২০০২ সালের দুর্গাপুজোর অষ্টমীতে শুরু হয়েছিল যিশু-নীলাঞ্জনার প্রেমের গল্প। হিন্দি টেলিভিশনে ‘হিপ হিপ হুররে’ সিরিয়ালে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছেন অঞ্জনা ভৌমিকের বড় মেয়ে। এদিকে বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ উজ্জ্বল সেনগুপ্তের ছেলে। বাবা অভিনেতা হলেও সোনার চামচ মুখে জন্মাননি যিশু। তাঁকে স্ট্রাগল করতে হয়েছে বিস্তর। তবে কেরিয়ারের একদম গোড়ায় রোদের ঝিলিক হয়ে তাঁর জীবনে নীলাঞ্জনার এন্ট্রি।
এক দুর্গাপুজো পরিক্রমায় সেলেব জাজের ভূমিকায় অংশ নিয়েছিলেন দুজনে। সেই শুরু। এরপর একসঙ্গে কাজও করেন দুজনে। শ্যুটিং সেটে আরও পরিপক্ক হয় ভালোবাসা। দু-বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর ২০০৪ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন যিশু-নীলাঞ্জনা। জীবনের নানান কঠিন সময়ে পরস্পরের হাত শক্ত করে ধরে থেকেছেন দুজনে। বিয়ের পর অভিনয় কেরিয়ারে ইতি টেনে সংসারী হয়েছেন নীলাঞ্জনা। দুই মেয়ে সারা ও জারার জন্য নীলাঞ্জনার আত্মত্য়াগ কাছ থেকে দেখেছে বন্ধুরা।
‘ভাল-মন্দ যা-ই আসুক, আমরা হাত ছাড়ব না’, এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন নীলাঞ্জনা। অথচ সেই সম্পর্কই এখন ভাঙনের দোরগোড়ায়। যিশু-নীলাঞ্জনার ভালোবাসার নীড়ে চিড় ধরেছে। এতদিন ‘দু’জনেই দু’জনাতে মুগ্ধ’ থেকেছেন। এমনকী দীর্ঘ সময় ধরে যিশু বলিউড ও দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে কেরিয়ার নিয়ে ব্য়স্ত থাকলেও একা হাতে সংসার সামলেছেন নীলাঞ্জনা। পাশাপাশি যিশু উজ্জ্বল সেনগুপ্ত প্রোডাকশনের দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছেন… তারপরেও গুঞ্জন অন্য নারীতে আসক্ত যিশু! চর্চা আপ্তসহায়কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা জেরেই নাকি ভাঙনের মুখে তাঁর সংসার।
ইনস্টাগ্রামে স্বামীকে আনফলো করেছেন নীলাঞ্জনা। মুছে ফেলেছেন সেনগুপ্ত পদবি, ডিলিট করেছেন ছবি! শেষ এখানেই নয়, যিশু কলকাতায় থাকলেও লেক গার্ডেন্সের বাড়িতে উঠেননি! নীলাঞ্জনার সোশ্য়াল মিডিয়ায় দেওয়ালে মন খারাপের মেঘ জমেছে। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য একটু সময় চেয়ে নিয়েছেন যিশু ঘরণী।
এই তো বিশ দিন আগের কথা…..বড় মেয়ে সারার গ্র্যাজুয়েশনের অনুষ্ঠানেও পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল দুজনের। মেয়ের সাফল্যে চোখ চিকচিক করছে তাঁদের। অথচ সম্পর্কে যে হঠাৎ করেই এতটা দূরত্ব চলে আসবে কে জানতো?
নীলাঞ্জনার সাম্প্রতিক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে স্পষ্ট বিচ্ছেদের ইঙ্গিত। সেখানে যিশু ঘরণী লিখেছেন, ‘এই বছরটা জুড়ে থাকল একের পর এক হারানো, একটার পর একটা ক্ষতিতে, একের পর এক যুদ্ধতে। কঠিন সময় জীবনের আসল রং দেখতে পেলাম। দেখলাম, ভেঙে পড়লেও তা সুন্দর থাকা যায়, জানলাম আমায় ভালবাসার এবং ঘিরে রাখার কত মানুষ আছেন, আমার জীবনের শক্তির স্তম্ভ, হৃৎস্পন্দন হল সারা, জারা, এবং চন্দনা। তোমাদের ভালোবাসি। যাঁরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন তাঁদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এই কঠিন সময় পেরিয়ে ফিরে আসার জন্য একটু সময় নিচ্ছি।’
হ্যাঁ, এই পোস্টে দুই মেয়ে সারা, জারা ও বোন চন্দনার নাম নিলেও যিশুর উল্লেখ নেই। মায়ের পোস্টের কমেন্ট বক্সে মেয়ে সারা লেখেন, ‘তোমাকে নিয়ে গর্বিত মা’। সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন নীলাঞ্জনা। মন-খারাপ এখনও ঘিরে রয়েছে তাঁকে। তবে জীবন পথে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর তিনি। ফিরে আসার সময়টুকু চেয়ে নিয়েছেন।