অপর্ণা সেন, টলিউডের প্রিয় রিনাদি। একদিকে তিনি অভিনেত্রী, অন্য়দিকে পরিচালক। ছক ভাঙতে ভালোবাসেন অপর্ণা। সময়ের চেয়ে বরাবরই এগিয়ে রয়েছে তাঁর চিন্তাভাবনা। দেশের রাজনীতি, সমাজনীতি নিয়ে কথা বলতে পিছপা হন না। ৭৫-এর গণ্ডি পার করেও তিনি চিরযৌবনা। খুব শীঘ্রই পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত ‘এই রাত তোমার আমার’-এ দেখা যাবে অপর্ণা সেনকে। সেই ছবিতে অ়ঞ্জন রায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন তিনি। আরও পড়ুন- কঙ্কণা ছোট, অপর্ণা সেনের বড় মেয়ে কমলিনীকে চেনেন?
‘জয়িতা’ এবং ‘অমর’-এর পঞ্চাশতম বিবাহবার্ষিকীর রাতের কথোপকথন ধরেই এগোয় এই ছবি। একটা রাতের গল্প ‘এই রাত তোমার আমার’। বয়স্ক দম্পতির এই গল্প, সেই ছবি নিয়ে আড্ডার ফাঁকে নিজের দাম্পত্য জীবনের খুঁটিনাটি ফাঁস করেছেন অপর্ণা সেন। অপর্ণার জীবনে প্রেম এসেছে বারবার। সত্তরের দশকের গোড়ায় সঞ্জয় সেনকে বিয়ে করেছিলেন তিনি, কন্যা সন্তানের (কমলিনী) মা-ও হন। তবে টেকেনি বিয়ে।
পরে মুকুল শর্মার সঙ্গে সংসার পাতেন। সেখানেও কোলে সন্তান আসার পর বিচ্ছেদ। এরপ নব্বইয়ের দশকের গোড়ায়, ১৯৯৩ সালের ২৯শে জুলাই কল্যাণ রায়কে বিয়ে করেন অপর্ণা। এরপর কেটেছে ৩২ বছর। পরস্পরের সঙ্গে আজও জুড়ে রয়েছেন তাঁরা। অপর্ণা সেন সংবাদ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান তাঁর বৈবাহিক জীবনে বন্ধুত্ব আছে বলেই সম্পর্কের বন্ধন মজুবত। তাঁর কথায়, ‘আমাদের মানসিকতা, আইডিওলজি বা মূল্যবোধ একরকমের। তাছাড়াও আমাদের রুচির মিল আছে। আমি জানি, পছন্দ করে কিছু কিনলে কল্যাণের সেটা পছন্দ হবে। ধরো একটা দামি পেন্টিং কিনতে চাই, দুজনের মতে মিল না হলে তো কিনতে পারব না। কল্যাণ একবার আমাকে বলেছিল, ‘থ্যাংক গড আমাদের পছন্দটা একরকমের। বড়বড় গোলাপফুল দেওয়া পর্দা, চাদর পাতলে, আমি তোমার সঙ্গে থাকতাম না।’ ম্যারেজ ইজ দ্য মোস্ট কমপ্লেক্স অ্যান্ড ডিফিকাল্ট থিং ফর পিপল টু মেক ইট ওয়র্ক’।
অপর্ণা সেন বিশ্বাস করেন দুটো মানুষের ব্যাকগ্রাউন্ড যদি এক হয় তাহলে সেই সম্পর্ক টেকে। তবে সেটি অর্থনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নয়, বরং রুচি বা মূল্যবোধের মিল। অভিনেত্রীর কথায়, ‘ধর আমি কাউকে খুব ভালোবাসি, বিয়ে করে দেখলাম সেই বাড়িতে পুজোআচ্চার চল, ছোঁয়াছুঁয়ির ব্যাপার আছে, আমাকেও পুজো করতে হচ্ছে– আমি তো মানিয়ে নিতে পারব না।’
দীর্ঘ সম্পর্কে অনেক সময় মানুষ নন-জাজমেন্টাল হয়ে পড়ে ঠিকই, থাকে কম্প্রোমাইজ করার তাগিদও। তবে মানুষটি চোখের সামনে আমূল পালটে গেলে জাজমেন্টাল হতেই হবে। অপর্ণা সেন জানান, ‘এখন আমি যদি দেখি কল্যাণ হঠাৎ করে ‘রাইটিস্ট’ হয়ে গেল, ‘ভক্ত’ হয়ে গেল- তখন তো আমি জাজমেন্টাল হব, তাই না?’