করোনা থেকে সেরে উঠেছেন মাত্র কয়েকদিন হল। তবে মা-কে হারানোর যন্ত্রণা এখন সবচেয়ে বেশি। ১৯ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল। তার ঠিক ৬ দিন পর তাণর মায়ের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট সামনে আসে। তিনি নিভৃতবাসে থাকাকালীনই মৃত্যু হয়েছে তাঁর মায়ের। করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন চৈতির দুই ভাইও।
একদিকে করোনা সংক্রমণ, অন্য দিকে মায়ের মৃত্যু, কীভাবে সামলেছেন নিজেকে? সম্প্রতি আনন্দবাজার ডিজিটালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চৈতি জানিয়েছেন, ‘২৫ এপ্রিল পর্যন্ত খুবই ভালো ছিলাম। ছেলে অমর্ত্য প্রায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় নানা ধরনের খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে। প্রথম দিকে শরীরে ভীষণ জলশূন্যতা সৃষ্টি হয়। ফলে, সেই সময় স্যুপ, সরবত-সহ নানা ধরনের পানীয় খেয়েছি প্রচুর পরিমাণে।’
এরপরই মায়ের করোনা সংক্রমণ সামনে আসে। মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটাছুটি করতে গিয়ে করোনা সংক্রমিত হয়ে পড়েন তাঁর দুই ভাইও। ছেলে অমর্ত্যকে পাঠিয়ে দেন বোনঝির কাছে। চৈতি ভাইদের সঙ্গে নিভৃতবাসে থাকা শুরু করেন।
অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ‘মা নেই। ফলে, নিজেকে যত্নআত্তি করার ইচ্ছেটাও যেন সাময়িক চলে গিয়েছিল। ওই সময় আমরা নিরামিষ খেয়েছি। এবং নিরামিষের মধ্যে যে সব খাবারে প্রচুর প্রোটিন ছিল, সেগুলো বেশি করে খেয়েছি। যেমন, দুধ, টক দই, ফল, পনির, ডাল, সয়াবিন।’ মন ভালো রাখতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলের সঙ্গে কথা বলতেন। পুরোনা দিনের কথা বলতেন। যোগাযোগ রেখেছিলেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও।
এখন করোনাকে জয় করেছেন। তবে মানসিক দিক থেকে সেরে উঠতে হয়তো আরও বেশ খানিকটা সময় লাগবে। চৈতির দাবি, করোনা পজিটিভ হওয়ার থেকেও বেশি অস্বস্তিজনক অসুখ-পরবর্তী মানসিক আতঙ্ক। আদৌ কি আমি করোনা নেগেটিভ? এই চিন্তাই ঘোরাফেরা করে মাথায়। চৈতি জানান, ‘কাউকে জড়িয়ে ধরব, কাজে বেরোব-- এই স্বাভাবিক ইচ্ছেগুলো কোথাও যেন থমকে গিয়েছে। মনে দ্বিধা, আদৌ কি আমি করোনাকে পেরিয়ে আসতে পেরেছি?’
তাই করোনার সময় শরীরের পাশাপাশি মনের যত্ন নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। মন ইতিবাচক রাখতে হবে। ভাবতে হবে করোনা পিছু হটছে। তবেই, একেবারে সেরে ওঠা সম্ভব। নয়তো শরীর ছেড়ে মনে বাসা বাঁধবে করোনা।