নতুন বছরের শুরুতেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে শাহরুখের ‘জওয়ান’ নায়িকা নয়নতারা। গত ২৯শে ডিসেম্বর নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছিল নয়নতারা অভিনীত ‘অন্নপূর্ণি’। সেই ছবির বিরুদ্ধে উঠল হিন্দু ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগ। পরিচালক নীলেশ কৃষ্ণার ‘অন্নপূর্ণি: দ্য গডেস অফ ফুড’-এ লাভ জিহাদের প্রচার করা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল এই দাবি ঘিরে।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেতে না বিতর্কের আগুন ফুলে ফেঁপে ওঠায় তড়িঘড়ি ক্ষমা চেয়ে নেন প্রযোজনা সংস্থা জি স্টুডিওজ। তাতেও মেলেনি রেহাই। নয়নতারা ও ‘অন্নপূর্ণি’ নির্মাতাদের নামে গত ৬ই জানুয়ারি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন রমেশ সোলাঙ্কি নামের এক জনৈক। মুম্বই পুলিশকে তড়িঘড়ি এফআর রুজু করার আবেদন জানান তিনি।এরপর মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে এক হিন্দু-সংগঠনের তরফে এই ছবির নির্মাতা ও কুশীলবদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
বিরিয়ানি রান্না করতে হিন্দু ব্রাহ্মণ পুরোহিতের মেয়ে নামাজ পড়ছে, এই দৃশ্য মেনে নিতে পারেননি তিনি। ছবির ঠিক কোন বিষয়ে আপত্তি তাও খোলাখুলি জানান সোলাঙ্কি। পুলিশে দায়ের অভিযোগের প্রতিলিপিতে তিনি বলেন, ‘লাভ জিহাদের প্রচার করা হয়েছে এই ছবি। ফারহান (জয় অভিনীত চরিত্র) অন্নপূর্ণিকে মাংস খেতে বাধ্য করে এই বলে, যে ভগবান শ্রীরামও মাংস খেতেন’। নয়নতারার পাশাপাশি, জয়, পরিচালক নীলেশ কৃষ্ণ, প্রযোজক যতীন শেটি, আর রবীন্দ্র, পুনিত গোয়েঙ্কা, জি স্টুডিও-র চিফ বিজনেস হেড অফিসার শারিক প্যাটেট এবং নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়ার প্রধান মনিকা শেরগিলের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলা।
বিতর্কের আঁচ তীব্র হতেই নেটফ্লিক্স ইন্ডিয়া তড়িঘড়ি এই ছবিকে সরিয়ে দেয় বুধবারই। বৃহস্পতিবার নির্মাতাদের তরফে এল সাফাই। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্দেশে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে জি স্টুডিওজ। বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, ‘ছবির সহ-প্রযোজক হিসাবে আমাদের কোনওরকম উদ্দেশ্য় ছিল না হিন্দু অথবা ব্রাহ্মণদের ভাবাবেগে আঘাত হানার। তবে আমরা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যে শ্রেণির মানুষ কষ্ট পেয়েছেন তাঁদের কাছে’।
গত ১লা ডিসেম্বর থিয়েটারে মুক্তি পায় অন্নপূর্ণি। চার সপ্তাহের মধ্যেই ওটিটি-তে চলে আসে এই ছবি, তারপরই বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। এই ছবির বিরুদ্ধে মুম্বইয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে বজরং দল এবং হিন্দু আইটি সেল।
রামমন্দিরের প্রাণপ্রতিষ্ঠা মাত্র কয়েকদিন দূরে। সুতরাং অন্নপূর্ণি বিতর্ক ঘিরে সরগরম রাজনৈতিক মহলও। অন্নপূর্ণির বিরুদ্ধে আনা হিন্দু সংগঠনগুলির অভিযোগের সঙ্গে সহমত নেটপাড়ার একটা বড় অংশ, অন্নপূর্ণির নামাজ পড়ার দৃশ্য এবং রাম-সীতা-লক্ষ্মণ বনবাসের সময় পশুশিকার করে মাংস খেতেন, এইদৃশ্য দেখে চটেছেন অনেকেই।