রাহুল মুখোপাধ্যায় এসভিএফ-এর পুজোর ছবি পরিচালনা করতে পারবেন কিনা, এই প্রশ্ন এখন সবার মনে। তবে তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হল, সোমবার থেকে কি স্টুডিওপাড়ায় লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের শব্দ শোনা যাবে? শনিবার সন্ধ্যেতে ফেডারেশন স্পষ্ট জানিয়েছে আগের সিদ্ধান্তে অনড় তাঁরা। রাহুল পরিচালকের আসনে থাকলে টেকনিশিয়ানরা শ্যুটিং করবেন? এই প্রশ্নের জবাবে ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস শনিবার সন্ধ্যায় জানান, তাঁদের কাছে যে নথি আছে, সেখানে এসভিএফের ছবির পরিচালক সৌমিক হালদার, রাহুল মুখোপাধ্যায় নন। অর্থাৎ রাহুলকে বয়কটের সিদ্ধান্ত থেকে সরল না ফেডারেশন। পাশাপাশি জানানো হল, ‘আইন মেনে কেউ শুটিং করলে আমরাও যোগ দিতে রাজি’। আরও পড়ুন-'মুখ্যমন্ত্রী মহানায়ক সম্মান দিলেন…', বুম্বাদা-র শ্যুটিং বন্ধ, চরম অপমান! ফেডারেশনকে একহাত নিলেন দেব
শনিবার সকালে এসভিএফের ছবির সেটে টেকনিশিয়ানদের অনুপস্থিতির কারণ খুঁজে পাননি পরিচালকরা। এই ‘অপমান’-এর জবাবে পরিচালকরা জানিয়েছেন, যদি রাহুলে সসম্মানে পরিচালকের পদে টেকনিশিয়ানরা না গ্রহণ করে তবে সোমবার থেকে ছবির সেটে যাবেন না তাঁরা। এই সিদ্ধান্তকে চিঠি দিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন টেলিভিশন পরিচালকদের সংগঠনও। সব মিলিয়ে সোমবার টলিগঞ্জে অচলাবস্থা তৈরির সম্ভাবনা প্রবল। এর মাঝেই রবিবার বেলা গড়াতেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল আর্টিস্ট ফোরাম।
শনিবার বাংলা ছবির এই বেহাল দশার জন্য ফেডারেশনের একরোখা সিদ্ধান্তের দিকে আঙুল তুলে একটি কমন পোস্ট ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে নিয়েছিলেন দেব, প্রসেনজিৎরা। আর্শ্চজনকভাবে জিৎ কিন্তু চুপ ছিলেন। অবশেষে আর্টিস্ট ফোরামের কার্যকরী সভাপতি এদিন ফোরামের বিবৃতি তুলে ধরলেন।
দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চেয়ে রবিবার ২৮ জুলাই, ওয়েস্ট বেঙ্গল মোশন পিকচার্স আর্টিস্ট ফোরাম-এর তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘আজকের পরিস্থিতিতে আমরা কোনওভাবেই চাই না শ্যুটিং ব্যহত হোক’। ভিন্নমতাবলম্বীদের আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধান সূত্রের খোঁজে অগ্রণী ভূমিকা নিতে প্রস্তুত আর্টিস্ট ফোরাম। টলিপাড়ায় প্রত্যেকটি শিল্পী, কলাকুশলীরা যেন স্বক্ষেত্রে সসম্মানে কাজ চালিয়ে যেতে পারে এবং কোনওরকম অসহযোগিতার সম্মুখীন না হন, সেই অনুরোধও ফোরামের পক্ষে রাখেন কার্যকরী সভাপতি জিৎ, সভাপতি রঞ্জিত মল্লিক এবং সাধারণ সম্পাদক শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়।
শনিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দেব বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক রঙ না লাগানোর। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ সরকার টলিপাড়ার স্টুডিওর উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে, আর সেটা কাজ বন্ধ করে ফেলে রাখার জন্য করা হয়নি। প্রসেনজিৎ-এর ছবির শ্যুটিং টেকনিশিয়ানদের অসহযোগিতায় বন্ধ হওয়ায় ক্ষুব্ধ দেব। বলেন, 'আমরা সবাই তাঁকে সম্মান করি, বুম্বাদা সবসময় টেকনিশিয়ানদের পাশে দাঁড়িয়েছে, অথচ আজ তাঁরই শ্যুটিং বন্ধ করে দেওয়া হল। মুখ্যমন্ত্রী যাকে সম্মান দিচ্ছেন, ফেডারেশন তাঁরই শ্যুটিং বন্ধ করে দিচ্ছে। এটা খুবই অসম্মানজনক’।'
পুজো রিলিজের সিনেমা নিয়ে মহাফ্যাসাদে পড়েছে এসভিএফ। যদিও কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতা রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন,'আর কটা দিনের অপেক্ষা, পুজোর ছবি পরিচালনা করবেন রাহুল মুখোপাধ্যায়ই। প্রেক্ষাগৃহে উপচে পড়বে দর্শক।'