করোনা সংকটে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন থেকে অনেক দূরে এখন শুধুমাত্র মায়ের ভূমিকায় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা সরকার। ছেলে সহজকে নিয়ে এখন তাঁর সারাদিন ব্যস্ততা। এই ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে সময় পেলে গল্পের বই পড়ছেন, ভিডিয়ো গল্পে মা-বাবা'র সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছেন।নতুবা প্রিয় পোষ্যর সঙ্গে খেলায় মেতে উঠছেন। অনান্য বছর পয়লা বৈশাখের আগের দিন শপিং মলে গিয়ে নতুন জামা কেনায় ব্যস্ত থাকেন, কিন্তু এবার ছবিটা একদম আলাদা। করোনা সংকটের মাঝেও নতুন বাংলা বছরটা ছেলে সহজের সঙ্গে কীভাবে কাটাবেন প্রিয়াঙ্কা সরকার? আড্ডায় জানালেন HT Bangla-কে।
‘এক সপ্তাহ পর পয়লা বৈশাখে বাড়িতে মাছ হবে!’
পয়লা বৈশাখে এবছর দুটো জিনিস খুব স্পেশ্যাল। সহজের নতুন জামা আগে থেকেই রয়েছে একটা, কিন্তু আমার কিছু হয়নি। অনান্য বছর আমি খুব মাথাব্যাথা করি- নতুন জামা, নতুন জামা করে, এবছর পরিস্থিতির চাপে কোনও চান্সই নেই। আমি মাছ খেতে খুব ভালোবাসি, এমনি সময়ে মাছ আমাদের বাড়িতে রোজদিন রান্না হয়, মাংস ততোটা হয় না। রেশন বাড়িতে প্রায় শেষ, কিন্তু টানাটানি করে চালিয়ে নিচ্ছি-কারণ বাজারে যেতে কেউ ইচ্ছুক নই-এইভাবে যতদিন চালানো যায়। পয়লা বৈশাখের জন্য বাড়িতে কাল মাছ রান্না হবে। এক সপ্তাহ পর আমার বাড়িতে মাছ হবে! ভাবতেই পারছি না।
প্রিয়াঙ্কার ‘আইসক্রিম ঐতিহ্য’
পয়লা বৈশাখে ছোটবেলা থেকেই আমার বাড়িতে আইসক্রিম খাওয়ার ট্রাডিশন আছে। সেটা খুব এক্সাইটিং। মানে ছোটবেলায় এমনি সময়ে ওই রাস্তার আইসক্রিম কাকুদের থেকে বরফের আইসক্রিম খেতে হত। তবে পয়লা বৈশাখের দিনটা একটা দামি আইসক্রিম পেতাম। মা কিনে দিত, কর্নাটো বা ওই ধরণের কোনও আইসক্রিম। সহজের সঙ্গেও এই ঐতিহ্যটা আমি বজায় রেখেছি। সেটার জন্য দু-তিন রিহার্স্যাল করে একটা আইসক্রিম বানাতে দিয়েছি। কিছুই নয় ওই স্কোয়াস গুলে একটা আইসক্রিম-যেটা বরফ আইসক্রিমই হবে, কিন্তু ওই আইসক্রিম খাওয়ার ট্রাডিশনটা বজায় থাকবে এটাই বাঁচোয়া।
'পেশাদার ও ব্যক্তিগত জীবনটা দিব্বি কাটল এবছর'
এই শেষ মাসটা বাদ দিলে কাজে কাজে ভালোই কেটেছে এই বছরটা। বর্ণপরিচয় ও বিবাহ অভিযানের মতো ছবি মুক্তি পেয়েছে। আমি যশের সঙ্গে সুরিন্দর ফিল্মসের ছবির শ্যুটিং সারলাম। সোহমের সঙ্গে প্রতিঘাত ছবির কাজ সেরেছি। অনেকগুলো বিজ্ঞাপনের কাজও করেছি। পরিবারের দিক থেকেও বেশ ভালো। আগে এর চেয়ে অনেক খারাপ দিন গেছে। তাই সবমিলিয়ে ‘নট ব্যাড’।
'বছর ভালো কাটুক, সবার আগে পৃথিবী করোনামুক্ত হোক'
এই কটা দিন একটু কষ্ট করে কাটিয়ে দিতে পারলে খুব ভালো। লোকজন এখনো যেভাবে বিষয়টাকে গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছে না সেটা খুব ভয়ের। সরকার ও প্রশাসনের তরফে যথেষ্ট চেষ্টা করছে কিন্তু মানুষ যেভাবে বাজার-দোকানে ঘুরে বেড়াচ্ছে সেটা আশঙ্কার। মানছি, অনেকেরই রেশন নেই তাদের প্রয়োজনে বার হতে হচ্ছে। বাজারে গেলে দয়া করে সবাই মুখ ঢেকে যান এবং অন্য সব নির্দেশিকা মেনে চলুন। এই কটা দিন কিন্তু লাক্সারির নয়, এই কটা দিন কষ্টে কাটিয়ে দিতে পারলে আগামী দিন ভালো কাটবে। পয়লা বৈশাখে আমরা সবাই অনেক প্ল্যানিং করি-আড্ডা,বাইরে খাওয়া দাওয়া, পিকনিক পার্টি করি, সেটা পরেও আসবে। কিন্তু বছরটা আমরা সবার ভালোর জন্য একটু কষ্ট করতেই পারি। সেটা মানুষকে বুঝতে হবে।