অবসাদে ভুগছেন বলি অভিনেতা অর্জুন কাপুর। ‘হাশিমোটো’ রোগে আক্রান্ত তিনি। সম্প্রতি, দ্য হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজেই নিজের অসুস্থতা নিয়ে মুখ খুলেছেন অর্জুন। সম্প্রতি রোহিত শেট্টির 'সিংঘম এগেইন'-এ দেখা যাবে অর্জুনকে। ছবির অ্যাকশন দৃশ্যে কাজ করার বিষয়ে কথা বলার সময়ই নিজের অবসাদগ্রস্ত হওয়ার বিষয়ে মুখ খুলেছেন বনি পুত্র।
ঠিক কী বলেছেন অর্জুন কাপুর?
অর্জুন কাপুর বলেন, তাঁর সাম্প্রতিক সিনেমাগুলি বক্স অফিসে একের পর এক ব্যর্থ হওয়ার পর মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। বাধ্য হয়েই মনোবিদের কাছে গিয়ে থেরাপি গ্রহণ করেন তিনি। একসময় যৌবনে পা রাখার পরপরই মোটা হওয়ার কারণে অনেক মানসিক ট্রমার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে।
বর্তমানে অবসাদ কাটাতে থেরাপি গ্রহণ করার বিষয়ে অর্জুন বলেন, ‘আমি থেরাপি নেওয়া শুরু করেছি ... ডিপ্রেশন ও থেরাপি বিষয়টি গত বছর শুরু হয়েছিল। আমি আদৌ অবসাদে ভুগছি কিনা সেটাও জানা ছিল না। শুধু জানতাম যে কিছুই কাজ করছে না ... আমার জীবনটাই একটা সিনেমা হয়ে উঠেছিল। তারপর হঠাৎ অন্যের কাজ দেখে ভাবতে শুরু করি, আমি কি পারব বা আমি সুযোগ পাব? যদিও আমি কখনই নেতিবাচক মানুষ ছিলাম না, তবে ধীরে ধীরে এই চিন্তাটাই আমায় গ্রাস করতে শুরু করেছিল ...। এরপর যখন আমি থেরাপি নিতে শুরু করি, শুরুতে এমন একজন থেরাপিস্টের কাছে গিয়েছিলাম যিনিও আমার এই বিষয়টি সমাধান করতে পারেননি। তাই আরও কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম। আমি তখন এমন একজনকে খুঁজে পেলাম যিনি আমাকে সত্যিই কথা বলার সুযোগ দিলেন। তিনিই আমার রোগ নির্ণয় করে জানান, আমি হালকা হতাশায় ভুগছি, যা সাময়িক পরিস্থিতির কারণেই।'
অর্জুনের আরও বলেন, অবসাদ যখন শুরু হয়, শুরুতে অল্পই লক্ষণ দেখা যায়, তখনই সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত। পরে এই হালকা অবসাদের লক্ষণগুলি ক্লিনিকাল হতাশার রূপ নেয়। ঘুমিয়ে পড়া বা ঘুমিয়ে থাকতে অসুবিধা থেকে দুঃখ বা উদাসীনতা এই সবই এর লক্ষণ।
আরও পড়ুন-জটিল রোগে আক্রান্ত! যখন তখন অজ্ঞান হয়ে যান, খিঁচুনি ধরে, ঠিক কী হয়েছে ফতিমা সানা শেখের?
অর্জুনের শারীরিক সমস্যা
সাক্ষাৎকারে, অর্জুন আরও বলেন যে তিনি কীভাবে 'সবসময়' কিছু না কিছু শারীরিক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করেছেন। অর্জুন বলেন, ‘আমি আগে এটা নিয়ে মুখ খুলিনি। তবে আমার হাশিমোটো রোগও রয়েছে (অটোইমিউন রোগ যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে), যা থাইরয়েডেরই একটা এক্সটেনশন। এর ভীষণভাবে ওজন বাড়তে থাকে। তবে যখন আমার (হাশিমোটোর রোগ) এই রোগ ধরা পড়ে তখন আমার বয়স ৩০ বছর। আমি তখনএই বিষয়টা মানতেই চাইনি। শুনেই বলেছিলাম, না, এট হতেই পারে না। আমার মা (মোনা শৌরি কাপুর)এর এই রোগ ছিল, আমার বোন অংশুলা কাপুরেরও এটা রয়েছে। আজ যখন আমি পিছনে ফিরে তাকাই, তখন আমি আমার এই শারীরিক সমস্যার বিষয়টি দেখতে পাই। সেই ২০১৫-১৬ সাল, সাত-আট বছর ধরে ধীরে ধীরে আমি সেই শারীরিক ট্রমা কাটিয়েছি। তারপর সিনেমায় কাজ শুরু করি।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অসুস্থতার কারণে অতিরিক্ত ওজন বেড়েছে বাংলার অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদারের। তিনিও সম্প্রতি ওজন বৃদ্ধি নিয়ে মুখ খুলেছেন। আর এবার অসুস্থতা নিয়ে মুখ খুললেন বলিউডের অর্জুন কাপুর।
হাশিমোটো কী?
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডাইজেসটিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজ (এনআইডিডিকে) এর মতে, হাশিমোটোর রোগটি একটি অটোইমিউন ডিসঅর্ডার যা হাইপোথাইরয়েডিজম বা অপ্রচলিত থাইরয়েডের কারণ হতে পারে। কখনও আবার এই রোগটি হাইপারথাইরয়েডিজম বা ওভারটিভ থাইরয়েডের কারণেও হতে পারে। থাইরয়েড হরমোনগুলি আপনার শরীরে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, এগুলি কীভাবে আপনার দেহের প্রতিটি অঙ্গকে প্রভাবিত করে - কখনও কখনও হৃদরোগেরও সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে এটা
NIDDK এই রোগের যে সাধারণ লক্ষণগুলি তালিকাভুক্ত করে
◉ ক্লান্তি
◉ ওজন বৃদ্ধি
◉ ঠান্ডা সহ্য করতে সমস্যা
◉ জয়েন্ট এবং পেশী ব্যথা
◉ কোষ্ঠকাঠিন্য
◉ শুষ্ক ত্বক বা শুষ্ক, পাতলা চুল
◉ ভারী বা অনিয়মিত মাসিক পিরিয়ড বা উর্বরতার সমস্যা
◉ ধীর হৃদস্পন্দন
Disclaimer: এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র তথ্যমূলক উদ্দেশ্যে এবং পেশাদার চিকিৎসা পরামর্শের বিকল্প নয়। কোনও মেডিকেল অবস্থা সম্পর্কে যে কোনও প্রশ্নের সাথে সর্বদা আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।