সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে এবার বলিউডের অন্যতম নামী প্রযোজনা সংস্থ যশ রাজ ফিল্মসের কর্ণধার তথা রানি মুখোপাধ্যায়ের স্বামী আদিত্য চোপড়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করল মুম্বই পুলিশ।
শনিবার সংবাদ সংস্থা এএনআই এই খবর নিশ্চিত করেছে।
সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই ৩৮ জনের বয়ান রেকর্ড করল মুম্বই পুলিশ। গত ১৪ জুন সুশান্তের আত্মহত্যার খবর সামনে আসবার পর থেকেই নেটিজেনদের একটা বড় অংশ কাঠগড়ায় তুলেছে বলিউডের নামী প্রযোজনা সংস্থাগুলিকে। স্বজনপোষণের কাঁটায় বিদ্ধ হতে হয়েছিল সুশান্তকে,দাবি করেছেন তাঁর অনুরাগী ও তাঁর পরিচিতরা। কঙ্গনা রানায়ত নাম করে ‘মুভি মাফিয়া’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন আদিত্য চোপড়া,করণ জোহরদের নাম। সুশান্তের মৃত্যুর কারণ হিসাবে পেশাদার জগতে রেষারেষির বিষয়টা শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে মুম্বই পুলিশ। তদন্তকারীদের নজরে শুরু থেকেই রয়েছে প্রযোজনা সংস্থা যশ রাজ ফিল্মস।
যশরাজ ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন সুশান্ত। তাঁদের সঙ্গে দুটি ছবিতে কাজও করেন তারকা-প্রয়াত অভিনেতার কেরিয়ারের দ্বিতীয় ছবি শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স (২০১৩) এবং ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সী (২০১৫)। এছাড়াও সুশান্তের সঙ্গে 'পানি' প্রজেক্টটিও করবার কথা ছিল যশরাজ ফিল্মসের। তবে ২০১৫-র শেষের দিকে আচমকাই পরিচালক শেখর কাপুরের এই প্রজেক্ট থেকে সরে আসে যশরাজ ফিল্মস। এরপরেই যশ রাজের সঙ্গে সুশান্তের সম্পর্কে চিড় ধরে। এরপর বেফিকরে ছবিটিও সুশান্তকে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন আদিত্য চোপড়া,তবে সেই কথাও রাখেননি পরিচালক। এরপর ২০১৫-র ডিসেম্বরেই যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে সব সম্পর্ক ভেঙে ফেলেন সুশান্ত।
আগেই যশ রাজের দুই প্রাক্তন উচ্চ পদস্থ আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মুম্বই পুলিশ। যশ রাজের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট (প্রোডাকশন) আশিস সিং এবং অপর প্রাক্তন আধিকারিক আশিস পাতিলকে জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। ২০১২ সালে যশ রাজের সঙ্গে সুশান্তের স্বাক্ষর করা চুক্তিতে তাঁদের দুজনের সই রয়েছে। অন্যদিকে যশ রাজ ফিল্মসের কাস্টিং ডিরেক্টর শানু শর্মাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মুম্বই পুলিশ।
ঠিক কী কারণে বাতিল হয়েছিল চুক্তি, সেই বিষয়টাই জানতে চেয়ে এই জিজ্ঞাসাবাদ মুম্বই পুলিশের, বলে সূত্রের খবর। পুলিশ সূত্রে খবর শুদ্ধ দেশি রোম্যান্সের জন্য যশ রাজের তরফে ৩০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল সুশান্তকে। চুক্তিতে উল্লেখ ছিল প্রথম ছবি হিট হলে পরের ছবির জন্য ৬০ লক্ষ টাকা পাবেন অভিনেতা। এবংর তৃতীয় ছবির জন্য ১ কোটি টাকা দেওয়া হবে। ছবি হিট হয়েছে না ফ্লপ-তা ঠিক করবে প্রযোজনা সংস্থা। যদিও দ্বিতীয় ছবি ডিটেক্টিভ ব্যোমকেশ বক্সীর জন্যই ১ কোটি টাকা দেওয়া হয় সুশান্তকে। চুক্তিপত্রে ৬০ কোটির কথা উল্লেখ কথা সত্ত্বেও কেন ৪০ লক্ষ টাকা অধিক দেওয়া হয় অভিনেতাকে সেই বিষয়টি এখন পরিষ্কার নয়।