শুরুর দিন থেকেই সারাগামাপা-র মঞ্চে সাড়া ফেলেছে বাঁকুড়ার ভাদুলের মেয়ে আরাত্রিকা মাইতি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘খুদে কমরেড’ নামেও পরিচিত এই স্কুল ছাত্রী। তাঁর গণসঙ্গীতে মুগ্ধ সকলে। কিন্তু আরাত্রিকা মানে শুধু গণসঙ্গীত নয়, বরং সব জঁর গানেই নিজের সেরাটা দিতে জানে সে। শনিবার রাতে সে কথাই প্রমাণ করে দিল আরাত্রিকা।
কিশোর কুমারের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সঙ্গীতের সেরা মঞ্চে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হচ্ছে বাঙালির প্রিয় আইকন কিশোর কুমারকে। কিশোরদা-কে শ্রদ্ধা জানাতে আরাত্রিকা বেছে নিয়েছিল রবি ঠাকুরের গান। ‘একটুকু ছোঁয়া লাগে…’ গেয়ে এদিন সবার মন জয় করে নিল প্রতিযোগি। তবে আরাত্রিকার পাশাপাশি তাঁর পারফরম্যান্সের জন্য ততটাই প্রশংসা কুড়োলেন সারেগামাপার রথীজিৎ স্যার। যিনি এই অনুষ্ঠানের হেড গ্রুমার তথা মিউজিক অ্যারেঞ্জার।
আরাত্রিকার পারফরম্যান্স শেষে চোখে জল রথীজিৎ-এর। মাইক হাতে কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে এর তাঁর। বললেন, ‘গত ১২ বছরে এই মঞ্চে গানবাজনা নিয়ে যা বেঁচেছি, জীবনে আমার সব পাওয়া হয়ে গেছে।’ রথীজিৎ-এর প্রশংসায় পঞ্চমুখ কৌশিকি-শান্তনু মৈত্ররা। কৌশিকি বললেন, ‘আমরা অনেকেই মনে করি যে ওখানে বসে গায় বা বাজায়, ছবিটা ওখানেই শেষ হয়ে যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে মানুষটা পারফরম্যান্স করেন না কিন্তু পারফরম্যান্সের আগে সেটা শুনতে পান সেই মানুষটার চিন্তাটা যেহেতু শুনতে পাই না। আওয়াজটা শুনতে পাই, মনে হয় ওই মানুষটাকে বোধহয় ওতোটাও দরকার নেই। আজকের এই পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে কিন্তু রথীজিৎ কথা বলল’।
রথীজিৎ-এর চোখের জল দেখে কৌশিকি বললেন, ‘খুব কম মানুষের মধ্যে মানুষটা জাগ্রত থাকে। তোমার চোখের জলটা ওই মানুষটাকেও বড্ড সুন্দর করে আমাদের কাছে দেখিয়ে দিয়ে গেল। আমি এর জন্য জি বাংলার কাছে কৃতজ্ঞ।’
আরাত্রিকার জন্যও প্রশংসার বন্যা বিচারকদের তরফে। কৌশিকি বলেন, ‘তোমার প্রতিবাদ শুধু গণসঙ্গীতে তা নয়…. তোমার প্রতিবাদ এটাও যে একটা মেয়ে গণসঙ্গীত গায়, এটা তার লেবেল নয়। মেয়েটা শুধু গণসঙ্গীত গাইবে, যখন আসবে তখনই গণসঙ্গীত গাইবে! কেন? কারণ ওটা ও ভালো গায়। নিশ্চয় ভালো গায়, তবে ওটাই একমাত্র ও খুব ভালো গায় সে নয়। সব প্রতিবাদ জোরে জোরে হয় না…খুব সুন্দর একটা প্রতিবাদ’।
সারেগামাপা-র মূল পর্ব ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতি সপ্তাহ শেষে সবচেয়ে কম নম্বর পাওয়া প্রতিযোগী ছিটকে যাবে শো থেকে। এলিমিনেশনের খাঁড়া ঝোলা শুরু, এই সপ্তাহে কে বাদ পড়বেন? সেটাই এখন দেখবার।