কয়েকদিন আগেই হাজার পর্ব ছুঁয়েছে জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়াল 'অনুরাগের ছোঁয়া'। এদিকে এরই মাঝে শোনা যাচ্ছে অসুস্থ 'অনুরাগের ছোঁয়া'র দীপা অর্থাৎ অভিনেত্রী স্বস্তিকা ঘোষ। ডায়ালগ বলতে গিয়ে কথা জড়িয়ে যাচ্ছে তাঁর। ঠিক কী হয়েছে স্বস্তিকার?
এবিষয়ে আনন্দবাজারকে স্বস্তিকা ঘোষ জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরে শো করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই মঞ্চে ওঠার সময় মাথায় গুরুতর চোট পান। তখন সেভাবে কিছুই বুঝতে পারেননি। এরপর শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরে অস্বস্তি বোধ করেন অভিনেত্রী।
তাঁর কথায়, মঞ্চে যখন উঠছিলেন, তখন তাঁর সামনে একপ্রকার জনস্রোত। যা দেখে যেকোনও অভিনেতাই হয় আনন্দে সব ভুলে যাবেন। আর স্বস্তিকার ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল। চোটের কথা তাঁর খেয়াল ছিল না। শুধুই খুব ভাল পারর্ফম করার কথা ভাবছিলেন। এরপর অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়েও পড়েন।
শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অভিনেত্রী অনুভব করেন, মাথায় বেশ ব্যথা। তাই নিয়েই সিরিয়ালের শুটিংয়ের জন্য তৈরি হয়ে সেটে পৌঁছেও যান। কারণ, স্বস্তিকা বেশ ভালোই জানেন, সিরিয়ালের ক্ষেত্রে এপিসোডের চাপ থাকে, তাই শ্যুটিং বন্ধ করা চাপ। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে তাঁর মাথার ব্যথা কাঁধেও ছড়িয়ে পড়ে। লম্বা সংলাপ বলতে গিয়ে কথাও জড়িয়ে যেতে থাকে তাঁর।
আর এরপরই দেরি না করে স্বস্তিকা পরিচালকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে পৌঁছে যান স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে। তবে এরপর চিকিৎসক তাঁকে ঠিক কী পরামর্শ দিয়েছেন সেকথা এখনও জানা যায় নি।
প্রসঙ্গত, ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে কলকাতার নয়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার রায়দিঘির মেয়ে স্বস্তিকা ঘোষ। ২০২০-তে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে বছর চারেক হল অভিনয় জগতে এসেছেন। এর মধ্যেই ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে জনপ্রিয়তার শিখরও ছুঁয়েছেন স্বস্তিকা। ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর। ‘সরস্বতীর প্রেম’ ধারাবাহিক দিয়ে তাঁর অভিনয় জীবনে পথচলা শুরু।
স্বস্তিকার বাবা-মা দু’জনেই গানের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর মা নিয়মিত রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়ে চর্চা করেন। অভিনেত্রীও ভরতনাট্যম শিখেছেন। ফলে গোড়া থেকেই নাচ-গান, অভিনয়জগতের প্রতি আকর্ষণ ছিল তাঁর। উচ্চমাধ্যমিকের আগে থেকেই অভিনয়ের জন্য অডিশন দিতে শুরু করেন। ট্রেনে করে আসতে যেতেই ৩+৩=৬ ঘণ্টা সময় লেগে যেত। এমনও দিন গেছে বাড়ি না ফিরতে পেরে স্টেশনেই রাত কাটিয়েছেন।তবে একদিন সুযোগটা এসে যায়। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রাঘদিঘি সেই মেয়েকে। আজ তিনি টেলিভিশনের হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত, জনপ্রিয় অভিনেত্রী।