বাংলার জমাই বলা হয় অমিতাভ বচ্চনকে। টুকটাক বাংলা কথাও বলতে পারেন তিনি। আসলে বাঙালি স্ত্রীকে বিয়ে করায় বাংলার মানুষদের মনে আলাদাই জায়গা করে নিয়েছেন। বিয়ের আগে জয়ার উপাধি ছিল ভাদুড়ি। এমনকী প্রথম অভিনয়ও বাংলা ভাষাতেই। শিশুশিল্পী হিসেবে সত্যজিৎ রায়ের মহানগর (১৯৬৩) সিনেমায় কাজ করেন জয়া।
আর এই বাঙালি মেয়েকে বিয়ে করতে গিয়েই ভীষণ গোলমালে পড়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। আসলে বাঙালি বরের বিয়ের সাজে থাকা, মাথার টোপরটি তাঁর একেবারেই ভালো লাগেনি। যা নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোক মানে জয়ার পরিবারকে বহু অনুরোধও করতে হয় অমিতাভকে।
জয়া ১৯৭৩ সালের জুন মাসের ৩ তারিখে অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। টোপর পরার অভিজ্ঞতা নিয়ে সম্প্রতি বিগ বি-কে কথা বলতে শোনা যায় সম্প্রতি কেবিসি-তে। যেখানে অমিতাভ বলেন, ‘‘আপনারা জানেন বাংলার সঙ্গে আমার সংযোগের কথা। আমি জানি না ওরা কেন ওই টোপর বানায় আর মানুষকে পরায়। আমার তো একেবারেই পছন্দ হয়নি। আমি জয়ার পরিবারকে বলেছিলাম, ‘আমাকে ক্ষমা করুন। আমি আপনাদের মেয়েকে বিয়ে করব। কিন্তু মাথায় ওই টোপর পরব না’।’’
জয়া অমিতাভকে প্রথম দেখেছিলেন তিনি যখন পড়াশোনা করছিলেন পুণের ফিল্ম ইনস্টিটিউটে। অমিতাভ যখন বলিউডে স্ট্রাগল করছেন, ততদিনে অভিনেত্রী হিসেবে সাফল্য পেয়ে গিয়েছেন জয়া। একসঙ্গে প্রথম কাজ করেন হৃষিকেশ মুখার্জীর ‘গুড্ডি’-তে। জয়াই আগে প্রেমে পড়েছিলেন অমিতাভের। এরপর ‘এক নজর’-এর সেটে অমিতাভেরও ভালো লেগে যায় জয়াকে। তারপর আর কী, বলিউডের অ্যাংরি ইয়ং ম্যান ভালোবেসে ফেলেন এক বাঙালি কন্যেকে।
বিয়েটা হয়েছিল হুট করেই। ‘জঞ্জির’ ছবিতে কাজ করছিলেন অমিতাভ আর জয়া একসঙ্গে। সিনেমা হিট হলে ছবির সকলে লন্ডন যাবেন, এমন পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি বিগ বি-র পরিবার। বিয়ের আগে কোনও মেয়ের সঙ্গে ছেলেকে ছাড়তে রাজি ছিলেন না তাঁরা। ব্যস আর কী, বিয়েটা করে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অমিতাভ। প্রপোজ করেন জয়াকে। কিছুদিনের মধ্যেই সব প্রস্তুতি সারা হয়ে যায়। ১৯৭৩ সালের ৩ জুন হয় বিয়েটা, আর ওই দিনই লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করেন নব দম্পতি। বিয়েতে খুব কাছের বন্ধু ও পরিবারই শুধু উপস্থিত ছিল।