দুর্গাপুজোর আর এক মাসও বাকি নেই আর অপরদিকে ৯ অগস্ট আর জি কর কাণ্ডের পর কেটে গিয়েছে একমাস। এখনও বিচার পাইনি কলকাতার নির্যাতিতা 'বোন'। তাই মন ভালো নেই রাজ্যবাসীর। উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। ঘটনার প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পথে নেমেছেন তারকারাও। শুরুর দিকে বেশকিছু ছবির টিজার লঞ্চ অনুষ্ঠান স্থগিতও রাখা হয়েছিল। তবে বাধ্য হয়েই পূর্ব নির্ধারিত মতোই কিছু বাংলা ছবি মুক্তি দিতেই হচ্ছে। আর সেকারণেই ছবির প্রচারের জন্য ট্রোলও হতে হচ্ছে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। এই পরিস্থিতিতে অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রের কী অভিমত?
প্রসঙ্গত, সাংসদ অভিনেতা প্রেমিক দেবের সঙ্গে ছুটি কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন। আর ঠিক তারপরই দুজনেই শুরু করে দিয়েছেন তাঁদের আসন্ন ছবি ‘টেক্কা’র প্রচার। রুক্মিণী বলেন, এখনও কিছুই ভেবে উঠতে পারেননি। শহরে ফিরেই পরিবারে কিছু সমস্যা হয়েছিল আর এরপর ছবির প্রচার নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন তিনি। উৎসবে ফেরা নিয়ে তাঁর কী বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, কেউ কোনও বিষয়কে গ্রহণ করবেন কিনা কিংবা তার বিরোধিতা করবেন কিনা তা একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। উৎসবে কে চাইলে অংশ না নিতেই পারেন, এই নিয়ে কাউকে অসম্মান করার বিপক্ষে তিনি।
আরও পড়ুন: (শুধু সলমন-রশ্মিকাই নন, 'সিকান্দার'-এ থাকছেন কাজলও! শুরু করলেন শ্যুটিং)
পাশাপাশি রুক্মিণীর ধারণা, উৎসব খুবই সীমিত সংখ্যক মানুষের কাছে ‘উৎসব’ হয়ে ওঠে। অনেকের মতো তাঁরও ছোট ব্যবসায়ীদের নিয়ে চিন্তা হয়। তিনি বলেন, সমাজের ‘খুব ছোট্ট একটা অংশ অর্থনৈতিক দিক থেকে সুরক্ষিত। তাঁরা আগামী এক বছর কিছু না করলেও হয়তো কোনও সমস্যা হবে না।‘
রুক্মিণী বলেন, ‘উৎসবে ফিরতে বলছি না। কিন্তু, এই মানুষগুলোর দিকে সাহায্যের হাতটা বাড়িয়ে দিই, তা হলে হয়তো মানুষ হিসেবেও আমরা আরও একটা ধাপ এগিয়ে যাব।‘ সসমসময়িক খারাপ পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে আরজি করের ঘটনাকে মনে রেখেই রুক্মিণী জানালেন, ভালো-খারাপের মিলিয়েই সমাজ। কিন্তু কোনও একটি খারাপ ঘটনাকে ভালো করতে গিয়ে আরও একাধিক খারাপ পদক্ষেপ নেওয়াকে সঠিক মনে করেন না তিনি।
টলিপাড়ায় একের পর এক নারীনিগ্রহের ঘটনার বিষয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল রুক্মিণী। ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিমধ্যেই নারীসুরক্ষা বজায় রাখতে টলিপাড়ার মহিলা শিল্পীরা সংগঠন তৈরি করেছেন। অন্য দিকে হেমা কমিটির মতো রাজ্যে একটি কমিশন তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। এই বিষয়ে রুক্মিণী বললেন, ‘খুবই ভালো উদ্যোগ। সুদীপ্তাদি (অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী) আমাকে সে দিনই বিষয়টা জানিয়েছেন। আর আমার মনে হয়, এই ধরনের সংগঠনে নিরপেক্ষ একটি প্যানেলও থাকা উচিত।'
আরও পড়ুন: (‘সবার প্রতি আমার…’ পিআর বিতর্ক এবং স্ত্রী ২-র সাফল্য নিয়ে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করলেন অপারশক্তি)
অনেক দিন আগেই ইন্ডাস্ট্রিতে নারীসুরক্ষার ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মনে করেন। তাঁর বক্তব্য, যেটা ঘটেছে, সেটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক!কিছু একটা ঘটে গেলে তখন সকলের খেয়াল পড়ে। দেরি হলেও সেটা শুরু হয়েছে দেখে তিনি খুব খুশি।
তিনি আরও বলেন, তিনি শুরু থেকেই ইন্ডাস্ট্রিতে নারীসুরক্ষার পক্ষে বার্তা দিয়েছেন।এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৭ সালের ঘটনা, কিন্তু আমার এখনও মনে আছে। কোনও একটি প্রতিযোগিতায় আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, নিজের জন্য কী করার ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়। অনেকেই ভেবেছিলেন, আমি নায়িকাসুলভ কোনও উত্তর দেব। আমি বলেছিলাম, আমি নারীসুরক্ষার ক্ষেত্রে কোনও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে চাই।’
আরও পড়ুন: (লালবাউগচা মন্দিরে খালি পায়ে গণপতিকে প্রণাম ভিকির! আসন্ন ছবির জন্য প্রার্থনা?)
দেবের প্রযোজনা সংস্থার দায়িত্ত্বও সমান তালে সামলান রুক্মিণী। সেই প্রযোজনা সংস্থা মহিলা শিল্পীদের সুবিধার জন্য অনেক ব্যবস্থাই রাখেন। মহিলাদের সুরক্ষা বা হাইজিন শুধু নয়, কোনও প্রজেক্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নারীসুরক্ষার বিষয়টি খেয়াল রাখেন তাঁরা বলে জানিয়েছেন রুক্মিণী। পুরুষ এবং মহিলা, প্রত্যেকেই যেন সঠিক সময়ে গাড়ি পান, ভালো খাবার পান— এ রকম কিছু জিনিস ঠিক রাখার চেষ্টা করা হয়। কারণ, একজন মানুষকে ভালো এবং সুরক্ষিত পরিবেশ দিলে তিনিও তাঁর সেরাটা দিতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন রুক্মিণী।