আর জি কর কাণ্ডে সরব ৮-৮০। রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এরাজ্যের অধিকাংশ নাগরিক। ঘৃণ্য এই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন অনেকেই। বেশিরভাগ কলকাতাবাসীরই অভিমত, এশহর আর আগের মতো নিরাপদ নয়। ঠিক তখন একই সুর শোনা গেল মহম্মদ শামির বিচ্ছিন্না স্ত্রী হাসিন জাহানের মুখে।
ঠিক কী বলেছেন হাসিন জাহান?
নিজের ইনস্টাগ্রামে এক অন্তঃসত্ত্বা মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলার ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন হাসিন জাহান। যে মহিলাকে কলকাতারই কোনও এক বাজার এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সেই ভিডিয়োর উপরে লেখেন, 'যে দেশে একজন বয়স্ক পাগলের নিরাপত্তা নেই, সেদেশে আমার মা-বোন কেমনে নিরাপদ।' ভিডিয়োর ক্যাপশানে হাসিন লিখেছেন, ‘এক উমরদারজ পাগল আওরাত ভি নিরাপদ না হ্যায় হামারে দেশ মে। তো হামারি আপকি মা বেটি কেয়া নিরাপদ হোগি! কায়ামত হো যায় তো হি আচ্ছা হ্যায়। ইয়ে সমাজ আচ্ছে ইনসানো কে লিয়ে নেহি হ্যায়। (যে দেশে একজন প্রবীণ মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা নিরাপদ নন, আমাদের মা-মেয়েরা কীভাবে নিরাপদ! এই সমাজ আসলে ভালো মানুষদের জন্যই নয়।’
যদিও এই ভিডিয়োর নিচেও হাসিন জাহানকে ট্রোল করতে ছাড়েনি নেটপাড়া। তবে হাসিন জাহান অবশ্য শুরু থেকেই আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সরব ছিলেন। যদিও এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়েও নিজের প্রাক্তন মহম্মদ শামিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি হাসিন।
এর আগে আগে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে হাসিন লিখেছিলেন, 'আমার মনে হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল (এখন প্রাক্তন, সন্দীপ ঘোষ)-এর উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার আইনসিদ্ধ স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করার। যেইরকম আমাদের মামলায় শামি আহমেদ করেছিল… মিডিয়া মাফিয়াদের নিযুক্ত করেছিল,….. চ্যানেলগুলোকে কিনে নিয়েছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় ম্যানেজ করেছিল নিজেকে হিরো প্রমাণ করতে, আর নির্দোষ হওয়া সত্ত্বে দুনিয়ার চোখে আমি হয়ে গেলাম ভিলেন’!
এখানেই শেষ নয় হাসিনের দাবি, 'পুলিশকে ঘুষ খাইয়েছিলেন শামি ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। ৭ বছর আগের ভয়ঙ্কর এক রাতে তাঁকে এবং তাঁর তিন বছরের শিশুকন্যাকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ করেন হাসিন। লেখেন, 'পুলিশকে কিনে নিয়ে তিনজন অভিযুক্তের নাম চার্জশিটের বাইরে চলে গেল, আমরোহা পুলিশকে কিনে নিয়ে আমাকে আমার তিন বছরের মেয়েকে রাত ১২টার সময় বাড়ি থেকে বার করে দিয়ে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল…'।
এমনকি আরজি করের ঘটনার পরপর সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়েও মুখ খুলতে ছাড়েননি হাসিন জাহান। তাঁর কটাক্ষ ছিল, ‘সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো মানুষদের জন্য বোধহয় মেয়েরা শুধু এন্টারটেনমেন্ট এবং এনজয় করার বস্তু। তাই তো বলেছে ধর্ষণের মতো দুর্ঘটনা সারা বিশ্বে ঘটে, এর জন্য প্রশাসনের দিকে আঙুল তোলা সঠিক নয়। পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারত মেয়েদের জন্য সুরক্ষিত জায়গা’ হাসিনের কথায়, 'সৌরভজির মেয়ে এখনও সুরক্ষিত তাই অন্যের কষ্টটা উনি অনুভব করতে পারছেন না। আপনি কী জিনিস সেটা তো আমি ২০১৮ সালেই বুঝে গিয়েছিলাম, এখন বাঙালিদের জানাটাও জরুরি…কারণ এটা জরুরি নয় যে আপনি ভালো ক্রিকেটার মানে ভালো মানুষও হবেন। তবে খোদার কসম খেয়ে বলছি, বাঙালি বুদ্ধি আপনি একাই ব্যবহার করে এসেছেন'।