ইউরিনারি ব্লাডার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন অভিনেতা-পরিচালক মহেশ মঞ্জরেকর। জুলাই মাসে প্রকাশ্যে আসে এই খবর।মহেশ মঞ্জরেকরের ভাই সুদেশ মঞ্জরেকর জানিয়েছিলেন মাত্র কয়েক মাস আগেই এই মারণ ব্যাধি শরীরে থাবা বসায় তাঁর দাদার শরীরে। রোগের কথা জানতে পেরেই সময় নষ্ট না করে অস্ত্রোপচার করা হয় অভিনেতার। মুম্বইয়ের চারনি রোডে অবস্থিত এইচ এন ফাউন্ডেশন রিলায়েন্স হাসপাতালে গত অগস্টে অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর।
সম্প্রতি, এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মহেশ মঞ্জেরেকর জানিয়েছেন যে গত দেড় বছর ধরে ইউরিনারি ব্লাডারে কিছু সমস্যা হওয়াতে চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন তিনি। তবে তখনও তিনি টের পাননি তাঁর শরীরে বাসা বাঁধা ওই মারণরোগের অস্তিত্ব। তবে 'অন্তিম' ছবির শ্যুটিং চলাকালীন হঠাৎ একদিন প্রস্রাব থেকে গুরুতর রক্তক্ষরণ শুরু হয় তাঁর। পরিচালকের কথায়, 'স্বভাবতই এরপর দ্রুত চিকিৎসকের কাছে ছুটে গেছিলাম। বেশ কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা গেল শরীরে থাবা বসিয়েছে ক্যানসার'। সামান্য থিম আক্ষেপের স্বরে মহেশ বলে ওঠেন, 'আরও বছর দেড়েক আগে যদি ব্লাডার-এর চিকিৎসা করানো শুরু করতাম পরিস্থিতি এতটা বিপজনক হাত না। ব্লাডারটাকেও বাঁচাতে পারতাম। তবে আমার ক্যানসার আছে শুনেও আমি ততটা ভয় পাইনি। বরং, আমি ভাবতাম এমন অনেকে আছে যাঁরা ক্যানসারকে হারিয়ে দিয়েছে।’
'বাস্তব' এর পরিচালককে বেশ কয়েকবার কেমোথেরাপি নিতে হয়েছিল। মহেশের কথাতেই জানা গেল ক্যানসার-এর কথা জানতেই সলমন খান একাধিকবার তাঁকে অনুরোধ করেছিল সে যেন বিদেশে গিয়ে এই রজার চিকিৎসা করায়। তবে তাতে রাজি হননি মহেশ। পরিচালক বললেন, 'আমার কেন জানি বিশ্বাস ছিল এখানকার চিকিৎসকরাই ব্যাপারটা সামলে নিতে পারবেন। আর তারপর দেখলাম কয়েক দফা কেমো নেওয়ার পরেও খুব একটা দুর্বল হয়ে পড়িনি। এরপর অস্ত্রোপচার হওয়ার পর মাস তিনেক বিশ্রাম নিয়ে দ্রুত ফের একবার কাজে ফিরতে পেরেছিলাম'। যদিও ছবির শ্যুটিং চলাকালীন শ্যুটিং ইউনিটের উদ্দেশে মহেশের কড়া নির্দেশ ছিল কেউ যেন তাঁর সামনে ক্যানসার সংক্রান্ত কিংবা তাঁর শরীরসংক্রান্ত কোনও আলোচনা না করেন। 'অন্তিম' ছবির নির্দেশকের সাফ যুক্তি ছিল, 'অসংখ্য মানুষ আমারই মত ক্যানসারে আক্রান্ত হন তাই এই নিয়ে বিরাট কোনও খবর হোক তা চাইনি। আর তাছাড়া এই নিয়ে বেশি কথা বললে মনেও হতে পারত যে হয়ত সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টায় আছি'।
‘কাঁটে’, ‘দাবাং’, ‘মুসাফির’, ‘জিন্দা’, ‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’, ‘বাস্তব’-র মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন মহেশ মঞ্জরেকর। ট্রেলারে লঞ্চ অনুষ্ঠানেই নিজের ক্যানসার আক্রান্ত হওয়া নিয়ে কথা বলেন তিনি। সলমন খানকে বলতে শোনা যায়, ‘শ্যুটের সময় আমাদের কাওকে কিছু জানায়নি। কাজ শেষ হলেই নিজের অপারেশন করিয়ে নেয়।’ সলমনের সঙ্গে মহেশের হৃদ্যতা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ‘ওয়ান্টেড’, ‘দাবাং’, ‘দাবাং ৩’-তে তাঁরা একসাথে কাজ করেছেন।