'এন্ড লাইফ চেঞ্জড ওভারনাইট'। এটি অনসূয়া সেনগুপ্তের জীবনের গল্পের সঙ্গে নিখুঁতভাবে খাপ খায়। দ্য শেমলেস সিনেমায় তাঁর অভিনয়ের মর্যাদাপূর্ণ ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি। আন সার্টেন রিগার্ড বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জনকারী প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী তিনি। এটি পরিচালনা করেছেন বুলগেরিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা কনস্ট্যান্টিন বোজানভ।
জয়ের পর এইচটি সিটির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অনসূয়া সেনগুপ্ত জানান, তিনি খুবই অভিভূত। ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না, যে এটি ঘটতে চলেছে! কিন্তু আমি যখন কাঁপতে কাঁপতে মঞ্চে উঠলাম এবং আমার সহ-শিল্পীদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম, এত আপন করে ও ভালোবাসা দিয়ে স্বাগত জানাল যে, অদ্ভুতভাবে তখন সবকিছু স্বাভাবিক বলে মনে হয়েছিল। আমার কঠোর পরিশ্রম দেখার জন্য আমি জুরিদের কাছে কৃতজ্ঞ’।
আরও পড়ুন: বিয়ের পর মা-বাবার থেকে আলাদা ‘উচ্ছেবাবু’? জন্মদিনে আদৃতের বাড়িতে এলেন কারা
গোটা দেশ এই জয়ের খবর নিতে মেতে উঠেছে। রণবীর সিং, আলিয়া ভাট, অর্জুন কাপুরের মতো অভিনেতারা তাঁকে এবং ছবিটিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অনসূয়া এই প্রসঙ্গে বললেন, ‘দেশের সকলের ভালোবাসা দেখে আমি অবাক, সবাইকে গর্বিত করতে পেরে আমি গর্বিত। আমি এখন বিমানে করে বাড়ির পথে রওয়ানা হয়েছি। বাড়ির লোকের কাছে ফেরার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছি না।’
দ্য শেমলেস একজন যৌনকর্মীকে নিয়ে তৈরি, যে একজন পুলিশকে ছুরিকাঘাত করার পরে দিল্লির পতিতালয় থেকে পালিয়ে যায়। অনসূয়া তাঁর পুরস্কার উৎসর্গ করেছেন এলজিবিটি সম্প্রদায়কে।
আরও পড়ুন: ‘দোস্তানা ২’-র কাজ মাঝ পথে বন্ধ হওয়া কার দোষে? করণ-কার্তিককে নিয়ে সরব জাহ্নবী
কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন অনসূয়া। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকেযা ইংরেজি ডিগ্রি নিয়ে স্নাতক পাশ করে পা রাখেন শোবিজের দুনিয়াতে। ২০০৯ সালে অঞ্জন দত্তের বাংলা সিনেমা ম্যাডলি বাঙালি-তে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু হয় এবং ২০১৩ সালে চলে আসেন মুম্বই। এরপরে তিনি নেটফ্লিক্সের শো মাসাবা মাসাবা-তে প্রোডাকশন ডিজাইনিং টিমে কাজ করেন।
২০২০ সালে তাঁর কাছে সুযোগ আসে দ্য শেমলেস-এর। ‘আমি এটার জন্য অডিশন দিয়েছিলাম। তারপর পরিচালক কনস্ট্যানটিন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। জানায়, আমি এই সিনেমায় প্রধান চরিত্রে’, জানালেন বাঙালি কন্যে। ‘আমি এত দীর্ঘ সময় ধরে কঠোর পরিশ্রম করেছি এবং আমি বর্তমানে আরও বেশি করে এটি চালিয়ে যেতে চাই। আমি যখন পিছনে ফিরে তাকাই, তখন ওই দিনগুলোকে মূল্যবান বলে মনে হয় এবং সমস্ত টুকরো অবশেষে আমার জন্য আশ্চর্যজনকভাবে একত্রিত হচ্ছে’।