বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজ্যবাসী। রাজনৈতিকভাবে দুজনের অবস্থান ভিন্ন মেরুতে, তবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে শোকসন্তপ্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও। একজন অভিজাত, রুচিশীল, সৎ তথা সংস্কতিমনস্ক রাজনীতিককে আজ কাঁদছে বাংলা। লাল সেলামে কমরেডকে বিদায় জানাচ্ছেন সকলে। আরও পড়ুন-‘শেষশয্যায় শুয়ে আছেন-বুদ্ধবাবু, কি শান্তি মুখে…’, আবেগঘন সুদীপা! CPIM ছাড়ল ‘বুদ্ধপন্থী’ জিতু
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে স্মরণ করে এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত অ্যালবম থেকে এই ছবিটি শেয়ার করে নিয়েছেন টলিউডের এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী। আর সকলের কাছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হলেও তাঁর কাছে শুধুই বুদ্ধ-মামা। সাদাকালো এই ছবিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কোলে বসে আদর খাচ্ছে এই খুদে। মন দিয়ে খুদের সঙ্গে চলছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বার্তালাপ। কে এই খুদে?
ফ্রক পরা এই খুদে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ডাকসাইটে বামনেতার কন্যা। ছোট পর্দা থেকে বড়পর্দায় অবাধ বিচরণ তাঁর। হ্যাঁ, এই খুদে আর কেউ নন, ‘জুন আন্টি’ উষসী চক্রবর্তী, প্রয়াত কমরেড শ্যামল চক্রবর্তীর মেয়ে। শ্যামল চক্রবর্তীর সঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নিবিড় যোগ ছিল। সেই সূত্রেই তিনি উষসীর বুদ্ধ-মামা। মৃত্যুর খবর পেয়েই বুদ্ধদেবের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন উষসী।
শোক সামলে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে জানান, এই মৃত্যু তাঁর জীবনের ব্যক্তিগত ক্ষতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর সঙ্গে মেয়েবেলার ছবি শেয়ার করে লেখেন, 'জয়লোভে যশলোভে রাজ্য লোভে অয়ি…বীরের সদ্গতি থেকে ভ্রষ্ট নাহি হই ‘ বুদ্ধমামা, লাল সেলাম’।
সাদা কালো ছবিতে সাদা পাঞ্জাবি আর ধুতিতে পাওয়া গেল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে। চোখে মোটা কালো ফ্রেমের চশমা। ডান হাতে সিগারেট। খুদের সঙ্গে কথোপকথন জমে উঠেছে, যা বেশ স্পষ্ট।
বুদ্ধদেবের পাম এভিনিউয়ের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে উষসী জানান, ‘সততা, স্বচ্ছতার রাজনীতির দৃষ্টান্ত বুদ্ধবাবু। আমি বুদ্ধমামা বলতাম। সতীর্থরা তৈরি করে গিয়েছেন। একজন একজন করে চলে যাওয়া মানে, সেই ইতিহাসটাও কোথাও যেন মুছে যাওয়ার চেষ্টা হবে। সেটা যেন না হয়। সেই সততার রাজনীতি স্বচ্ছতার রাজনীতি যেন বজায় থাকে। রাজনীতি মানেই চুরি কিংবা অস্বচ্ছতা নয়। বুদ্ধবাবুর প্রজন্ম এটা প্রমাণ করে দিয়ে গিয়েছেন। একথা মনে রাখতে হবে। তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে হবে। সেটাই বুদ্ধমামার প্রতি আমাদের সকলের সঠিক শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হবে। আমার কাছে এটা ব্যক্তিগত ক্ষতি। ছোটবেলায় নানারকম স্মৃতির মধ্য দিয়ে বড় হয়েছি।’
সেই স্মৃতির একফালি টুকরোই সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের অগস্টে, বাবাকে হারিয়েছিলেন উষসী। আজ ফের একবার অভিভাবকহীন তিনি।