করোনার জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। গত দু-বছরে কয়েক হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে হিন্দি ফিল্ম জগতের। এখনও অতিমারীর জেরে সিনেমাহল বন্ধ মহারাষ্ট্রের মতো হিন্দি ছবির অন্যতম বড় মার্কেটে। এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে এবার হাত মেলালো দেশের দুই অন্যতম বৃহত্ প্রযোজনা সংস্থা। মিউজিক লেবেল তথা ভূষণ কুমারের প্রযোজনা সংস্থা টি-সিরিজ এবং বিজনেস টাইকুন অনিল অম্বানির রিলায়েন্স এন্টারটেনমেন্ট ১০০০ কোটি টাকার এক ফিল্ম চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এই দুই সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তৈরি হবে ১০টি ফিচার ফিল্ম। অ্যাকশন থ্রিলার, ইতিহাস নির্ভর বায়োপিক, কমেডি, রোম্যান্টিক- সব জঁর ছবিই থাকছে এই ১০ বছর তালিকায়। আগামী বছরেই মুক্তি পাবে বেশ কিছু ছবি, আগামী ৩৬ মাস বা তিন বছর সময়কালের মধ্যে তৈরি হবে এই ১০টি ছবি। যা পরিচালনার দায়িত্বে থাকতে পারেন পুষ্কর ও গায়ত্রী, বিক্রমজিৎ সিং, মঙ্গেশ হাড়াওয়ালে, সৃজিত মুখোপাধ্যায়
ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্ ফিল্ম চুক্তি এটি। অনেকের মতেই বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা বিরাট বড় জুয়া। বহু প্রযোজকই অতিমারী পরিস্থিতির জেরে সিনেমাহলে মুক্তির বদলে সরাসরি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাচ্ছে। টি-সিরিজের কর্ণধার ভূষণ কুমার জানিয়েছেন, ‘শুধুমাত্র ওটিটির কথা মাথায় রেখে এতো বড় বাজেটের চুক্তি বা ছবি তৈরির পরিকল্পনা করা সম্ভবপর নয়’। এই দুই প্রযোজনা সংস্থাই তাঁদের আসন্ন বিগ বাজেট ছবির মুক্তি (যেমন সূর্যবংশী, ৮৩) গত বছর মার্চ থেকে পিছিয়ে চলেছে শুধুমাত্র বড়ো স্ক্রিনে সেই ছবি মুক্তি দেওয়ার জন্য। সরাসরি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল করেছেন তাঁরা।
সিনেমাকে বাঁচানোর তাগিদে গত সপ্তাহেই প্রোডিউসার্স গিল্ডের তরফে মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে সিনেমাহল খোলবার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। সিনেমাহল বন্ধ থাকবার জেরে প্রতি মাসে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির ৪০০ শো কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে।
দিওয়ালির পূর্বেই দেশব্যাপী সিনেমাহল খুলবে আশাবাদী ভূষণ কুমার। যদিও করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কতখানি সফল হবে দেশ, তার উপর অনেকখানি নির্ভর করছে এই সিদ্ধান্ত। উত্সবের মরসুমে লাফিয়ে করোনা সংক্রমণের হার বাড়তে পারে এমন আশঙ্ক্ষাও প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনও পর্যন্ত দেশের জনসংখ্যার মাত্র ১২ শতাংশ করোনা টিকার দু-টি ডোজ পেয়েছে।
রিলায়েন্স এন্টারটেইনমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (গ্রুপ সিইও) শিবাশীষ সরকার বলেছেন, টি-সিরিজের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার জন্য তিনি মুখিয়ে আছেন। অক্টোবর-নভেম্বরে করোনার তৃতীয় ঢেউ এলেও আগামী কয়েকমাসে পরিস্থিতি শুধরে যাবে আশাবাদী তিনি। তাঁর আশা, দুই সংস্থা সম্মিলিতভাবে কিছু উন্নতমানের হিন্দি ছবি দর্শকদের উপহার দিতে পারবে।