টলিউডের বহু তারকার সঙ্গে আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক প্রযোজক রাণা সরকারে। দেব থেকে প্রসেনজিৎ, রাণার রোষ থেকে বাদ যান না কেউই। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই ‘মানবজমিন’ প্রযোজকের নিশানায় অনির্বাণ ভট্টাচার্য। এবার টলিউডের এই হার্টথ্রব নায়ককে তাঁর পুরস্কার জয় নিয়ে খোঁটা দিলেন প্রযোজক। বিতর্কিত মন্তব্য করায় রাণার জুড়ি মেলা ভার। এবার তিনি একা নন, বরং ‘বৌদি ক্যান্টিন’-এর সংলাপ রচয়িতা তথা লেখিকা সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পোস্টকে হাতিয়ার করে অনির্বাণকে আক্রণ করলেন রাণা।
শুক্রবার বসেছিল ফিল্মফেয়ার পুরস্কারের আসর। ‘বল্লভপুরের রূপকথা’ ছবির জন্য সেরা সংলাপের পুরস্কার গিয়েছে অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও প্রতীক দত্তের ঝুলিতে। অনির্বাণ-প্রতীকদের সঙ্গে এই পুরস্কারের দৌড়ে ছিলেন সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠান শেষে ফেসবুক পোস্ট সম্রাজ্ঞী লেখেন, ‘এতটুকুও দুঃখিত নই--সেরা সংলাপ রচয়িতার পুরস্কার না পেয়ে, বাদল সরকারের সঙ্গে তো আর প্রতিযোগিতা করা সম্ভবপর নয়’।
সম্রাজ্ঞীর এই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে রাণা সরকার ব্যাঙ্গ করে লেখেন, ‘বাদল সরকারের লেখা ডায়লগের জন্য ফিল্মফেয়ার পেলেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও প্রতীক দত্ত, তাদের অভিনন্দন’। এরপরেই তাঁর সংযোজন, ‘আমি এবার গীতাঞ্জলি লিখে নতুন করে বই ছাপাবো, আমাকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হোক’।
রাণার এই পোস্ট ভাইরাল হতেই অনির্বাণ ভক্তরা প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠে। একজন লেখেন- ‘নাটক আর সিনেমার চিত্রনাট্য এর মধ্যে বিস্তর তফাৎ আছে।এইটুকু জানেন না আপনি আবার প্রযোজক’। রাণার পাল্টা উত্তর, ‘আমি সত্যিই অযোগ্য’। অপর এক নেটিজেন প্রযোজককে গালমন্দ করলে তাঁর সপাট জবাব, ‘আমি অনেক (পুরস্কার) পেয়েছি ভাই , অন্যের পুরস্কার নিজের বলে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন পড়েনি’।
রাণা সরকারের এই পোস্ট ঘিরে বিতর্ক শুরু হতেই নিজের মন্তব্যের সাফাই দেন সম্রাজ্ঞী। তিনি ফেসবুকের দেওয়ালে লেখেন, পুরস্কার মঞ্চে অনির্বাণ নিজেই জানিয়েছেন এই পুরস্কার বাদল সরকারের প্রাপ্য এবং তাঁকেই উৎসর্গ করেছেন। সেই সূত্রেই তাঁর ওই বক্তব্য। অনির্বাণকে শিল্পী হিসাবে পূর্ণ সম্মান করেন তিনি এবং তাঁর পোস্টকে ঘিরে যেন অহেতুক বিতর্ক না তৈরি করা হয়।
দেখুন ঠিক কী লিখেছেন সম্রাজ্ঞী বন্দ্যোপাধ্যায়-
‘বল্লভপুর দেখে বেরিয়ে অনির্বাণের সঙ্গে যখন কথা হয়েছিল তখন প্রথম কথা যেটা বলেছিলাম যে ছবির শুরুতেই বাদল বাবুকে যেভাবে স্মরণ করা হয়েছে সেটা একজন ক্রিয়েটরের অনেস্টিকে চেনায়। কাল অনির্বাণ ও প্রতীক বল্লভপুরের জন্য শ্রেষ্ঠ সংলাপের পুরস্কার পেয়েছেন এবং অনির্বাণ নিজেও মঞ্চে বলেছেন যে এই পুরস্কারের বেশিরভাগটাই বাদলবাবুরই প্রাপ্য৷ ফলে ওঁর স্মৃতিতেই তা উৎসর্গ করা হল। সেখান থেকেই কাল মনে হয়েছিল যে আর যাই হোক বাদল সরকারের সঙ্গে তো আর প্রতিযোগিতায় নামা যায় না। নমিনেশনে আমার অনেক সিনিয়ররা ছিলেন, যেমন পদ্মনাভ দা, সৃজিত দা। আর আমার কাছে এঁদের সঙ্গে একটা ফিল্মফেয়ার নমিনেশন অনেকখানি প্রাপ্তি। শিল্পী হিসেবে অনির্বাণের প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান আছে আর তাই আমার কোনো পোস্টকে তার বিপরীত কোনো কারণে ব্যবহার না করাই ভালো।’