হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে নিরাপদে ঘরে ফিরিয়ে গোটা দেশের ‘সুপারহিরো’ সোনু সুদ।সোশ্যাল মিডিয়ায় উপচে পড়ছে বন্যা। অথচ রবিবারই সকলকে অবাক করে দিয়ে সোনু সুদকে কটাক্ষ করেন মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন দল, শিবসেনা সেনার নেতা সঞ্জয় রাউত।যা নিয়ে সরগরম মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতি। আর এই বিতর্কের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই শিবসেনা প্রধান তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করলেন সোনু সুদ। রবিবার নিজের বাসভবন মাতশ্রী'তে সোনুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর সোনুর উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতি এবং সেই সংক্রান্ত রিলিফ ওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে সোনু সুদ ও উদ্ধব ঠাকরের মধ্যে। এই দিনের আলোচনাায় শামিল হন যুব সেনা প্রধান,তথা রাজ্যের পরিবেশ ও পর্যটন মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে। হাজির ছিলেন রাজ্যের বিধায়ক আসলাম শেখও।
প্রসঙ্গত, রবিবার শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’র একটি কলমে সঞ্জয় রাউত প্রশ্ন তোলেন কীভাবে একার হাতে সোনু সুদ এত বাস,বিমানের বন্দোবস্ত করছেন যেখানে বেশকিছু রাজ্য সরকার পর্যন্ত হিমসিম খাচ্ছে পরিযায়ীদের ঘরে ফেরাতে। ‘একতা সোনু সুদ খারা’ অর্থাত্ ‘একমাত্র সোনু সুদ খাঁটি’ শীর্ষক কলমে রাউতের অভিযোগ 'বিজেপি আড়াল থেকে সোনুকে মদত জোগাচ্ছে,তাঁকে ‘মহাত্মা’ হিসাবে তুলে ধরতে চাইছে এবং শীঘ্রই ‘বিজেপির স্টার ক্যাম্পেনার’ হিসাবে সামনে আসবেন সোনু সুদ।
সোনুর সঙ্গে সাক্ষাত কী হবে শিবসেনার ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে। রবিবার রাতে আদিত্য ঠাকরে টুইট করেন, 'একসঙ্গে থাকাই ভালো, একসঙ্গে অনেক মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়। মানুষের জন্য সবার সঙ্গে মিলে কাজ করছে এমন একজন ভালো মনের মানুষের সঙ্গে দেখা করে খুব ভালো লাগল'। এই টুইট রি-টুইট করে সোনু লেখেন, 'এটা আমার সৌভাগ্য।পরিযায়ী শ্রমিক ভাইদের তাঁদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে সবরকম সাহায্যের জন্য ধন্যবাদ'।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত্ শেষে সঞ্জয় রাউতের কটাক্ষ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সোনু। তাঁর কথায়, রঙ নির্বিশেষে দেশের সব দলই তাঁকে সাহায্য করছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনওরকম মতবিরোধের খবর খন্ডন করেন সোনু সুদ। বলেন,'তাঁরাও সকলে এটা সমর্থন করছে এবং এটা কোনও পার্টির প্রশ্ন নয়..সাধারণ মানুষ কষ্টে আছে আমাদের তাঁদের পাশে দাঁড়াকে হবে..প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল,কাশ্মীর থেকে কন্য কুমাররী পর্যন্ত আমাকে সমর্থন এবং সাহায্য করছে এই কাজে'।
রাউত রবিবার সামনার প্রতিবেদনে লেখেন, 'মহারাষ্ট্র সরকার একটি ভিন্ন শাখা তৈরি করেছে পরিযায়ীদের ঘরে ফেরানোর কিন্তু একটা ক্যাম্পেন চলছে যে কেউ বাড়ি ফিরতে চাইলে শুধু এই নম্বরেই ফোন করুন,সোনু সুদ আপনাদের বাড়ি ফিরিয়ে দেবে। এটা সম্পূর্ন ইচ্ছাকৃতভাবে তৈরি করা হয়েছে। পিছন থেকে একটা বিশাল বড় রাজনৈতিক শক্তি কাজ করছে। লোককে বোঝানো হচ্ছে সরকার কিছুই করছে না কিন্তু সোনু সুদ করছে’।
রবিবার উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে সোনু সুদের সাক্ষাতের পরও সঞ্জয় রাউত শ্লেষাত্মক মন্তব্য করেন টুইটারে। সাংসদ মরাঠিতে লেখেন,'যাক অবশেষে সোনু সুদ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পেলেন। উনি মাতশ্রী পৌঁছেছেন। জয় মহারাষ্ট্র'।