আরজি কর কাণ্ডের পর নির্যাতিতার স্মরণে হাসপাতাল চত্ত্বরেই বসেছে আবক্ষ মূর্তি। দেবীপক্ষের সূচনাকালে মহালয়ার দিনই হাসপাতাল চত্ত্বরে এই মুর্তিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, তাও আবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের অফিসের ঠিক সামনেই। আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উদ্যোগেই এই মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা যাচ্ছে, জুনিয়র চিকিৎসকদের গণ-কনভেনশনে পাশ হওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী হাসপাতাল চত্ত্বরে নির্যাতিতার স্মরণে এই আবক্ষ মূর্তি বসানো হয়েছে। মূর্তিটি বানিয়েছেন শিল্পী অসিত সাঁই। 'অভয়া'র স্মরণে এই মূর্তির নাম রাখা হয়েছে 'ক্রাই অফ দ্য আউয়ার। (সময়ের বা ঘণ্টার কান্না)' যদিও নির্যাতিতার মুখের সঙ্গে এই আবক্ষ মূর্তির কোনও মিল নেই। তবে এই আবক্ষ মূর্তির চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। অনেকেই এই মূর্তিটি বানানোর বিরোধিতা করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন, এই মূর্তি বানানোর আগে নির্যাতিতার পরিবারের সম্মতি নেওয়া হয়েছিল কিনা। এধরনের মূর্তি দেখা সত্যিই অস্বস্তিকর বলে দাবি করেছেন। আবার অনেকেই এই মূর্তি বানানো নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন।
তবে এই মূর্তি বানানোর ক্ষেত্রে জুনিয়র চিকিৎসকদের হয়েই গলা চড়ালেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। 'অভয়া' স্মরণে তৈরি হওয়া আরজি কর হাসপাতাল চত্ত্বরের আবক্ষ মূর্তি নিজের ফেসবুকের পাতায় শেয়ার করে শ্রীলেখা লিখলেন, ‘অস্বস্তিকর ...তাইনা? একটু অস্বস্তি হক না হয়। দুর্গাপুজোর সবকিছুর মধ্যে এটাও থাকুক।’
আরও পড়ুন-দেবীপক্ষেই বিয়ে সারছেন, কনের বেশে তৈরি রূপসা, বর বেশে সায়নদীপ কি হাজির?
শ্রীলেখার এই পোস্টের নিচে কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। অনেকেই অভিনেত্রীর সমর্থনে সুর চড়িয়েছেন। এরমধ্যে লিখেছেন, ‘থাকুক, থাকাটা দরকার। অস্বস্তিটা দরকার, অন্তত যে শহরে, মহালয়াতেই উৎসবে মেতে ওঠার ভীড় উপচে পড়ে সে শহরে তো দরকারই...’। কেউ লিখেছেন, ‘চরম অস্বস্তিকর ঘৃণ্য কাজ, তার প্রতিফলন তো অস্বস্তিকরই হবে। ঘটনা ঘটেছে, দেখতে দোষ কি!?’
কেউ আরেকটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, ‘একেবারেই ঠিক শ্রীলেখা মিত্রদি, এটা অভয়ার প্রতিনিধিত্ব করে মাত্র। তাঁর দুঃখজনক মৃত্যু এবং তাঁর উপর হওয়া নিষ্ঠুরতাকে চিত্রিত করে। এটার নাম সময়ের বা ঘণ্টার কান্না। এটা অভয়ার আবকখো মূর্তি না, যে সুন্দর করে বানানো হবে। এটা বানানো হয়েছে সেই মানুষগুলোর দিকে আঙুল তুলতে যাঁরা ঘটনাটা ঘটেছে। যাতে কেউ এই মূর্তির দিকে তাকালে তার ব্যাথা, ক্ষোভ, ক্রোধ অনুভব করতে পারে। এটা কোনও সুন্দর স্মরণীয় মৃত্যু নয়, যে সুন্দর করে মূর্তি বানিয়ে সাজিয়ে রাখা হবে। এই ব্যথা সবসময়ের জন্য সকলকে অনুভব করানো উচিত।’
যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লোকজন এই মূর্তির বিরোধিতা করে পোস্ট করেছেন অনেকেই।