২০২২-এর ২০ নভেম্বর ছিল সেই অভিশপ্ত দিন। যেদিন সকলকে কাঁদিয়ে মাত্র ২৪ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। ‘ইউয়িং সারকোমা’-র রোগী ছিলেন তিনি। এই ধরনের ক্যানসার সাধারণত সহজে পিছু ছাড়ে না। চিকিৎসকদের ধারণা ক্যানসারই ফিরে এসেছিল ঐন্দ্রিলার শরীরে। ব্রেন স্ট্রোকের পর তিনি কোমায় চলে যান। আর বাড়ি ফেরা হয়নি ঐন্দ্রিলার।
তবে ঐন্দ্রিলা না থেকেও আছেন। তাঁর সমস্ত স্মৃতি বহু যত্নে বাঁচিয়ে রেখেছে তাঁর পরিবার। প্রায়দিনই মা শিখা শর্মা কিংবা দিদি ঐন্দ্রিলা শর্মার সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় জীবন্ত হয়ে ওঠেন ঐন্দ্রিলা। মঙ্গলবার আরও একবার চিকিৎসক দিদি ঐশ্বর্য শর্মার সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় ফিরে এল ঐন্দ্রিলার স্মৃতি। ছবিটি অবশ্য বেশ পুরনো। হঠাৎ স্মৃতির অ্যালবাম হাতড়ে বোনের সেই ছবি খুঁজে পেয়েছেন ঐন্দ্রিলা। ছবিটিটি পোস্ট করে ঐশ্বর্য লিখেছেন, ‘আমি তখন ক্লাস সেভেন, বোনু তখন ক্লাস ফোর।’
ঐশ্বর্যর এই পোস্টের নিচে অনুরাগীদের কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। একজন লিখেছেন, 'ক্লাস ফোর! কিন্তু কী ম্যাচিওর ফেস'। কেউ আবেগ তাড়িত হয়ে লিখেছেন, ‘আমি তো কেঁদে ফেললাম…’। কারোর মন্তব্য, 'কী মিষ্টি ছবি'।
কিছুদিন আগে 'মা' দিবসেও শিখা শর্মার সঙ্গে নিজের ও বোন ঐন্দ্রিলার বেশকিছু ছবি পোস্ট করেছিলেন ঐশ্বর্য শর্মা।
এদিকে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে দিদি ঐশ্বর্যর এই সব পোস্টে অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী কি কোনও কমেন্ট করেছেন? কৌতুহলী নেটিজেনদের অনেকেই হয়ত সেটা খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু নাহ, সব্যসাচী এখানে কোনও কমেন্ট করেননি। প্রসঙ্গত সব্যসাচী তো বর্তমানে ফেসবুকেই নেই। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পরপরই তিনি নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে নেন। তারপর থেকে আর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেরেননি।
প্রসঙ্গত, সালটা ছিল ২০১৫, সেবছর নিজের জন্মদিনের দিনই ঐন্দ্রিলা জানতে পেরেছিলেন নিজের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার কথা। তখন তাঁর বয়স সবেমাত্র ১৭। সেসময় ক্যানসারকে হারিয়েছিলেন এবং সুস্থ হয়ে নিজের ছোটবেলার স্বপ্নও পূরণ করেন। পরবর্তী সময়ে কাজ শুরু করেন ‘জিয়ন কাঠি’ ধারাবাহিকে। সেইসময়ই তাঁর আলাপ প্রেমিক সব্যসাচীর সঙ্গে। পরে ‘জিয়ন কাঠি’তে কাজ করতে করতেই দ্বিতীয়বার ফিরে আসে ক্যানসার। সেবার ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার পরও নিজের অসুস্থতা নিয়েও এই ধারাবাহিকের শ্যুটিং করেছিলেন ‘ফাইটার’ ঐন্দ্রিলা। সেইবার প্রায় সাত সেন্টিমিটার লম্বা একটি ছোট্ট টিউমার তৈরি হয়েছিল তাঁর বাঁ দিকের ফুসফুসে। অস্ত্রোপচারে আধখানা ফুসফুস বাদ যায়। তবে অভিনেত্রী সেরেও ওঠেন। তখনও ঐন্দ্রিলার পাশে থেকে তাঁর হাত শক্ত করে আগলে রাখতেন সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলা ২০২১ সাল নাগাদ ক্যানসারকে হারিয়ে সেরে ওঠেন। । তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর মাসে প্রয়াত হন ঐন্দ্রিলা।