অনুরাগ কাশ্যপ বরাবর অন্য ধারার ছবি তৈরি করতেই পছন্দ করেন। আর তাঁর এই অন্য ধরনের ছবিগুলোই যেন ভারতীয় ছবিকে বিশ্বের কাছে নতুন আঙ্গিকে পৌঁছে দিয়েছে। তাঁর ‘গ্যাংস অব ওয়াসিপুর’, ‘নো স্মোকিং’, ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’, ‘গুলাল’, ‘মনমর্জিয়া’, ইত্যাদি ছবি সবার নজর কেড়েছে। তবে যতই সিনে জগতে তাঁর নাম, ডাক, প্রতিপত্তি থাক ব্যক্তি জীবন কিন্তু মোটেই সুখ্কর ছিল না একটা সময়।
জীবনে অনেক চড়াই উতরাই দেখেছেন অনুরাগ। একটা সময় এমন গিয়েছে যখন তাঁর ছবিকে কেউ বিশেষ পাত্তা দিত না। সমালোচক বলুন বা দর্শক কারও থেকেই তেমন ভাবে তাঁর ছবি সমাদর পায়নি। তবে ধীরে ধীরে তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। একটার পর একটা দুর্দান্ত ছবি উপহার দিয়ে সবার নজর কেড়েছেন তিনি। এবার মুক্তি পেতে চলেছে তাঁর নতুন ছবি কেনেডি। এটা কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে। মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে সানি লিওন এবং রাহুল ভাটকে। এই ছবির গল্পে উঠে আসবে এমন এক পুলিশ অফিসারের গল্প যিনি অনিদ্রায় ভোগেন, যাঁকে সবাই মৃত মনে করেন। কিন্তু সবার অলক্ষ্যে থেকে তিনি এই দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজ, সিস্টেমের বিরুদ্ধে লড়ে চলেন।
আগামী ছবির বিষয়ে পরিচালক ফিল্ম কম্প্যানিয়নকে দেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি এই ছবির মূল পুরুষ চরিত্রটি দক্ষিণী তারকা চিয়া বিক্রমের কথা মাথায় রেখেই লিখেছিলেন। অনুরাগের কথায়, 'আমি তেমন মানুষদের নিয়েই কাজ করি যাঁরা তাঁদের পুরো সময়টা আমায় দেন, এবং এই ছবির জন্য পুরোপুরি উপলব্ধ থাকেন। আমি কেনেডি ছবিটি রাহুল ভাটের জন্য লিখিনি। আমি যখন চিত্রনাট্য লিখি আমার মাথায় চিয়া বিক্রমের কথা ছিল। আমি ওঁর সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি। তারপর আমি রাহুল ভাটকে এই চরিত্রটা অফার করি। আর উনি রাজি হন। উনি তাঁর জীবনের ৮ মাস আমায় দেন এই ছবিটি, চরিত্রটির জন্য। ওঁর কাজের প্রতি নিষ্ঠা, উৎসাহ সত্যি আমায় মুগ্ধ করেছে।'
এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পরিচালক তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, সম্পর্কের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, 'আমি একটা খুব জটিল সম্পর্কে ছিলাম। এত ভায়োলেন্স দেখেছি যে এখন কোনও রকম হিংসার ঘটনা দেখলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। বাস্তবে আমি রক্ত দেখলেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। কোনও দুর্ঘটনা দেখলেও একই অবস্থা হয়। আমার সঙ্গে বাস্তবে যা ঘটেছিল সেটাই পর্দায় তুলে আনি। কিন্তু অফ স্ক্রিন হিংসা, রক্ত দেখত পারি না।'
এই প্রসঙ্গে টেনেই তিনি কেনেডি নিয়ে বলেন, ‘এই ছবিতে এমন এক মানুষের কথা দেখানো হবে যে জীবনে বহু হিংসার ঘটনা দেখেছে আর তাতে সে অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছে। এখন হিংসা দেখলে সে স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিক্রিয়া জানায়। সে এমনই হয়ে গিয়েছে। আসলে সমাজটাই এমন হয়ে গিয়েছে। এই ছবির তাঁর চরিত্রটা এমনই যে তাঁর প্রতি আপনার কোনও সহানুভূতি আসার কথা নয়, তবুও আসবে। কেন আসবে আপনি নিজেও বুঝবেন না।’