১৩ ডিসেম্বর জামিন পেলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। তাঁদের নামে কোনো চার্জিশিটই দিতে পারেনি সিবিআই। আরজি করে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে।
এই খবর সামনে আসার পর থেকে রীতিমতো প্রতিবাদের ঢল নেমেছে রাস্তায়-সোশ্যাল মিডিয়াতে। তবে খনিকটা উলটো সুর শোনা গেল অরিত্র দত্ত বণিকের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে। একসময় টলিউডে শিশুশিল্পী হিসেবে চুটিয়ে কাজ করেছিলেন। এখন অবশ্য তাংর দেখা পাওয়া যায় বেশি সোশ্যাল মিডিয়াত। সামজ, রাজনীতি থেকে দেশের আইন ব্য়বস্থা- সবকিছু নিয়েই ফেসবুকে খোলা মনে মতামত রাখেন অরিত্র।
সন্দীপ-অভিজিৎ জমিন পেতেই ফেসবুকে অরিত্র লিখলেন, ‘মিডিয়ার খবরে বিভ্রান্ত হয়ে- এক হপ্তা ট্রায়ালে নিজে উপস্থিত হয়েছিলাম। পেজে লিখে দিয়েছিলাম সিবিআই সূত্র ফুল ঢপ, সুপ্রিম কোর্টের কাছে সিবিআই লেটেস্ট রিপোর্ট দিয়েছিল সেখানেও লার্জার কন্সপিরেন্সি নিয়ে কিছু লেখেনি, লিখলে চিফ জাস্টিস এক মাসের মধ্যে ট্রায়াল শেষের কথা বলতেন না। আর তার পরেই ভারতের অন্যতম সেরা আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার কেস থেকে সরে যেতেন না। আজ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসির জামিনের পর তা স্পষ্ট হল।’
অরিত্র এরপর নিজের পোস্টে লেখেন, ‘সঞ্জয় রায় একমাত্র অভিযুক্ত, সন্দীপ ঘোষ সম্ভবত তার পূর্বতন দুর্নীতিগুলো যাতে আলোতে না আসে সেই দিকটা ঢাকতে মৃত্যুটাকে লুকোনোর অপচেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে, রাজনৈতিক নেতারা এলাকা ঘিরে ফেলেছে, বাইরে প্রেস ধুন্দুমার। ধরে নেওয়া হল সন্দীপের টিম দায়ী৷ কিন্তু বিরোধীদের ভুল রাজনৈতিক পদক্ষেপের কারণে জনগণ ভুল দিকে চালিত হল। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও চিকিৎসকের মৃত্যু নিয়ে সরকারকে প্রশ্ন না করে মেডিক্যাল কাউন্সিল ও ভোট নিয়ে বেশি ভেবে ফেললাম।’
‘রাজীব কুমারকে ফোন করার পর মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি গোপন ইনপুট দেন যে, এই খুনে এক ফোঁটাও তৃণমূল যুক্ত নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশের ফোনটা রেখে কিছুক্ষণ ভাবলেন, ছকে নিলেন, প্রেসকে ডাকলেন বলে দিলেন কেসটা সিবিআইকে দিতে চায় রাজ্য প্রশাসন। খেলা শেষ। কারণ তৃণমূলের লোক জড়িত হলে, এই পদক্ষেপ নিতেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই রাজনীতি হত সম্পূর্ণ ভিন্ন। রাজনীতিতে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল দূরদর্শিতা আর সোর্স। সেটিং করে আন্দোলন হয় না এটা বাকিদের বুঝতে হবে।’, আরও লেখেন অরিত্র নিজের পোস্টে। যদিও তাঁকে এর পূর্বে (অবশ্যই আরজি করের ঘটনা ঘটার পরপর) সরকারের দিকে বেশ কয়েকবার আঙুল তুলতে দেখা গিয়েছিল। এবারে তাঁর এই লেখাটি তাই অবাক করেছে অনেককেই।
এক নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, ‘ভুল বললেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা নিয়ে সরকারকে প্রশ্ন করা হয়েছে। ডাক্তারদের ১০ দফা আন্দোলনের মূল এটাই ছিল।’ আরেকজ লেখেন, ‘একজনের পক্ষে কি ওরকম খুন করা সম্ভব? প্রশ্ন তো থাকছেই।’ তৃতীয়জন লিখলেন, ‘এই ঢপের গল্পগুলো আজকে যেভাবে লিখছ, এতদিন তো এমন কথা শুনিনি। হঠাৎ করে এই ঘটনায় টিএমসি যুক্ত নয়, থাকলে অন্য খেলা হত! অন্য রাজনৈতিক দল ভুল বুঝিয়ে ঘেঁটে ফেলেছে এইসব নাটকের জ্ঞান না দিলেই ভালো হয়।’