কর্মজীবন এবং ব্য়ক্তিগত জীবন নিয়ে বরাবরই খোলামেলা অভিনেতা অনিল কাপুর। কেরিয়ারে অনেক আপ-ডাউন দেখেছেন অভিনেতা। এক সময়ে বন্ধুদের মারফত অনিলের সঙ্গে আলাপ হল সুনীতার। এক দিন নিছক মজা করেই সুনীতাকে ফোন করলেন অনিল। টেলিফোনের ওপারে সুনীতার কণ্ঠস্বরেই অনিল ক্লিন বোল্ড। মুগ্ধতার রেশ ধরেই দু’জনের ঘন ঘন সাক্ষাৎ শুরু হয়। এরপরই প্রেম করে দু'জনের বিয়ে। দীর্ঘ দিনের সংসার। তিন সন্তানের বাবা-মা তাঁরা।
বড় পর্দায় তার দুর্দান্ত অভিনয়ের মাধ্যমে ছাপ রেখেন অনিল। ষাটোর্ধ্ব অভিনেতা এখনও অভিনয় কেরিয়ার ধরে রেখেছেন। আজ তাকে বলিউডের তারকা অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও একটা সময় ছিল যখন তিনি আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন অনিল। সেই সময় তাঁর পাশে ছিলেন অর্ধাঙ্গিনী সুনীতা। নেহা ধুপিয়ার দ্য লোড-এ বিশেষ সাক্ষাৎকারে, মেয়ে সোনম কাপুরের সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন অনিল।
সুনীতা-অনিলের প্রেমপর্ব
প্রতিটি শিল্পীরই সংগ্রামের গল্প থাকে। অনিল কাপুরের গল্পও একই রকম। শোয়ে এসে অভিনেতা জানান, তাঁর জীবনে সুনিতা এসেছে প্রায় ৫০ বছর আগে। সেই সময় তাঁর আর্থিক অবস্থা ততটা স্বচ্ছ্বল ছিল না। বলিউডে অনিলের স্ট্রাগলপর্বের শুরু থেকে শেষ অবধি পাশে ছিলেন সুনীতা। বেশ কিছু বছর ছবিতে ছোটখাটো ভূমিকায় অভিনয় করার পরে অবশেষে অনিলের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়। ১৯৮৩ সালে ‘ওহ সাত দিন’ ছবিতে তিনি নজর কাড়লেন দর্শকদের।
আরও পড়ুন: আকাশ আম্বানির সঙ্গে গাড়িতে কি রোহিত? ভাইরাল ভিডিয়ো ঘিরে জল্পনা
অনিলকে অর্থিক ভাবে সমর্থন সুনীতার
অনিল পরে জানিয়েছেন, তাঁদের দীর্ঘ প্রেমপর্বে সুনীতাই ছিলেন তাঁর পৃষ্ঠপোষক। শুধু ট্যাক্সিভাড়াই নয়। অনিলকে নিয়মিত দামি দামি উপহারও দিতেন সুনীতা। অভিনেতা বলেন, ‘আমি আর্থিকভাবে খুব একটা স্বচ্ছ্বল ছিলাম না। ও অনেক কিছু যত্ন নিত। এভাবেই দুজনে সব ভাগ করে নিতাম। যেখানে অর্থ উদ্বেগ ছিল, ও বোঝা নেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছিল। শুধু গৃহস্থালির কাজের ক্ষেত্রেই তেমনটা হয়নি’।
আরও পড়ুন: ‘গোপন নয়, ব্যক্তিগত ছিল..’, বিয়ে নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন তাপসী, জানালেন কেন পোস্ট করেননি ছবি
অভিনেতা আরও জানিয়েছেন, ‘এমন অনেক সময় এসেছিল, অনেক জিনিস আমার সামর্থ্যের বাইরে ছিল। কিন্তু আমার ওকে বলার প্রয়োজন হয়নি। ও নিজে থেকেই বুঝে যেত… ঘুরতে, বাইরে খেতে গেলে, কখনও আমরা একটি সাধারণ রেস্তোরাঁয় যেতাম। আবার কখনও আমরা ভালো রেস্তোরাঁয়ও যেতাম। ও নিজে থেকেই জানত, বিল দেওয়ার মতো টাকা আমার কাছে নেই। তাড়াতাড়ি নিজের ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিত। আমি জানতে পারার আগেই ও বিল পরিশোধ করে ফেলেছে’।
আরও পড়ুন: ১১ এপ্রিল জাতীয় পোষ্য দিবস, পোষা বন্ধুর যত্ন নেবেন কীভাবে, জানুন দিনটির ইতিহাস ও তাৎপর্য
সোনমের মন্তব্য
সোনম পাশ থেকে ফোড়ন কেটে বলেন, তাঁর মা নাকি এখনও বিল পরিশোধ করেন। অনিল তার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, মায়ের হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে সে। অভিনেতা জানান, পার্টনারশিপের ক্ষেত্রে একে অপরের বোঝা ভাগ করে নেওয়াটা খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
অনিল-সুনিতা প্রসঙ্গে
১১ বছরের প্রেমপর্বের পরে ১৯৮৪ সালের ১৯ মে বিয়ে করেন তাঁরা। বিয়ের পরে অনিল আরও সফল হন। কারণ নিজেকে নায়ক হিসেবে তুলে ধরতে গ্রুমিংয়ে সাহায্য করেছিলেন স্ত্রী সুনীতা। অনিল কী ভাবে সাজবেন, কী ভাবে কথা বলবেন, তাঁর আদবকায়দা কী রকম হবে, সব দিকে নজর থাকত সুনীতার। তিনি অনিলের জন্য পোশাকও ডিজাইন করতেন। অনিল চাইতেন বলে সুনীতা তাঁর সঙ্গে শ্যুটিং লোকেশনেও থাকতেন।