নাটকীয় পটপরিবর্তন! দুপুরে গ্রেফতারির পর নিম্ন আদালতে না-মঞ্জুর হয় জামিন। ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয় আল্লু অর্জুনকে। কিন্তু সন্ধ্যার আগেই তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট অন্তর্বতীকালীন জামিন মঞ্জুর করল ‘পুষ্পা রাজ’-এর। যদিও ইতিমধ্যেই চঞ্চলগুড়া জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আল্লুকে।
৪ঠা ডিসেম্বর হায়দরাবাদের সন্ধ্যা প্রেক্ষাগৃহে 'পুষ্পা ২: দ্য রুল'-এর প্রিমিয়ার শোয়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ৩৫ বছর বয়সী এক মহিলার। সেই মামলাতেই শুক্রবার নিজের বাড়ি থেকে হায়দরাবাদ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আল্লু। তেলেঙ্গানা সরকারের আইনজীবী জানান, আল্লুকে ওইদিন প্রেক্ষাগৃহে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল, বারণ শোনননি তারকা।
এদিন আল্লুর জামিন মঞ্জুর করে উচ্চ আদালত জানায়, ‘আমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করব এবং তাঁরা এরমধ্যে উপযুক্ত প্রতিকার খুঁজে নিক’। নামপল্লী ফৌজদারি আদালতে হতাশা হাতে এলেও উচ্চ আদালত থেকে স্বস্তি পেলেন সুপারস্টার।
আল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে মামলা কী?
গত ৪ ডিসেম্বর রাতে সন্ধ্যা থিয়েটারে অভিনেতাকে এক ঝলক দেখার জন্য বিপুল সংখ্যক ভক্ত ভিড় জমান৷ এই ঘটনায় ৩৫ বছর বয়সী এক মহিলার মৃত্যু হয় এবং ৯ বছরের শিশুপুত্র মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে হাসপাতালে।
আল্লু অর্জুনের গ্রেফতারির তাঁর জামিনের পিটিশনের শুনানি চলাকালীন অভিনেতার আইনজীবীরা হাইকোর্টে শাহরুখ খানের রইস-মামলা টেনে আনেন। বলা হয়, ‘রইস ছবির প্রচারের সময় শাহরুখের ভক্তদের মধ্যে টি-শার্ট ছুঁড়ে মারার কারণে পদপিষ্ট হয়ে ইচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ আনা হয় শাহরুখের বিরুদ্ধে। গুজরাট হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট শাহরুখ খানকে স্বস্তি দিয়ে বলেছে, পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে সরাসরি তার কাজের সম্পর্ক নেই এবং এটি কোনও অপরাধমূলক গাফিলতির মামলা নয়।’ ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি 'রইস' সিনেমার প্রচারে মুম্বই থেকে ট্রেনে চড়ে দিল্লি যাচ্ছিলেন শাহরুখ খান। তাঁকে এক ঝলক দেখার জন্য ভদোদরা স্টেশনে প্রচুর ভক্ত জড়ো হয়েছিলেন। পদপিষ্ট হয়ে অবস্থার এতটাই অবনতি হয় যে ৪৫ বছর বয়সী ফারদিন খান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
মামলার কথা উল্লেখ করে রেড্ডি বলেছিলেন যে আল্লু অর্জুন ছবিটির প্রচার করেছিলেন এবং ভক্তদের সাথে জনসংযোগ করেছিলেন, যা জনতাকে উত্তেজিত করতে পারে, তবে এটি তাঁর অসতর্কতা হিসাবে দেখা যায় না। তিনি আরও বলেছিলেন যে থিয়েটার ম্যানেজমেন্ট এবং প্রযোজক ইতিমধ্যে সন্ধ্যা থিয়েটারে অভিনেতার অনুষ্ঠান সম্পর্কে পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তাই এটি অবহেলা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে না।
মহিলার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আল্লু অর্জুন, তাঁর নিরাপত্তা দল এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর ১০৫ এবং ১১৮(১) ধারায় আল্লু অর্জুন, তাঁর নিরাপত্তা দল এবং থিয়েটার ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে চিক্কাদপল্লি থানায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
পালটি খেল মৃতার স্বামী
হায়দরাবাদে আল্লু অর্জুনের গ্রেফতারির কয়েক ঘণ্টা পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মৃতা রেবতীর স্বামী ভাস্কর বলেন, ‘আমরা সেদিন সন্ধ্যা থিয়েটারে গিয়েছিলাম কারণ আমার ছেলে সিনেমাটি দেখতে চেয়েছিল। এটা আল্লু অর্জুনের দোষ নয় যে তিনি সেদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছিলেন। আমি আমার মামলা প্রত্যাহার করতে প্রস্তুত। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের খবর দেয়নি, আমি হাসপাতালে খবরে দেখেছি। পদপিষ্ট হওয়ার সঙ্গে অর্জুনের কোনও সম্পর্ক নেই।’