ক্ষোভ-অভিমান নাকি অন্যকিছু? কলকাতায় আর থাকতে চান না পরিচালক পারোমিতা মুন্সি। কিন্তু হঠাৎ হলটা কী পরিচালকের? গত কয়েকদিন ধরেই ফেডারেশনের সঙ্গে মনোমালিন্য নিয়ে সংবাদ শিরোনামে গুহামানব পরিচালক। নিজের আসন্ন ছবি ‘হেমামালিনী’র শ্যুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন পারোমিতা। কিন্তু হঠাৎ করেই সবটা ভেস্তে গেল!
পরিচালক নিজের মুখে জানিয়েছেন, শ্যুটিং আপাতত বন্ধ। কিন্তু কেন? দিন কয়েক আগেই পরিচালকের বিরুদ্ধে ‘গুপি শ্যুট’ (বেআইনি শ্যুটিং)-এর অভিযোগ ওঠে। ফেডারেশনকে অন্ধকারে রেখে সাউথ সিটি আবাসনের অন্দরে হাতে গোনা টেকনিশিয়ান নিয়ে হেমা মালিনীর শ্যুটিং করেছেন পারোমিতা, অভিযোগ এমনই। অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য গত মাসের শেষে ফেডারেশন ও গিল্ড যৌথ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয় ওই শ্যুটে যে টেকনিশিয়ানরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা আগামী তিন মাসের জন্য নির্বাসিত।
সেই নিয়ে অবশ্য বিশেষ শব্দ খরচ করেননি পারোমিতা। তাঁর পালটা দাবি, ‘ফুল টেকনিশিয়ান নিয়ে কাজ করে, সবার পেমেন্ট ক্লিয়ার থাকার পরেও, ৯ জন টেকনিশিয়ান সাসপেন্ডেড করা হয়েছে কোনওরকম শো’কজ নোটিশ না দিয়েই। তবুও আমি আশাবাদী সংশ্লিষ্ট ওপর মহলের বিবেচনাশীল মনোভাবের ওপর'।
বিতর্কিত শ্যুটিং-এর একটি মনো ভালো করা মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে ভাগ করে নেন পারোমিতা মুন্সি। সেই ছবিতে পরিচালকের সঙ্গে একফ্রেমে দেখা গেল কাঞ্চনা মৈত্র এবং চৈতি ঘোষালকে। গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি হেমামালিনীর শ্যুটিং-এর ফাঁকে তোলা ছবি শেয়ার করে পরিচালক লেখেন, ‘এতগুলো টেকনিশিয়ানের রুজি রুটি বন্ধ। এই মনখারাপের দিনে, যখন ভাবছি কলকাতায় বসে বাংলা সিনেমা বানানোটা আমার জীবনের অন্যতম ভুল, তখন এক বন্ধু এই ছবিটি পাঠালো’। এরপর পারোমিতার কলমে উঠে এল তাঁর হাতে তৈরি হেমামালিনীর কথা। লিখলেন, ‘হেমামালিনী’ যে কোনও বায়োপিক নয়, তা এখন সবাই জানে। সিরিয়াস সিনেমার আচ্ছাদনে এতে আছে ফুল প্যাকেজ এন্টারটেইনমেইন্ট। হেমামালিনী, ধর্মেন্দ্র, হোমিপ্যাথি, ইলিউশন, এফ এম রেডিও, রিল মেকিং, যাত্রা, রবীন্দ্রনাথ... একটা পাল্প ফিকশন। আমাদের এই আধুনিক জীবনও তো একটা পাল্প ফিকশনই বটে। যার প্রতি মুহূর্তে চমক, সুপার মেলো, লাভ - হেট ফাইট, আর ড্রামাটিক টুইস্ট...'। নিজের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে মিল খুঁজলেন?
৯ জন টেকনিশিয়ানদের উপর থেকে সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত পুনঃবিচার করা হোক, এটাই একমাত্র চাওয়া পারোমিতার জীবনে। পরিচালকের কথায়,'আমি হয়তো এই শহরে আর থাকব না। কিন্তু আমার টেকনিশিয়ান দাদা দিদি ভাইরা যারা এখানে এত বছর সততার সঙ্গে কাজ করে, আজ সাসপেন্ডেড তাদের কাজ চালু হোক। তাদের পরিবারের মুখে অন্নের যোগান অব্যাহত থাক'।