যৌন হেনস্থার অভিযোগে তোলপাড় মালায়ালি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। জাস্টিস হেমা কমিটির রিপোর্টে মলিউডের একাধিক সুপারস্টার অভিনেতা, পরিচালকের বিরুদ্ধে মহিলারা যৌন নির্যাতন, হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। এবার সেই আঁচ গিয়ে পড়ল কলিউডে অর্থাৎ তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। পরিচালকের বিরুদ্ধে শারীরিক-মানসিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনলেন এক তামিল অভিনেত্রী! মালায়ালি ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করেছেন তিনি।
এনডিটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নির্যাতিতা বলেন, ওই পরিচালক তাঁর সঙ্গে ‘সেক্স স্লেভ’ অর্থাৎ যৌন দাসীর মতো আচরণ করত। যদিও ওই পরিচালকের নাম এখনই সংবাদমাধ্যমে ফাঁস করেননি অভিনেত্রী। অভিযোগকারিণী অভিনেত্রী বলেন, মাত্র ১৮ বছর বয়সে ওই পরিচালকের খপ্পরে পড়েছিলেন তিনি। শুরুতে মেয়ে হিসাবে সৌম্যকে কাছে টানলেও পরে অভিনেত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে সন্তানের জন্ম দিতে চেয়েছিলেন ওই পরিচালক।
অভিনেত্রী জানিয়েছেন, কেরল সরকার যে বিশেষ পুলিশ টিম গঠন করেছে যৌন হেনস্থার মামলার তদন্তে, সেই দলের কাছেই পরিচালকের নাম ফাঁস করবেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের গোড়ায় তিনটি মালায়ালাম ছবি এবং একটি তামিল ছবিতে অভিনয় করেন অভিনেত্রী।
নির্যাতিতা বলেন, তখন কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। বয়স সবে ১৮। কলেজের থিয়েটার গ্রুপে অভিনয়ের সূত্রে একটি তামিল ছবিতে কাজের সুযোগ আসে। তাঁর বাড়ির খুব কাছেই ছিল অভিনেত্রী রেবতীর বাড়ি। তাই ছোট থেকেই অভিনয়ের জগতটা তাঁর কাছে ছিল একটা ফ্যান্টাসি। স্বপ্নপূরণের হাতছানির পিছনে ছুটেছিলেন। সোজা অডিশন দিতে পৌঁছে যান ছবির জন্য।
তিনি জানান,পরিবার রাজি ছিল না। তাঁরা চায়নি মেয়ে অভিনয়ে নামুক। ওই ব্যক্তির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ-এর পর সৌম্যা নিজেও ওই ছবিতে কাজ করতে ইচ্ছুক হননি। তবে পরিচালক রীতিমতো শাসানি দিয়ে জানান, তাঁর স্ক্রিনটেস্টে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সুতরাং বাধ্য হয়েই ছবিতে কাজে নামেন সৌম্যা। ঠিক ছিল, পরিচালকের স্ত্রী ছবিটি পরিচালনা করবেন। যদিও বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি।
আউটডোর শ্যুটে শুরুতে ওই ব্যক্তি শুরুতে অভিনেত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। হামেশা রাগী আচরণ করতে শুরু করেন। তাতে ঘাবড়ে যান অভিনেত্রী। পরে সম্পর্ক সহজ হয় ওই দম্পতির সঙ্গে। নির্যাতিতা জানান, দুজনেই মেয়ে ছেড়ে চলে যাওয়ার গল্প বলে তাঁকে ইমোশন্যাল করে তোলে। এরপর তাঁর সঙ্গে ভালো আচরণ করে মন জয় করেন। এবং কিছুদিন পর নির্যাতিতা তাঁদের বাড়িতেই থাকতে শুরু করে।
গোটাটাই চক্রান্ত বুঝতে পারেননি অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘একদিন ওঁনার স্ত্রী বাড়িতে ছিল না। আমাকে মেয়ে বলে ডেকে উনি চুমু খান। আমি স্তম্ভিত হয়ে পড়ি…. কাউকে মুখ ফুটে কিছু বলতে পারিনি। হয়ত সবাই আমাকেই ভুল ভাবত’। এরপর তিনি বলেন, 'এরপর আমার শরীরটা উনি নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে থাকেন। একটা সময়পর নিয়মিত ওর হাতে আমি ধর্ষিতা হই। এক বছর এটা চলে। সেইসময় প্রায়শই বলত, আমার থেকে একটা বাচ্চা চাই ওঁনার।
মালায়ালাম ইন্ডাস্ট্রিতেও যৌন নির্যাতনের ঘটনা জারি ছিল। অভিনেত্রীর কথায়, এক সহ-অভিনেতা আমাকে যৌন হেনস্থা করেছিল, হেমা কমিটির রিপোর্টে তারও নাম এসেছে। নির্যাতিতা বলেন, তাঁর ৩০ বছর সময় লেগে গেছে নিজের সঙ্গে ঘটা এই ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে। তবে দোষীরা শাস্তি পাক এটাই একমাত্র কামনা তাঁর।