আরজি কর ইস্যুতে পথে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। কিন্তু এই মামলায় শুরু থেকে মুখে কুলুপ অনির্বাণ ভট্টাচার্যের। বিজেপির বিরোধিতায় সরব থেকেছেন অভিনেতা, এনআরসি ইস্যুতে গান বেঁধেছেন, কবিতা লিখেছেন। জোর গলায় বলেছেন- ‘আমি অন্য কোথাউ যাব না, এই দেশেতেই থাকব’। আরজি কর কাণ্ড নিয়ে অনির্বাণের নীরবতায় অনেকেই আশ্চর্য, এর জন্য ট্রোলিং-এর মুখোমুখিও হয়েছেন অভিনেতা। আসন্ন সিরিজ ‘তামলার রোমিও জুলিয়েট’-এর প্রচারে সংবাদ মাধ্যমের সামনে ধরা দিলেন অনির্বাণ। জানালেন তাঁর চুপ থাকার কারণ।
আরজি কর হাসপাতালে ৯ অগস্ট যে নারকীয় ঘটনা ঘটে যায় তা নাড়িয়ে দিয়েছে অনির্বাণকেও। তবে প্রতিবাদ দিয়ে সমাজ বদলানো না, বর্তমানে এই ধারণই তৈরি হয়েছে অনিবার্ণের মনে। আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয় এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘গভীরভাবে ভেবে দেখেছি বদলে যাওয়া এই নতুন সময়ে আমাকেও স্ট্র্যাটেজি নতুনভাবে ভাবতে হবে। যদি সত্যি কেউ চান অন্যায়, অপরাধ, দুর্নীতি আমাদের সমাজ থেকে নিমূল হোক তাহলে সেটা নিয়ে কাজ করতে হবে। শুধু প্রতিবাদ করে সমাজ বদলানো সম্ভব নয়’।
এ ক্ষেত্রে সরাসরি সমাজ শোধনের সঙ্গে যুক্ত কাজের কথা উল্লেখ করেন অনির্বাণ। তিনি বলেন, রাজনীতিতে শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ নেই বলেই বন্দুকটা শিল্পীদের দিকে ঘুরে গিয়েছে। তাঁদের পথে নেমে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। আর যাদের বিরুদ্ধে সেই প্রতিবাদ (শাসক দল) তাঁরা কিন্তু সারাদিন সেই কাজটাই করছেন। অর্থাৎ সমাজের কাজ করতে গেলে হোলটাইমার হতে হবে। অভিনয়ের ফাঁকে সেটা হয় না বলেই বিশ্বাস অনির্বাণের। চাঁচাছোলা ভাষায় অনির্বাণ বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় গরম-গরম বক্তৃতা দিলে মার্ক জুকারবার্গ লাভবান হবেন, গণমাধ্যম লাভবান হবে, সমাজের কিছু হবে না’।
এনআরসি ইস্যুতে অনির্বাণ ভট্টাচার্যের ‘সব মনে রাখা’ ঝড় তুলেছিল। তিনি বললেন, ধর্মীয় হিংসার বিরুদ্ধে ছিল তাঁর সেই প্রতিবাদ কিন্তু তার ফলে দেশে ধর্মীয় হিংসা মুছে যায়নি। অথচ স্ত্রী মধুরিমা গোস্বামী চুপ থাকেননি। পড়েছে কটাক্ষের মুখেও। সেই প্রসঙ্গে অনির্বাণ জানান, প্রতিবাদে অংশ নিচ্ছি না মানে, যারা প্রতিবাদ করছে, তাঁদের বিরোধিতা করছি এমনটা নয়। সকলেই নিজের মতো করে সৎ আবেগের জায়গা থেকে এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। আমার প্রচুর বন্ধু-বান্ধব, পরিচিতরা রয়েছেন। আমি তাঁদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি, তাঁরাও আমার সিদ্ধান্তকে একইভাবে সম্মান করেন'।
বক্তব্য অনির্বাণকে অনির্বাণ করেনি বিশ্বাস তাঁর। অভিনেতা হিসাবে নিজের অস্তিত্বটা নিজের কাছে অর্থপূর্ণ করে তুলতে চান অনির্বাণ।