দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে শোনা যায় হাসপাতালে যাওয়া নিয়ে ছিল তাঁর প্রবল আপত্তি। আর তাই পাম অ্যাভিনিউয়ের নিজের বাড়িতেই বৃহস্পতিবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রয়াণে স্মৃতিভাগ ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের।
ঋতুপর্ণার সঙ্গে ছিল তাঁর স্নেহের সম্পর্ক। তাই বিয়ের দিন একজন অভিভাবকের মতোই আশীর্বাদ করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁকে। সেই স্মৃতিচারণ করেই অভিনেত্রী বললেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। আমি একবার হাসপাতালে দেখতেও গিয়েছিলাম। বহু স্মৃতি আজ ভিড় করে আসছে। আমার বিয়ের দিনের কথা মনে পড়ছে। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও বুদ্ধবাবু সেদিন এসেছিলেন। আমাকে আশীর্বাদ করেছিলেন তাঁরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসলে এইসব মানুষেরা বিরল এই পৃথিবীতে। তাঁর ত্যাগ, আইডিয়োলজি, মানসিকতা, শিক্ষা- আমাদের সমাজকে সবসময়ই আলোকিত করেছে। আজকে ওঁর মতো একজন শিক্ষিত মানুষ, এমন ব্যক্তিত্ব, বলিষ্ঠ রাজনীতিবিদ চলে গেলেন। তা ক্ষতি বলা চলে। আমাদের সমাজের জন্য যে কাজ করে গিয়েছেন, যে সম্ভার রেখে গিয়েছেন, আমার মনে হয় সেটা আমাদের কাছে খুব বড় পাওনা। একজন ডেডিকেটেড মানুষকে আমরা হারালাম।’
আরও পড়ুন: (টরেন্টোর ফুড ফেস্টিভ্যালে প্রীতি, ধরা দিলেন দেশি লুকে)
আরও পড়ুন: (ফ্রক পরা বাচ্চা মেয়েটিকে আদরে ভরাচ্ছেন ‘মামা’ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য,খুদেকে চিনলেন?)
বুদ্ধবাবু হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। তাঁর প্রয়াণের দিন অভিনেত্রী বললেন, ‘এই মানুষটাকে অন্তর থেকে স্যালুট। প্রণাম জানাই তাঁকে। পরিবারের সকলকে আমার সমবেদনা। আমরা সবসময় বুদ্ধবাবুকে মনে রাখব। এবং সব কাজের মধ্যেই তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন আজীবন।’
রাজনীতির দুনিয়ায় তিনি ছিলেন একজন আদর্শ নেতা। প্রায় এগারো বছর পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। জ্যোতিবাবুর উত্তরসূরী হিসেবে দেশের কাছে রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। পাশাপাশি তাঁর পাণ্ডিত্য নিয়েও কোনও প্রশ্ন নেই। একের পর এক অনবদ্য লেখা তিনি সৃষ্টি করেছেন। এদিন তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করলেন টলিউডের একাধিক ব্যক্তিত্ব।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একটি ছবি পোস্ট করেন তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে তিনি লেখেন, 'একজন সত্যিকারের ভালো গুনী মানুষ চলে গেলেন ...ভালো থাকবেন .. বুদ্ধ বাবুর পরিবারের প্রতি রইল আমার আন্তরিক সমবেদনা।'
বাদ গেলেন না রূপম ইসলাম পত্নীও। রূপসা দাশগুপ্ত তাঁর ফেসবুকের পাতায় এদিন লেখেন, 'ওঁর জীবনটাই সব থেকে বড় উদাহরণ ছিল সাধারণ ভাবে বেঁচে বড় ভাবনা চিন্তা করার।'
সৌরভ পালোধি, যিনি নিজেও একজন কমিউনিস্ট এবং সিপিএম সমর্থক তিনি ভীষণ গভীর ভাবে শোকাহত হয়েছেন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর প্রয়াণে। তিনি এদিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের একটি ছবি শেয়ার করে লেখেন, 'আমরা সবাই আপনাকে হারিয়ে দিলাম।'