কলকাতা : কয়েকদিন ধরেই তাঁর স্নায়বিক অবস্থা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছেন চিকিৎসকরা। তারইমধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্নায়বিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়েছে। তবে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল আছে।
গত রবিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তিনি চোখ খুলেছেন। কথায় সাড়া দিয়েছেন। এমনকী নিজেও কয়েকটি শব্দ বলেছেন। তবে সোমবার রাত থেকে তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায আছেন তিনি।
বর্ষীয়ান অভিনেতার মেডিক্যাল দলের প্রধান অরিন্দম কর বলেন, ‘আমরা এখন ওরকম (রবিবারের মতো) ভালো অবস্থায় নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় ওঁনার স্নায়বিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হয়েছে। ওঁনার যে জিসিএস স্কোর ১১-র আশপাশে ছিল, সেটা আবার ৯-১০-এর আশপাশে নেমে গিয়েছে। পাঁচ সদস্যের স্নায়ুরোগের বোর্ড জানিয়েছে, ইমিউনোগ্লোবিন এবং স্টেরয়েডের ফলে এটা হয়েছিল। সেই ওষুধ বন্ধ করে দেওয়ায় জিসিএস স্কোর আবার কমে গিয়েছে।’
সোমবার সৌমিত্রবাবুর এমআরআই টেস্ট হয়েছিল। তাঁর মেডিক্যাল দলের প্রধান বলেন, ‘তাতে কোনও গঠনগত অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েনি। আরও কিছুটা সময় ধরে কোভিড এনসেফেলোপ্যাথি থাকবে। কিন্তু সবথেকে খারাপ অবস্থায় অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকতে পারে। আগামী দু'দিনে আমরা তাঁকে আবারও ইমিউনোগ্লোবিন এবং স্টেরয়েড দেব।' আর সেই এনসেফেলোপ্যাথির বিষয়টিই চিকিৎসকদের দুশ্চিন্তায় রেখেছে। অরিন্দমবাবু বলেন, ‘আমাদের একমাত্র সমস্যা এনসেফেলোপ্যাথি। এটার অর্থ হল মস্তিষ্কের (কাজ) এবং চেতনার (মাত্রা) সেরা নয়। আমরা যে উন্নতি লক্ষ্য করেছিলাম, তা নেই। আমাদের আশা, ইমিউনোগ্লোবিন এবং স্টেরয়েডের মাধ্যমে উনি আবারও স্বাভাবিকের দিকে যাবেন। এনসেফেলোপ্যাথির স্থায়িত্ব নিয়ে আমাদের সকলের উদ্বেগ আছে। আমরা নিশ্চিত নয় যে তাঁর কতদিন চিকিৎসার প্রয়োজন আছে এবং কত দ্রুত তিনি স্বাভাবিকত্বের দিকে ফিরবেন। আরও কয়েকটি বিকল্প নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছি আমরা।’
তবে উৎকণ্ঠা থাকলেও আগের তুলনায় সৌমিত্রবাবুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভালো আছে বলে জানিয়েছেন অরিন্দমবাবু। তিনি বলেন, ‘আগেরদিনের তুলনায় ভালো বিষয় হল যে তাঁর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজকর্ম ভালোভাবে চলছে। অধিকাংশ সময় তাঁকে অক্সিজেন দিতে হতে হচ্ছে না। ওঁনার জ্বর নেই। ওঁনার কিডনি, লিভার এবং জমাট বাঁধার কাজ ঠিক আছে। নয়া কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি। রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে আছে। হৃদপিণ্ড ভালো আছে।’