মাধ্যমিকের পরীক্ষা মিটেছে নির্বিঘ্নেই, তবে পরীক্ষা শেষ এই আনন্দে স্কুলেই ভাঙচুর চালালো পরীক্ষার্থীরা। ঘটনাটি কলকাতার নারকেলডাঙ্গা দেশবন্ধু বিদ্যাপীঠের। সেখানেই পড়ুয়ারা পরীক্ষার শেষে স্কুলের ফ্যান ভেঙে ফেলে এবং তান্ডব চালায় বলে খবর মিলেছে। পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, যে স্কুলের পড়ুয়ারা ভাঙচুর চালিয়েছে সেই স্কুলের কর্তৃপক্ষকেই এর দায়ভার নিতে হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট স্কুল ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে, ততক্ষণ ওই স্কুলের পরীক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ করা হবে না।
এমন ঘটনার কথা খবরে প্রকাশিত হতেই, হতবাক বহু মানুষ। এই খবরে এই প্রজন্মের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। আর এমনই হতাশা ধরা পড়ল অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের গলাতেও। ঘটনা নিয়ে ফেসবুকের পাতায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অভিনেতা।
কী লিখেছেন ভাস্বর?
হতবাক অভিনেতা লেখেন, ‘আমরা কোন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি কে জানে? কদিন আগে পড়লাম মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার পর একটা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা মিলে school property ভাংচুর করেছে।কারণ? তারা স্কুল ছেড়ে যাচ্ছে সেই ফূর্তিতে। আবার সেদিন দেখলাম,মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার আনন্দে text books ছিঁড়ে কুটিকুটি করে হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়েছে। Unbelievable! এরা কারা?এদের পরিবার কী শিক্ষা দিয়ে বড় করে তুলেছে? বই খাতা destroy করে উল্লাস?’
সবশেষে হতাশ ভস্বর লিখেছেন, ‘একদিন এইসব বাচ্চারা adult হয়ে সমাজ চালাবে?ভাবলেই ভয় হয়।’
প্রসঙ্গত, শুধু নারকেলডাঙ্গা দেশবন্ধু বিদ্যাপীঠে ভাঙচুরই নয়, ভাস্বরের লেখায় উঠে এসেছে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আনন্দে ছাত্রীছাত্রীদের পড়াই বই ছিঁড়ে ফেলার প্রসঙ্গও। আর এই ছবি ধরা পড়েছিল আলিপুরদুয়ার, বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা, মালদা, কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায়। এমনকি মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হতেই নেচে বা আবির খেলে পড়ুয়াদের উল্লাস করতে দেখা যায় পরীক্ষার্থীদের। এমন কাণ্ডে হতবাক হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু শিক্ষক, নেটিজেনরা।
এদিকে এদিন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের পোস্টের নিচে নেটিজেনদের কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। যেখানে বহু নেটিজেনই অভিনেতার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘একদম ঠিক কথা। সবার মনেই যা করেছি বেশ করেছি এই মনোভাবই প্রবল।’ কেউ লিখেছেন, ‘উদাসীন বাবা মা। বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে তাঁদের দায়িত্বের কথা ভুলে যায়। ভাবে সকল শিক্ষা কেবল শিক্ষকরাই দেবে। পারিবারিক শিক্ষার ব্যাপারে একবারও ভাবে না’ কারোর মন্তব্য, ‘ঠিক কথা ..…। এইজন্য আমরাই দায়ী। আমরা আমাদের অতীতের আলোকে সঞ্চারিত করতে পারি না বলেই হয়ত এই অধঃপতন’।
আরও একজন লেখেন, ‘সত্যি তাই বড্ড আতঙ্ক নিয়ে এসেছে এই সময়’। দেবনাথ চট্টোপাধ্যায় বলে আরেকজনের মন্তব্য, ‘একদমই তাই... পারিবারিক শিক্ষাটাই আসল সমস্যার জায়গা। তার সঙ্গে সামাজিক অবস্থান। ভাবতেই পারি নি আমরা এসব ছোটবেলায়।’ এর পাল্টা উত্তরে ভাস্বর লেখেন, ‘ভাবনার ২০০০ মাইলের মধ্যেও ছিল না।’ টুম্পা রায় বলে একজন লেখেন, ‘Bhaswar তখন আমাদের মনে ভয় ছিল। বাড়িতে, স্কুলে শাসন ছিল, অনেক নিয়ম মানতে হতো আমাদের। তাই হয়তো আজও কিছু মূল্য বোধ বেঁচে আছে আমাদের মধ্যে।’ ফের তাঁর কথার পরিপ্রেক্ষিতে ভাস্বর বলেন, 'ভয়টাই এখন উধাও…'। এমনই অজস্র মন্তব্য উঠে এসেছে।