শোকে পাথর তিলোত্তমা। মুখ্যমন্ত্রীর নিদান ‘উৎসবে ফিরুন’ যে সাধারণ মানুষ মানতে রাজি নয়, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যেদিকে চোখ পড়ছে সেখানেই। নতুন জামা কেনার ভিড় নেই দোকানগুলোতে। একাধিক জায়গায় পুজোর প্যান্ডেল বাঁধার কাজও শুরু হয়নি। সব রং ফিকে হয়ে গিয়েছে আরজি করের ৩১ বছরের তরুণীর ভয়ঙ্কর মৃত্যুতে। তাই তো সকালে উঠেই, সোশ্যাল মিডিয়াতে লোক প্রশ্ন ছুঁড়ছে, আজ কোথায় মিছিল ব জমায়েত? রাত দখলের পরিকল্পনা কি আছে কোথাও? সকলেই সামিল প্রতিবাদের উৎসবে।
পুজোতে ‘না’ নেই অপরাজিতা আঢ্যর। তাঁর ইশ্বরভক্তি নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই। তবে অভিনেত্রী মুখ ফিরিয়েছেন উৎসব থেকে। শুধু যে নিজের জন্য কিছু কেনেননি এমন নয়, দেননি কাওকে উপহার। বাড়ির বাচ্চাদেরও নয়। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে একাধিকবার পথে নেমেছেন তিনি। প্রতিবাদে গলা তুলেছেন। বাড়িতে মাতৃ আরাধনা করলেও, কোনো আনন্দ উৎসব থাকছে না এবার অভিনেত্রীর বাড়িতে।
পুজোতে কলকাতায় থাকবেন বলেই তিনি জানিয়েছেন টিভি নাইন বাংলাকে। জানিয়েছেন, প্রতি বছর নিজের হাতে সন্ধিপুজো করেন। হোম করেন। সেগুলো সবই করবেন। কারণ মায়ের পুজো কোনো উৎসব নয়। সেটা নিজের মতো করেই করবেন, যেমন প্রতি বছর করে এসেছেন।
পুজোর আগে কলকাতাতেও থাকছেন না অপরাজিতা। তীর্থে যাচ্ছেন চলতি সপ্তাহেই। কাজ থেকে বিরতি নিয়ে যাবেন ঠাকুর দর্শনে। ‘শিরডি যাব, সেখান থেকে শনি সিগনাপুর যাব, সেখান থেকে যাব ত্রম্বকেশ্বর।’ এই তিন জায়গায় দর্শন সেরে কলকাতায় ফিরবেন। কবে ফিরবেন তা ঠিক করেননি। হাতে সময় থাকায়, অন্য কোথাও চলে যেতে পারেন।
প্রসঙ্গত, ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে ডিউটিরত এক হিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। ইতিমধ্যেই সেই ঘটনায় হাসপাতালের মধ্যে চলা একাধিক দুর্নিতীর খবর মিলেছে। শুধু তাই নয়, আশঙ্কা হয়তো কিছু জেনে ফেলেছিল মেয়েটি, অথবা ফাঁস করার ভয় দেখিয়েছিল। তাই এরকম নির্মম পরিণতি। প্রমাণ নয়ছয়ের জন্য ইতিমধ্যেই গ্রেফতর টালা থানার পুুলিশ। খুন ও ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষও। বাংলার মেডিকেল কলেজগুলিতে চলতে থাকা থ্রেট কালচার নিয়ে এরপর গলা চড়ান সিনিয়র ও জুনিয়র ডাক্তাররা। সামনে এসেছে কিছু মানুষ, কীভাবে টাকা চাইত নম্বর পাইয়ে দিতে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই মিলত হুমকি। আর এই দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসেরও।