অভিনেতা জ্যাকি শ্রফের নাম অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তাঁর নাম, কণ্ঠস্বর এবং ছবি ব্যবহার করতে নিষেধ করল দিল্লি হাইকোর্ট। জগ্গু দাদা-র মতো শব্দও বাণিজ্যিকভাবে ব্যাবহার করা যাবে না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় জ্যাকির নকল ভয়েসর রমরমা। যথেচ্ছভাবে প্রচার কাজে বিনা অনুমতিতে ব্যবহার হচ্ছে তাঁর ছবি। এ বার তাতেই জারি হল নিষেধাজ্ঞা।বিচারপতি সঞ্জীব নারুলা ১৫ মে অন্তর্বর্তী নির্দেশে বলেছেন, যে সংস্থাগুলি ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলিতে ওয়ালপেপার, টি-শার্ট এবং পোস্টার ইত্যাদি বিক্রি করে এবং একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করে তারা প্রাথমিকভাবে অভিনেতার ব্যক্তিত্ব এবং প্রচারের অধিকার লঙ্ঘন করে তাঁর গুণাবলীর অপব্যবহার করছে।
বিচারক দুজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের বিরুদ্ধেও এই নির্দেশ দিয়েছেন যারা শ্রফের ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন ‘অত্যন্ত অশ্লীল শব্দ’ এবং ‘গালিগালাজ’-সহ।আদালত বলেছে যে শ্রফ একজন সেলিব্রিটি এবং এই মর্যাদাটি সহজাতভাবে তাকে তাঁর ব্যক্তিত্ব এবং সেই সম্পর্কিত গুণাবলীর উপর কিছু অধিকার দেয়।
জ্যাকির কণ্ঠস্বর ও ছবির লাগামছাড়া ব্যবহারে রাশ টানতে চলেছে উচ্চ আদালত। অভিনেতার নাম ভাঙিয়ে কোনও বিজ্ঞাপনী প্রচার চলবে না। আদালত জানায়, ‘বাদী (জ্যাকি শ্রফ) পক্ষ একতরফা নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুরের জন্য একটি মামলা প্রতিষ্ঠা করেছেন। যদি বর্তমান মামলায় কোনও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া না হয় তবে এটি কেবল আর্থিকভাবেই নয়, সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার অধিকারের ব্যাপারেও বাদীর অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে’।
আদালত অভিনেতার অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আরও কয়েকটি সংস্থাকে নোটিশ জারি করেছে, যার মধ্যে একজন ইউটিউব কনটেন্ট ক্রিয়েটর। একটি কথিত অবমাননাকর ভিডিয়ো হোস্ট করছেন এবং একজন রেস্তোঁরা মালিক তার আউটলেটের জন্য জ্যাকি শ্রফের ট্রেডমার্ক বুলি ‘ভিড়ু’ ব্যবহার করছেন।
ভিডিয়ো প্রসঙ্গে আদালত বলেছে, অভিনেতার চরিত্রায়নে কোনও মিথ্যে কথা বলা হয়নি। তবে কোনও আদেশ দেওয়ার আগে ইউটিউবারের কথা শুনতে চান বিচারপতি। আদালত ১৫ অক্টোবর পরবর্তী শুনানির জন্য বিষয়টি তালিকাভুক্ত করেছে। এর পাশাপাশি টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রককে টেলিকম পরিষেবা সরবরাহকারী এবং ইন্টারনেট পরিষেবা সরবরাহকারীদের লঙ্ঘনকারী ইউআরএল ব্লক করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করার নির্দেশ দিয়েছে।
শ্রফ বাণিজ্যিক লাভের জন্য বেশ কয়েকটি সংস্থার দ্বারা তাঁর নাম এবং ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলির লাইসেন্সবিহীন ব্যবহারের বিরুদ্ধে এই মাসের শুরুতে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। তার আইনজীবী পণ্যদ্রব্য এবং ওয়ালপেপার বিক্রির পাশাপাশি মেমস এবং জিআইএফ এবং এআই ব্যবহারের মাধ্যমে তার ব্যক্তিত্ব এবং প্রচারের অধিকারের ‘অপব্যবহার’ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
শ্রফের আইনজীবী প্রবীণ আনন্দ যুক্তি দিয়েছিলেন যে ২০০ টিরও বেশি ছবিতে কাজ করা অভিনেতার দ্বারা অনুমোদিত বলে মনে করে কোনও ব্যক্তি সেই পণ্য কেনার জন্য আগ্রহী হতে পারে। সেটা গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করা। তাঁর মামলার সমর্থনে শ্রফের আইনজীবী অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন এবং অনিল কাপুরের অনুরূপ মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের কথা উল্লেখ করেন।