বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > Arijit Singh-Srijato: ‘গাইতে গাইতে খালি মনে হচ্ছিল নিজেকে গালি দিচ্ছি…', কেন একথা বললেন অরিজিৎ?

Arijit Singh-Srijato: ‘গাইতে গাইতে খালি মনে হচ্ছিল নিজেকে গালি দিচ্ছি…', কেন একথা বললেন অরিজিৎ?

অরিজিৎ সিং (ছবি-ফেসবুক)

Arijit Singh-Srijato: শনিবারের কনসার্ট শেষে শ্রীজাতর ফোনে মেসেজ অরিজিতের। লিখলেন, ‘শ্রীজাতদা, আজ শ্যামাসঙ্গীতটা গেয়েছি স্টেজে’।

জীবনে প্রথমবার ‘রামপ্রসাদী’ গান গেয়েছেন অরিজিৎ সিং। শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবজমিন ছবির জন্য ‘মন রে কৃষিকাজ জানো না’ গানটি রেকর্ড করেছিলেন গায়ক। তবে এই গান রেকর্ড করবার জন্য মাসের পর মাস শ্রীজাতকে অপেক্ষা করিয়েছেন অরিজিৎ। তবে কবি নিশ্চিত ছিলেন ‘সেরা কিছু’ পেতে চলেছেন তিনি। এই গান নিজে বারবার রেকর্ড করেছেন আর বাতিল করেছেন অরিজিৎ। শেষে সময় চেয়ে নিয়ে বলেছেন, ‘আমাকে একটু সময় দেবে শ্রীজাতদা?’ সেই অপেক্ষার ফসল যে কত মধুর তা শ্রোতা-দর্শকরা আগেই দেখেছেন। পান্নালাল ভট্টাচার্যের কন্ঠে বাঙালি এই গান শুনে অভ্যস্ত, অরিজিৎ আজকের প্রজন্মের কাছে সাফল্যের সঙ্গে এই রামপ্রসাদী গান পৌঁছে দিয়েছেন।

শনিবার রাতে অ্যাকোয়াটিয়ার মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রথমবার লাইভ কনসার্টে ‘মন রে কৃষিকাজ জানো না..' গাইলেন অরিজিৎ। আসলে ঘরের ছেলে যখন ঘরের মাঠে গান গাইছে তখন বাড়তি একটা পিছুটান তো থাকবেই। এদিন গিটার হাতে গান গাইতে গাইতে মাঝপথে থামলেন অরিজিৎ। এরপর বললেন, 'এই গানটা আমি অনেকদিন ধরে গেয়ে উঠতে পারছিলাম না। এই গানটার কথাগুলো না মনে হচ্ছিল আমি নিজেকে গালি দিচ্ছি। বা হয়তো রামপ্রসাদ বাবু গালি দিচ্ছেন এইরকম মনে হয়। সত্যি সত্যি তো কৃষিকাজ কিছুই শিখলাম না, কিছুই জানলাম না আর কী। এই দেহের, এই জীবনের ফসল কীভাবে কাটতে হয় জানলাম না। কীভাবে এই জমিকে উর্বর করতে হয়'—  কিছুই তো শিখলাম না, কিছুই তো করলাম না।'

আরও পড়ুন-‘এই লোকটা একমাত্র ভেবেছিল…’, মঞ্চ থেকে হাত জোড় করে ‘রাজদা’কে ধন্যবাদ অরিজিতের!

নিজের মনের ভাবনা পরিচালক তথা কবি শ্রীজাতর সঙ্গে আগেই ভাগ করে নিয়েছিলেন অরিজিৎ। তবে একান্ত ব্যক্তিগত সেই কথা এতদিন ফাঁস করেননি শ্রীজাত। তবে অরিজিৎ শনিবারের অনুষ্ঠানে নিজের মুখে সবটা বলবার পর স্মৃতিচারণে ভাসলেন শ্রীজাত। ফেসবুকে সেই ঘটনার কথা স্মরণ করে তিনি লেখেন, 'এখন যখন জনসমক্ষে অরিজিৎ বলেই ফেলেছে কথাটা, তখন আর আমার বলতে দোষ নেই। সারারাত ধরে স্টুডিওতে গেয়েছিল গানটা, ভোরবেলা পাঠিয়েছিল। সে-গান কেমন হয়েছে, এখন গোটা ভারতবর্ষ জানে। কিন্তু কথা সেটা নয়। কথা হলো, তারপর একটা মেসেজ এসেছিল আমার ফোনে। ‘শ্রীজাতদা, গানটা গাইতে গাইতে মনে হচ্ছিল নিজেকে গালি দিচ্ছি। কিছুই তো করা হলো না জীবনে’। আমি জানি, এ-কথার সত্যতা একশো ভাগ, কোথাও কোনও মেকি বিনয় নেই। উত্তরে তাই বলেছিলাম, ‘আমরা কেউই কিছু করে উঠতে পারিনি, তুমি কেবল এই অতৃপ্তিটুকু জিইয়ে রেখো, তাহলেই হবে’।

আরও পড়ুন-চার বছরের সংসার টেকেনি, ফের মধুমিতার সঙ্গে জুটি বাঁধতে আগ্রহী সৌরভ!

শনিবার রাত থেকে বাঙালির সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শুধুই অরিজিৎ! ফেসবুকের নিউজ ফিড ভরে যাচ্ছে অ্যাকোয়াটিকা কনাসার্টের ভিডিয়োতে। সবার অজান্তেই তিন ঘন্টার অনুষ্ঠান শেষ করে ক্লান্তির মাঝেও শ্রীজাতর ফোনে একটা মেসেজ এসেছিল অরিজিতের কাছ থেকে। সেখান লেখা, ‘আজ শ্যামাসঙ্গীতটা গেয়েছি স্টেজে’। পাশে নির্ভার একটা স্মাইলি। আর এই ঘটনা থেকে শ্রীজাতর উপলব্ধি, ‘সামান্য খ্যাতির কাদায় যখন চারপাশের বহু মানুষের পা পিছলে যাচ্ছে, তখন চূড়ায় বসে থাকা একজন শিল্পীর এমন অতৃপ্তি হয়তো বিস্ময় আনে। পরক্ষণেই মনে হয়, ব্যাপারটা আদতে উল্টোই। এমন অতৃপ্তি অন্তরে বয়ে বেড়ায় বলেই আজ সে চূড়ায়। এবং সেখানেই থাকবে।’

 

বন্ধ করুন