আরজি করের ঘটনার দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ৪২ দিন। তবে এখনও বিচারের আশায় চোখের জল ফেলছে নির্যাতিতা মেয়েটির মা-বাবা। ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা শহর। তিলোত্তমাকে দেখে বোঝা দায়, সামনে পুজো। শহরে এখন মিছিল, বিক্ষোভে। শুক্রবার হাইল্যান্ড পার্ক থেকে শ্যামবাজার অবধি একটা লম্বা মশাল মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ৪২ কিমি পথ পৌঁছে গিয়েছিল জ্বলন্ত মশাল হাতেহাতে, প্রতিবাদের মুখ হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ থেকে তারকা, ডাক্তাররা।
রাতে হঠাৎ দুর্যোগ হয়েছিল কলকাতা শহরে। ঝড়, বৃষ্টি দেখে বাড়িতে থাকা অনেকেরই কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল। অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী রাতে ফেসবুকে লিখলেন, ‘এখন রাত ১.০০ টা বেজে ১০ মিনিট। কলকাতার রাস্তায় দলে দলে বিভিন্ন বয়সের মহিলারা। সঙ্গে বেশ কিছু পুরুষও। রাগে, ক্ষোভে, অভিমানে ফেটে পড়ছেন তাঁরা। সবার গলায় বিচারের দাবী। 'মশাল হাতে এক স্বর/ জাস্টিস ফর আর জি কর।' 'আামার রাজ্য আমার দেশ/ অত্যাচারির হবে শেষ।' আন্দোলনের ৪২ তম দিনে ৪২ কিলোমিটার পথ ধরে রিলে মশাল মিছিল শুরু হয়েছিল বিকেল ৪.০০টেয়। এখনো চলছে। জুনিয়র ডাক্তাররা ও পা মিলিয়েছেন। রয়েছেন কিছু অভিনেতা ও ফিল্ম পরিচালকও।’
‘বেশ জোরে হাওয়া দিচ্ছে। ঝড় উঠছে বোধহয়।’, আরও লেখেন তিনি। এরপর রাত ২টোতেও একটি পোস্ট করেন তিনি। যেখানে টিভি থেকে নেওয়া হয়েছেকিছু ফোটো। অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘এখন রাত ২টো ২০। অবিশ্বাস্য!!! চোখ ফেটে জল আসছে আমার।’
অভিনেত্রীর শেয়ার করা ভিডিয়োতে স্লোগান শোনা যাচ্ছে, ‘যই আসুক বৃষ্টি ঝড়, জাস্টিস ফর আরজি কর।’ এই মিছিলে দেখা গেল বিরসা দাশগুপ্তকেও। শুক্রবার পথে নেমেছিলেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র, বিদীপ্তা চক্রবর্তীরাও।
আপাতত দুজনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই আপজি কর খুন ও ধর্ষণের ঘটনায়। সন্দীপ ঘোষ, যিনি সেইসময় ছিলেন এই হাসপাতালেরই অধ্যক্ষ। সঙ্গে টালা থানার ওসি। একাধিক ডাক্তারি পড়ুয়ার দাবি, থ্রেট কালচারে ভরে ছিল মেডিকেল কলেজগুলিতে। টাকা চাওয়া হত, প্রতিবাদ করলে দেওয়া হত রেজিস্ট্রেশন বাতিলের দাবি। যার অন্যতম মাথা ছিল এই সন্দীপ ঘোষ। সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। ফলে চিরতরে হারিয়েছেন তিনি ডাক্তার মর্যাদা। এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আন্দোলনকারীদের চাপে পড়ে সরিয়েছে সিপি বিনীত গোয়েলকে। কিন্তু প্রশ্ন, তাতে কি আদৌ সঠিক বিচার পাবে ৩১ বছরের মেধাবী ডাক্তারি পড়ুয়া তরুণীটি। আসল দোষীরা আসবে তো সামনে?