পাপারাজ্জি এবং সেলিব্রিটিদের মধ্যে সম্পর্ক আসলে কেমন এই নিয়ে প্রশ্ন অনেকেরই। আপাতদৃষ্টিতে সেলেবদের ব্যবহার সুন্দর থাকলেও কিছু ঘটনা যেন অন্য ছবি তুলে ধরে।
রণবীর কাপুরের একটি ভিডিয়োতে দেখা যায় পাপারাৎজিদের তিরস্কার করছেন তিনি। রাগের সঙ্গে বলেন 'ইয়ে কেয়া কর রহে হো? সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে 'হাটো ইয়াহাঁ সে'। (কী করছেন আপনারা? সরে যান এখান থেকে)। তিনি স্ত্রী অভিনেতা আলিয়া ভাটকে নিয়ে গাড়ি থেকে বের হচ্ছিলেন এবং হাঁটছিলেন, আর তখনই মেজাজ হারান তিনি। একইভাবে দুর্গাপুজোর মণ্ডপে জুতো, চটি পরে পাপারাৎজিদের ঢোকার ঘটনায় কাজলের বিরক্ত হওয়ার ভিডিয়োও ভাইরাল হয়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা এই ক্ষেত্রে যদিও তাঁকে সমর্থন করেছেন।
হলিউডেও অভিনেতা টম হল্যান্ডকে এক ঝাঁক পাপারাৎজির হাত থেকে বান্ধবী অভিনেতা জেন্ডায়াকে উদ্ধার করতে দেখা গিয়েছে। এইসব ঘটনা থেকে প্রশ্ন উঠছে, তবে ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে সীমা অতিক্রম করছেন পাপারাৎজিরা? এই নিয়ে কিছু বিশিষ্ট চিত্রগ্রাহকের কথা বলে হিন্দুস্তান টাইমস।
নতুন মুখ
কয়েক দশক ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত সেলিব্রিটি ফটোগ্রাফার ভাইরাল ভায়ানির মতে, ‘এটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। এই সমস্ত জিনিস অবশেষে সমাধান হয়ে যায়। যা হয়েছে, ঘটনাস্থলে পাপের সংখ্যা বেড়েছে, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাদের সাফল্য দেখে অনেকেই হাততালি দিতে শুরু করেছেন। সবাই মনে করে এরকম করা উচিত। এখন বলিউডে ভিন্ন ভিন্ন মুখ। যেমন মুম্বইয়ের বান্দ্রায় এত মানুষকে দেখে আমি চমকে উঠি। তাঁরা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ক্ষেত্রেও আমরা গাইডলাইন মেনে চলি, না হলে পুলিশি তদন্ত হবে। নতুন নতুন মানুষের কারণে আমাদের ভাবমূর্তি দিন দিন নষ্ট হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: (কোনও আড়ম্বর নয়, আপনজনদের নিয়েই স্বামী আয়ুষের জন্মদিন উদযাপন করলেন অর্পিতা)
আরও পড়ুন: (বাবা হওয়ার পর প্রথমবার বিদেশ সফরে রণবীর, আদিত্য-বরুণের সঙ্গে কোথায় গেলেন?)
কাটথ্রোট প্রতিযোগিতা
সেলিব্রিটি ফটোগ্রাফার পল্লব পালিওয়াল বলেছেন যে 'রণবীর এবং আলিয়াকে একসাথে দেখা যাওয়া একটি বড় বিষয়, প্রত্যেকের পক্ষেই নিজেদের ক্যামেরাবন্দি করার জন্য যথেষ্ট। আসলে ‘এটি পাপারাৎজি এবং সেলিব্রিটিদের মধ্যে একটি প্রেম-ঘৃণার সম্পর্ক। আমাদের মধ্যে চলছে মারাত্মক প্রতিযোগিতা। বর্তমান পাপারাৎজিদের উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই রণবীর এবং আলিয়ার ক্ষতি করা ছিল না। তারা নিশ্চয়ই চেয়েছিল তাদের বসের জন্য সেরা ছবিটা তুলে আনতে। কাজলের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে, কখনও কখনও সেলিব্রিটিরাও চপ্পল এবং জুতো খুলতে ভুলে যান। রণবীর একবার আলিয়ার চটি তুলে নিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন এবং একবার আলিয়াও একই রেস্তোরাঁর বাইরে একটি প্যাপের চটি তুলে নিয়েছিলেন।’
এত কিছু ঘটায় আতঙ্কিত সেলিব্রিটিরা
যোগেন শাহ নামক এক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্যাপও মনে করেন এমনটাই। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সেলেবদের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। তবে এমন কিছু উদাহরণ রয়েছে যখন আমরা তাদের ক্যামেরাবন্দী করার জন্য আশেপাশের ভিড় দেখে ভয় পাই, যেমন কিছুদিন আগে দীপিকা (পাড়ুকোন) জি, যিনি তখন গর্ভবতী ছিলেন। সবচেয়ে ভালো দিক হলো, তার দেহরক্ষী বিষয়টি ভালোভাবে সামলেছেন। কোথা থেকে লোকজন চলে আসছিল। কিছু জিনিস আছে যা দূর থেকে ফটোগ্রাফ করা উচিত। আমি, ভাইরাল আর মানবের মধ্যে প্রায় ৪০ জন ফটোগ্রাফার আছে। বাকিদের যোগ করলে সংখ্যাটা ৫০। নানা ঘটনা ঘটতে থাকায় তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। সুতরাং প্রতিটি ছবির তোলার জন্য প্রায় ৫-১০ টি পাপ রয়েছে। তারপর নতুনরা আসে।’
এর জেরেই আসলে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি এমন তিনটি ঘটনার কথা জানি যেখানে পাপারাৎজিদের মোবাইল চুরি করা হয়েছিল, যারা একজন সেলিব্রিটির চারপাশে ভিড়ের অংশে মিলিয়ে যায়। আমি এটাও বুঝতে পারি যে সেলিব্রিটিদের জন্য এটি অবশ্যই আতঙ্কিত হওয়ার বিষয়, যখন তারা রণবীর-আলিয়ার মতো রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে আসছেন, আর হঠাত্ তাঁদের চারপাশে একদল লোক তাঁদের দেখার জন্য ভিড় করছেন।’