমবার ট্রেনে কলকাতা ফিরে আসার পথে বিপত্তি। অভিযোগ, বোলপুর স্টেশনে আসার আগে দেবদীপ বার বার প্রশ্ন করেও জানতে পারেননি, কোন ট্রেনের কোন শ্রেণিতে তাঁর টিকিট কাটা হয়েছে। স্টেশনে এসে জানতে পারেন, স্লিপার ক্লাসে ফিরতে হবে তাঁকে।
ভাস্করের অভিযোগ, ইউনিট ম্যানেজার শ্যুটের প্রথম দিন থেকে তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করতে থাকে। স্টেশনে সবার সামনে দেবদীপের উপর মারমুখী হয়ে ওঠেন। দেবদীপের গায়েও হাত তোলেন বলে অভিযোগ। দেবদীপকে শাসিয়ে বলেন, ‘মারতে পারলে তো প্রথম দিনই তোকে মেরে পুঁতে দিতাম’! ভাস্বরের ক্ষোভ, সব দেখেও ইউনিটের কেউ কোনও প্রতিবাদ করেনি।
তাঁর ভাই প্রযোজককে ফোন করতেই তিনি জানান, দেবদীপের জন্য এসি কোচের টিকিট কাটার টাকা দেওয়া হয়েছিল। প্রযোজকের জন্যই শেষপর্যন্ত বাড়ি ফিরতে পারেন দেবদীপ। ভাস্করের দাবি, হাতেগোনা কিছু মানুষের জন্য ইন্ডাস্ট্রির এত বদনাম। প্রশ্ন, ‘আমার ভাইয়ের যদি এই হাল হয়, তা হলে নতুনদের ভবিষ্যত কী’? তাঁর আশা, দেবদীপের সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের বিহিত হবে। অমিতের মতো লোকেরা ভবিষ্যতে অভিনেতাদের গায়ে হাত তোলার আগে দু’বার ভাববে।