আর জি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যা কাণ্ডকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ বলে জনরোষের মুখে পড়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই আঁচ কিছুটা থিতু হতেই বিস্ফোরণ ঘটালেন ডোনা। সোমবার বর্ধমানে এক নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সৌরভ ঘরণী বলে বসেন, ‘রেপ-টেপ সব জায়গাতেই হয় কিন্তু বাংলার মতো এত প্রতিবাদ কোথায় হচ্ছে?’
ডোনার ‘রেপ-টেপ’ মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড়। এবার নাম না করেই ডোনাকে খোঁচা দিলেন অপরাজিতা আঢ্য। একইসঙ্গে তিনি জানালেন হাওড়ার তারাসুন্দরী স্কুলের প্রাক্তনী হিসাবে কতটা গর্বিত তিনি। তারাসুন্দরী স্কুলের ‘বড় দিদিমণি’র ভূয়সী প্রশংসা শোনা গেল তাঁর মুখে। এদিন ফেসবুক পোস্টে অপরাজিতা লেখেন, ‘হাওড়া থেকে যখন কলকাতায় কাজ করতে এসেছি তখন অনেকে মুখ বেঁকিয়েছে খুব সাধারণ স্কুলে পড়েছি বাংলা মিডিয়াম অনেক রকম অবস্থার স্বীকার হয়েছি। হাসাহাসির পাত্র হয়েছি। ভালো ইংরেজি বলতে পারি না ঐরকম হাওড়ার একটি স্কুলে পড়া মেয়ে মধ্যবিত্ত সেই সময়। খালি খারাপ লেগেছে বাবা-মায়ের উপর রাগও হয়েছে, যে আমাকে তো কোন বড় স্কুলে পড়াতে পারতে।’
কেরিয়ারের গোড়ায় বাংলা মিডিয়ামে পড়াশোনার জন্য আফসোস থাকলেও আজ গর্বিত অভিনেত্রী। ছোটপর্দার লক্ষ্মী কাকিমা লেখেন, ‘ভাগ্যিস ভাগ্যিস বাবা-মা পড়াতে পারেননি বড় স্কুলে তাহলে হয়তো আজকে বড় বড় স্কুলে পড়া বড় বড় ব্যক্তিত্ব নাগরিকরা যে ধরনের রেপ টেপ বলে কথা বলছেন এটা একটা সাধারন ঘটনা আমিও তাই বলতাম। আমার শিরদাঁড়া সোজা থাকত না। ভাগ্যিস আমি তারা সুন্দরী স্কুলে পড়েছিলাম সেই জন্যই তো আজকে আমাদের স্কুলের বড় দিদিমণি আমাদের প্রত্যেকের হয়ে মেরুদন্ডের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আমি অত্যন্ত গর্বিত বাঙালি। যে আমি তারা সুন্দরী স্কুলের ছাত্রী এবং আমার মা ওই স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন আমার দিদিমাও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। আজকে এই দিদিমনির জন্য তাদের আত্মা কিন্তু শান্তি পাচ্ছে।’
আরজি কর কাণ্ড নিয়ে স্কুলের ছাত্রীদের যে মানবতার পাঠ দিয়েছিলেন তারা সুন্দরীর প্রধানা শিক্ষিকা মোনালিসা মাইতি তা ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘যদি রাষ্ট্র ভেঙে পড়ে তাহলে ১৮ বছরের নিচের মানুষদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যদি একটা ১২ বছরের মেয়ের ধর্ষণ আটকাতে না পারি তাহলে একটা ১২ বছরের মেয়ের সিদ্ধান্তকে আমাদের মর্যাদা দিতে হবে।’
সোমবার সংবাদ চ্যানেলে আর জি কর ইস্যু নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন মোনালিসা মাইতি। এপিবি আনন্দের মঞ্চে তিনি বলেন, ‘এই যো উৎসবের প্রসঙ্গ উঠছে, আমি মনে করি আমরা উৎসবের মধ্যেই রয়েছি। আজ সমাজ শোধনের উৎসব চলছে। একজন দিদিমণি হিসাবে, একজন মা হিসাবে মনে করি আমাদের রোজই এই উৎসবে মেতে উঠা উচিত।’