সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু এবং ডিপ্রেশন নিয়ে টুইটারের তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন মহেশ ভাট পত্নী তথা আলিয়া ভাটের মা,অভিনেত্রী সোনি রাজদান এবং লেখক অপূর্ব আসরানি। টুইটারে সোনি রাজদান বেশ কয়েকটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে নেটদুনিয়ায়। সোনির মানসিকতাকে ধিক্কার জানাচ্ছেন টুইটারের বাসিন্দারা। সোনি টুইটারে বলেন, ‘ডিপ্রেশন জন্মগত রোগ’, ‘মানসিক অসুস্থতা পরিবারিক’।
ঘটনার সূত্রপাত অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ীর একটি টুইট ঘিরে। যেখানে সুশান্তের কেদারনাথ ছবিটি নিয়ে কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন স্বঘোষিত ফিল্ম সমালোচক কেআরকে। তার বিরোধীতাকে করে কেআরকেকে বয়কট করবার ডাক দেন মনোজ। জবাবে আলিগড়,সিমরণের মতো ছবির কাহিনিকার অপূর্ব আসরানি বলেন, এক্ষেত্রে কেআরকে আদতে 'সফট টার্গেট'। তিনি যোগ করেন, ‘লোকটি বিষাক্ত কিন্তু রাজীবের (মসান্দ) মতো প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকের সুশান্তকে নিয়ে লেখা ব্লাইন্ড আইটেম আরও বেশি ক্ষতিকারক ও কাপুরুষতার পরিচয়। তাই সিলেক্টিভ হওয়া উচিত নয়’।
এই কথোপকথনের মাঝেই নিজের মত জাহির করে বসেন সোনি রাজদান। তিনি বলেন, আসল বিষয়-ডিপ্রেশন এবং মানসিক স্বাস্থ্য।…. এবং ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার জন্য কোনও কারণের দরকার হয় না। এটা যে কোন মানুষের হয়, সফল ও ধনী মানুষকেও ঘিরে ধরে.. আসলে এই সব শুনে অনেকই ভাববে বিষয়টা বাহ্যিক পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল কিন্তু সত্যিটা হল এটা মানুষটার ভিতরে রয়েছে, যেটা সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।'
যদি মহেশ ভাট পত্নীর এই তত্ত্ব মেনে নিতে পারেননি অপূর্ব আসরানি। তিনি লেখেন,'এটা মিথ্যা। কখনই মানুষ জন্মায় না মানসিক সমস্যা নিয়ে। বাইরের অনেক জিনিসই সেই মানুষটাকে প্রভাবিত করে। অনেক কিছু…টুইটার তো অবশ্যই আনফেয়ার, আরও বেশি খারাপ হল ক্যাম্প এবং বুলিং। দুর্ভাগ্যবশত কেউ সেটা নিয়ে কথা বলতে চায় না'।
যদিও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি সোনি রাজদান। তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ মানুষই মানসিক রোগ জন্মসূত্রে পায়, আমি শুধু এতটুকুই বলতে চাইছি’। এখানেই থেমে থাকেননি সোনি, অপর একটি টুইটে তিনি বলেন, ‘ইট রানস ইন দ্য ফ্যামিলিজ’ (মানসিক অসুস্থতা পারিবারিক)।
সুশান্তের পরিবারকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন নেটিজেনরা। সোনির এই মন্তব্য অত্যন্ত অসংবেদনশীল এবং নক্কারজনক বলে দাবি তাঁদের।
উল্লেখ্য গত ১৪ই জুন বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় সুশান্ত সিং রাজপুতের দেহ।ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট বলছে আত্মহত্যা করেছেন অভিনেতা। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছেন গত ছয় মাস ধরে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন সুশান্ত। তাঁর আত্মহত্যার কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই বলিউডের একটা বড় অংশকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে নেটিজেনরা। নেপোটিজম,ফেবারিটিজমের মতো শব্দগুলো বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে।আর এই বিতর্কে নাম জড়িয়ে পরিচালক মহেশ ভাটেরও। পাশাপাশি সুশান্তের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে মহেশ ভাটের ঘনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সুশান্ত অনুরাগীরা। এর মাঝে সোনি রাজদানের এই মন্তব্য বিতর্কের আগুনে আরও খানিকটা ঘি ঢালল।