আরজি করের ঘটনা নিয়ে সক্রিয় প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন গায়ক অরিজিৎ সিং। সোমবারই তিনি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে, অভয়াকে নিয়ে কথা বলেন। সঙ্গে তিলোত্তমাকে নিয়ে লেখা গানও গেয়ে শোনান। এর ২৪ ঘণ্টা পর ফেসবুকে একটি লম্বা পোস্ট করলেন গায়ক।
অরিজিৎ তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবু অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে লেখেন, ‘২০২৪ সালের ৯ অগস্ট, কলকাতার কেন্দ্রস্থলে ঘটা একটি ট্র্যাজেডি গোটা জাতিকে তার মূল থেকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক তরুণ শিক্ষানবিশ ডাক্তারের নৃশংস গণহত্যা প্রতিবাদের আগুনের ঝড় তুলেছে ভারত জুড়ে। এই গানটি ন্যায়বিচারের জন্য একটি আর্তনাদ, অগণিত নারীদের গলার আওয়াজ, যা নিয়ে তাঁরা ভুক্তভোগী।’
‘চলুন আমরা সকলে 'অভয়া'-এর সাহসিকতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই, যে তরুণ ডাক্তার মারা গিয়েছেন, যিনি নির্ভয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন। লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্য নিয়ে মহিলারা যে লড়াই করে চলেছেন, তার হয়ে গলা তুলি আমরা। আমাদের এই গান, সারা দেশের ডাক্তারদের কণ্ঠস্বর, যারা বিপদের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও অক্লান্তভাবে সেবা করে। এটি কেবল একটি প্রতিবাদী গান নয়- এটি একটি ডাক যে, মহিলাদের সুরক্ষা এবং মর্যাদার জন্য আমাদের লড়াই এখনও শেষ হয়নি।’, নিজের পোস্টে আরও লেখেন অরিজিৎ।
‘আমরা যখন এই গান গাইব, আমরা তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা মনে রাখব যারা সামনের সারিতে ছিলেন সবসময়, আমাদের ডাক্তার, আমাদের সাংবাদিক এবং আমাদের ছাত্ররা, যাদের শুধু সম্মান দিলেই হবে না, সুরক্ষাও দিতে হবে আমাদের। এই গান একটা আওয়াজ হয়ে উঠুক। আশা, ন্যায়বিচারের আবেদন এবং পরিবর্তনের ডাক তুলুক। একসঙ্গে, আমরা যেন নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে পারি, এরকম ট্র্যাজেডি আর কখনও ঘটবে না’, নিজের বক্তব্যে জুড়েছেন অরিজিৎ।
গানটি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করেছেন গায়ক। ট্রিবিউট দিয়েছেন নিজের মা, মাস্টারমশাই, আর দিদাকে।
‘আর কবে আর কবে/ কণ্ঠ শক্তি পাবে/ আর কবে আর কবে?’, গানের কথায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন গায়ক। ‘…এ ব্যাথা আমার, নয় শুধু একার/ বিপ্লবী তিলোত্তমা করেছে অঙ্গীকার/ লুটিয়েছে প্রাণ তাই ধরেছি গান/ করছি প্রার্থনা বিফল না যায় সে বলিদান…’, লিখেছেন অরিজিৎ।
প্রতিবাদে রাস্তায় নামা নিয়ে নিজের আশঙ্কাও সামনে এনেছেন। তাঁকে সোমবারের লাইভে বলতে শোনা যায়, ‘অনেকেই ভাবছে আমি রাস্তায় নামব। কিন্তু সবাই তো নামছে। সুপ্রিম কোর্টের উপর আশা রাখছি। তবে আমার শুধু ভয় হচ্ছে, যে উত্তর চাইছি সেটা পাবো না। তবুও আশা তো রাখতেই হবে। ভয় কেউ না এটার সুযোগ নেয়। যেন কোনও বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়।’