প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করতে কোনওদিন পিছপা হননি অভিনেত্রী তথা সমাজকর্মী অপর্ণা সেন। দুদিন আগেই লকডাউনের সময় দেশবাসীর মনোবল বৃদ্ধি করতে রবিবার, রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য বাড়ির আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানোর আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।দুর্দিনে ঐক্যবদ্ধ হতেই এই দাওয়াই হাজির করেছেন মোদী। যদিও নমোর এই আবেদনকে প্রকাশ্যে বয়কটের ডাক দিয়েছেন অপর্ণা সেন। ফেসবুকের দেওয়ালে অভিনেত্রী দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায়ি করে লেখেন- ‘আমার বাড়িতে ৫ তারিখ লাইট বন্ধ থাকবে না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি যা চলছে তাতে দেশের সরকার পুরোপুরি দায়ী। ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষকে একটা ধোঁয়াশার মধ্যে রাখা হয়েছে। এবং এটা একটা মস্ত বড় প্রহসন। দেশের বেশিরভাগ মানুষ জানেনই না, দেশের এহেন দুরাবস্থায় সরকার সার্বিয়াতে ৯০ টন করোনা টেস্টিং কিট সাপ্লাই করেছে। অথচ দেশের জনগণের গণ-টেস্টিং, যা ইতিমধ্যেই অন্যান্য করোনা আক্রান্ত দেশগুলিতে করানো হয়েছে, তা ভারতে করা হচ্ছে না শুধুমাত্র পর্যাপ্ত টেস্টিং কিটের অভাবে। বিভিন্ন রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে, তাদের কাছে পর্যাপ্ত কিট নেই'।
যদিও এই পোস্টের জেরে মোদী ভক্তদের রোষের মুখে পড়তে হয় অপর্ণা সেনকে। এমন কঠিন সময়ে প্রকাশ্যে সরকারের সমালোচনা করায় অনেকেই অপর্ণা সেনের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এরপর আচমকাই অভিনেত্রী ফেসবুক প্রোফাইল থেকে গায়েব সেই পোস্ট। অপর্ণা নিজেই সেই পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছেন নাকি পোস্টটির বিরুদ্ধে ফেসবুকে একাধিক রিপোর্ট জমা পড়ায় সেটি বাতিল হয়েছে তা পরিষ্কার নয়।

যদিও এই প্রথম নয় এর আগে ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডাকে জরুরি পরিষেবায় নিযুক্তদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতেও মোদীকে পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করে একটি টুইট করেছিলেন অপর্ণা সেন। জাতীয় পুরস্কায় জয়ী অভিনেত্রী টুইটারে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ' একটা বক্তব্য যদি দশ হাজার করতালিতে দেশকে মুখরিত করতে পারে, তাহলে সেই কন্ঠস্বর কেন নীরব ছিল যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লি হিংসার আগুনে পুড়ছিল?' নাম না করলেও অর্পণার ইশার যে মোদীকে ঘিরেই ছিল তা বেশ স্পষ্ট।
এর আগে শনিবার দিল্লির নিজামুদ্দিনের জমায়েতের ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন অপর্ণা সেন। গোটা ঘটনায় একদিকে বিস্মৃত অন্যদিকে ক্ষুদ্ধ অভিনেত্রী। এই জমায়েতকে ক্রিমিন্যাল অ্যাক্ট বলে উল্লেখ করেন, অপর্ণা লেখেন-' জামাতের জমায়েত ভীষণরকমভাবে ভয়ঙ্কর এবং অপরাধমূলক কাজ এবং যাঁরা এর জন্য দায়ী তাঁরা যেন শাস্তি থেকে বঞ্চিত না থাকে! হ্যাঁ আমি ধর্মনিরক্ষেপ এবং স্বাধীনচেতা, কিন্তু আমি এমন কোনও কাজ সমর্থন করতে পারি না যা আমার দেশের আইনের বিরুদ্ধে। সেটা যে কেউ করুক না কেন- সে হিন্দু, মুসলমান, খ্রীস্টান, জিউ, শিখ, নাস্তিক বা জ্ঞানবাদী যে হোন না কেন!'