সোশ্যাল মিডিয়ায় চাঁচাছোলা বক্তব্যের জন্য হামেশাই চর্চায় থাকেন অরিত্র দত্ত বণিক। একসময় শিশুশিল্পী হিসাবে বাংলা ছবির পর্দা কাঁপিয়েছেন অরিত্র, এখন অবশ্য ক্যামেরার পিছনে কাজ করেন। পাশাপাশি রিসার্চের কাজেও মগ্ন তিনি। আরজি কর কাণ্ড মামলার বিচার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে শিয়ালদা সেশন কোর্টে। আরও পড়ুন-আরজি কর অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে নিয়ে নিউজ চ্যানেল খুলতে চান অরিত্র! যুক্তি দিয়ে বোঝালেন কারণ
সেখানে মিডিয়ার প্রবেশ নিষিদ্ধ, তবে কর্মসূত্রেই সেই ট্রায়াল কাছ থেকে দেখবার সুযোগ পাচ্ছেন অরিত্র। এর মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ভিডিয়ো ক্লিপ দেখে ক্ষুব্ধ অরিত্র। যেখানে সিপিআই(এম) কর্তৃক আয়োজিত 'জনতার চার্জশীট' অনুষ্ঠানে এক চিকিৎসক আরজি করের নির্যাতিতা তরুণীর ময়নাতদন্ত নিয়ে এক সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে বেশ কিছু দাবি করেছেন ওই চিকিৎসক। তিনি স্পষ্ট বলেন, সঞ্জয় রাইয়ের একার পক্ষে ওই বীভৎস ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয়, তিনি নাকি নিজে পোস্টমর্টেম দেখেছেন। দ্য ট্রুথের তরফে যখন পালটা জানতে যাওয়া হয় কী এমন রয়েছে সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে, চিকিৎসক প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পড়ে আমতা আমতা করে বলেন ধর্ষিতা-খুন হওয়া চিকিৎসক তরুণীর ‘পা দুটি নাকি ১৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ঘোরানো ছিল’। এরপর জানান, আর কিছু মনে করতে পারছেন না তিনি, তাঁর দাদুর মারা যাওয়ার খবর পেয়েছেন সদ্য। এখন তাঁর যথাযথ মানসিক পরিস্থিতি নেই।
এই ভিডিয়ো ক্লিপ তুলে ধরে এক জনৈক প্রশ্ন করেন, ‘সিপিআই(এম) কর্মী-সমর্থকরা এখনও এই ভাবে গুজব ছড়াচ্ছে কেন?’ সেই পোস্ট নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে তুলে ধরে অরিত্র রীতিমতো তুলোধনা করলেন ওই ব্যক্তিকে। তিনি আদপে চিকিৎসক কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে অরিত্র সাফ জানান, ‘ইনি যদি চিকিৎসক হয়ে থাকেন আর এইভাবে মিথ্যা কথা বলেন তাহলে আমি আর কথা বাড়াবো না। ইনি অটোপ্সি রিপোর্টটা পড়েননি, আর নাহলে পড়েও ভুল বুঝেছেন, পোস্ট মর্টেম আর জি করের পরে এইমস থেকে ভেরিফাই হয়েছে, বডিতে পাওয়া DNA এর সাথে সঞ্জয়ের মিল আছে’।
অরিত্র আরও বলেন, ‘এই চিকিৎসকরা যদি সব জেনে থাকেন তাহলে আদালতে কেন আসছেন না? সুপ্রিম কোর্টেও বলেন না, শিয়ালদহ আদালতেও বলেননি এখনো অব্দি। শুধু মিডিয়ায় কেন? প্রমান নিয়ে কাল আসুন শিয়ালদহ আদালতে দুপুর ২.০০ টো অভয়ার ট্রায়াল। মিডিয়া ইন্টারভিউ না দিয়ে আসুন কাল। কাল এভিডেন্স ক্রস এক্সামিনেশানে পুনরায় সঞ্জয়কে পেশ করা হবে।’
শিয়ালদা কোর্টে চলা ‘অভয়ার ট্রায়াল’-এ গবেষণার কারণে উপস্থিত রয়েছেন অরিত্র। সেকথা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়ে নিজের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির কথা শেয়ার করেছেন তিনি। অরিত্র জানান, ‘সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়ার আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারকে সামনে থেকে দেখা… শীর্ষ আদালতের এতো সিনিয়ার আইনজীবী সেশান কোর্টে অভয়ার হয়ে লড়াই করলে গোটা প্রক্রিয়ায় সমস্ত আইনজীবীরাই এনার্জি পায়। এভিডেন্স সাবমিশনে ও ক্রস এক্সামিনেশানে সিনিয়ার আইনজীবী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়’।
তিনি আরও বলেছেন. ‘প্রোটোকল হিসেবে কেসের কোর ডিটেইলস এক্সেস পেলে ট্রায়াল নিয়ে আর বাইরে কথা বলা যায় না, আমাকে আর জি কর কান্ড নিয়ে প্রেসের কাছ থেকে সরে আসতে হয়েছে। শুধু মনে রাখবেন ভারতীয় সংবিধানের কাছে এই ধরনের ক্রিমিনালদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ, যে ঘন্টার পর ঘন্টা একজন ধর্ষককেও নিজেকে ডিফেন্ড করতে সময় দেওয়া হয়, বহু বছর পর যদি এই মামলার কেস ডায়েরি প্রকাশ করা হয়, মানুষ দেখে আশ্চর্য হবে যে যৌন লালসার জন্যে জীবনের শেষ মুহুর্ত অব্দি ঠিক কি ভয়ানক অত্যাচার চালানো হয়েছে একটি মেয়ের ওপর, কোনো সুস্থ মানুষ আসল কেস ডায়েরি পড়লে নিজের রাগ ধরে রাখতে পারবেন না।’
আজ, বৃহস্পতিবার ফের শিয়ালদা কোর্টে চলবে এই মামলার শুনানি। অরিত্র জানিয়েছেন, আজকের শুনানি শেষে মাননীয় বিচারক শ্রী অণির্বান দাস 'একটা কম্প্রিহেন্সিভ আইডিয়া দেবেন, দ্রুত বিধান আসছে;।