স্বাধীনতা বলতে মানুষ কী বোঝে? বা একজনের কাছে স্বাধীনতার অর্থ কী? এই প্রশ্নগুলোর খুব সুন্দর এবং সহজ ব্যাখ্যা দিলেন জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার তথা গায়িকা অন্তরা নন্দী। অন্তরা এবং অঙ্কিতা নন্দী, বা সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁরা নন্দী সিস্টার্স নামেই খ্যাত তাঁদেরই অন্তরা ফেসবুকে এই বিষয়ে একটি খুব সুন্দর ভিডিয়ো পোস্ট করেন।
এতদিন দর্শকরা তাঁদের গান, মিউজিক কম্পোজিশনের সাক্ষী থেকেছে। উকুলেলে বাজিয়ে তাঁরা একটার পর একটা গান গেয়ে চমকে দিয়েছেন সকলকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের বিপুল জনপ্রিয়তা। গানের পর এবার অন্তরার ভাবনায় মুগ্ধ হল নেটপাড়া।
অন্তরা সোমবার একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন ফেসবুকে। সেখানে তাঁকে স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। এই গায়িকা ভিডিয়োর শুরুতেই বলেন, 'গত কয়েকদিন ধরেই আমাকে অনেকে বলেছেন যে অন্তরা তুমি এত বড় হয়ে গেছ, তুমি এখনও বাবা মায়ের সঙ্গে থাকো? কবে স্বাধীন হবে? এই প্রশ্নগুলো আমায় ভাবালো। আমরা স্বাধীন হওয়া কাকে বলব? স্বাধীনতা কী?' এই প্রশ্ন করে তিনি নিজেই তাঁর উত্তর দেন। বলেন, 'স্বাধীনতা কি সেটাকে বলা হয় যখন আপনি আপনার বাবা মায়ের থেকে আলাদা থাকেন, নিজের আলাদা জীবন গড়ে তোলেন, নিজের খরচ বহন করেন? নাকি স্বাধীনতা সেটাকে বলা হয় যখন আপনি আপনার খরচ বহন করার সঙ্গে এটাও বোঝেন যে গত ২২-২৩ বছর আপনার বাবা মা'ই আপনার সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছেন আপনাকে বড় করে। এখন তাঁদের বয়স হচ্ছে, তাই সন্তান হিসেবে কি এটা আপনার কর্তব্য নয় যে আপনি তাঁদের চাহিদা, প্রয়োজনগুলো বুঝে তাঁদের পাশে থাকবেন?'
একই সঙ্গে তিনি এই ভিডিয়োতে স্বাধীনতার আরেক দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, 'স্বাধীনতার অর্থ কি সেটাই যখন আপনি কাউকে কিছু জানান না যে কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, কারণ স্রেফ আপনি একজন পূর্ণবয়স্ক বলে? নাকি স্বাধীনতা সেটাই যখন আপনি জানেন যে আপনার বাবা মা আপনাকে প্রশ্ন করবেন না যে আপনি কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, কিন্তু তাও আপনি তাঁদেরকে বলে যাবেন। কারণ আপনি জানেন নইলে তাঁরা চিন্তা করবেন।'
এই প্রশ্নগুলো তুলে অন্তরা শেষে বলেন, 'এই বিষয়টা ঠিক না ভুল সেটার নয়, এটা তর্ক সাপেক্ষ ব্যাপার। দুটোই হয়তো ঠিক। শুধু দুটো ভাবনা একে অন্যের থেকে আলাদা। বিদেশে ১৪-১৫ বছরের কিশোর কিশোরীরা বাবা মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যায়। নিজের মতো করে বাঁচে। কিন্তু ভারতে এটা অতটা দেখা যায় না, এটার প্রধান কারণ হয়তো আমরা একসঙ্গে থাকতে পছন্দ করি। সবাইকে নিয়ে চলতে চাই। আমরা এটা বুঝি যে এতদিন যাঁরা আমার জন্য ছিলেন, এবার আমার পালা তাঁদের জন্য থাকার।'
সত্যি তো! আমরা হয়তো এত কিছু না ভেবে দায়িত্ব হিসেবেই পালন করি। বাবা মায়ের সঙ্গে থাকি। কিন্তু তার মধ্যেও যে স্বাধীনতা আছে, স্বাধীনতার আরেকটা সংজ্ঞা এটাও সেটা কতজন বোঝে! আর সেটাই যেন অন্তরা সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন।