‘আরেকটু থাকতে দাও ওকে..’, বুধবার রাতে যখন সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে ভুয়ো রটনায় সেই সময় একথাই ফেসবুকে লিখলেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। গত ১৬ দিন ধরে হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ-তে লড়ে যাচ্ছেন ঐন্দ্রিলা। কোনও এক ‘মিরাকেল’-এর আশায় অপেক্ষারত সব্যসাচী। ঐন্দ্রিলার লড়াই সবচেয়ে কাছ থেকে দেখছেন সব্যসাচীই। এক মুহূ্র্তের জন্য গত ১৬টা দিন হাসপাতাল ছাড়েননি ঐন্দ্রিলার মনের মানুষ। এমন ভালোবাসা পাওয়ার সৌভাগ্য হয় ক'জনের? সব্যসাচীকে দেখলে সবার মনে একই প্রশ্ন!
প্রত্য়ক্ষদর্শীদের কথায়, ঐন্দ্রিলার পরিবারের অনান্য সদস্যদের চোখের জল বাধ মানছে না, কিন্তু অদ্ভূতরকম স্তব্ধ সব্যসাচী। গত কয়েকদিনে এক মিনিটের জন্যও চোখের পাতা এক করেননি সব্যসাচী। হাসপাতাল থেকে এক মুহূর্তের জন্য নড়ছেন না তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, হাসপাতালের উপরে যাওয়ার দুটো লিফট রয়েছে। একটি রোগী এবং হাসপাতালের কর্মীদের জন্য বরাদ্দ, অন্যটি রোগীর আত্মীয়দের জন্য, ভিসিটিং আওয়ার্সেই মূলত সেই লিফট ঘিরে ভিড় থাকে। কর্মীদের ব্যবহৃত লিফটই ব্যবহার করেন সব্যসাচী, এতদিনে হাসপাতালের সবকর্মীরাও ওঁকে চিনে গিয়েছে।
‘ভিজিটিং আওয়ার’ এর সময় এক মুহূর্তের জন্য হাসপাতালের বাইরে আসেন না সব্যসাচী। তাঁকে নিয়েও চিন্তায় বন্ধুরা। ঐন্দ্রিলা ভালো নেই এই সত্যিটা জেনেও মানতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে যে!
দিদি নম্বর ১-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে মাস কয়েক আগে ঐন্দ্রিলা জানিয়েছিলেন, ২০২১ সালে ক্য়ানসার ধরা পড়ার পর শরীরে তাঁর যাবতীয় ক্ষত হয়েছিল। জানান, ‘এত শারীরিক কষ্ট পেয়েছি কিন্তু মানসিক কষ্ট ছিল না একফোঁটাও।’ কারণ ঐন্দ্রিলার এই লড়াইয়ে সারাক্ষণ পাশে ছিল ‘ভালোবাসা’। ঠিক সেইসময় যেমন ঐন্দ্রিলার সাহস আর শক্তির উৎস ছিলেন সব্যসাচী, এখনও একইরকমভাবে ‘প্রাণের মানুষ’-কে প্রাণ দিয়ে আগলে রাখছেন সব্যসাচী।
গত ১লা সেপ্টেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন ঐন্দ্রিলা। এই সপ্তাহের শুরু থেকেই তাঁর পরিস্থিতি বিগড়েছে। গতকাল (বুধবার) পরপর হার্ট অ্যাটকের শিকার হন অভিনেত্রী, যা তাঁর ফিরে আসবার লড়াইকে আরও কঠিন করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রয়েছেন ঐন্দ্রিলা। তাঁর পরিস্থিতি অতিসঙ্কটজনক। তবুও লড়ছেন তিনি, আর বাইরে থেকে একটা নিস্তব্ধ লড়াই চালাচ্ছেন তাঁর ‘মনের মানুষ’ সব্যসাচী।