অরুণাচলের এক গায়কের ভিডিয়ো রীতিমতো ভাইরাল এখন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেখানে দেখা যায়, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের সময় প্রকাশ্যে একটি মুরগির গলা কাটেন, এরপর এটির রক্ত পান করেন শিল্পী কন ওয়াই সন। ইতিমধ্যেই ওই গায়কের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছেন অরুণাচল প্রদেশের পুলিশ।
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস), 2023 এবং দ্য প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু অ্যানিম্যালস (পিসিএ) আইন, 1960-এর অধীনে কন ওয়াই সনের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে।
কন ওয়াই সন, যিনি অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব কামেং জেলার সেপ্পার বাসিন্দা, তিনি একজন গীতিকার, সুরকার এবং সঙ্গীতজ্ঞ। পিপল ফর দ্য এথিক্যাল ট্রিটমেন্ট অফ অ্যানিম্যালস (PETA)-এর ভারতীয় শাখার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কন ওয়াই সনের বিরুদ্ধে সোমবার ইটানগর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। ২৮ অক্টোবর একটি পারফরম্যান্সের সময় শিল্পী মুরগিকে মেরে সেটির রক্ত পান করার পরে ইটানগরে ব্যাপকভাবে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার ভিডিয়ো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় শিল্পীর বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নেটিজেনরা তাঁকে ‘রক্তপিপাসু শিল্পী’ বলে আখ্যা দেন।
মঙ্গলবার ৫ নভেম্বর, ইটানগরের পুলিশ সুপার (ক্যাপিটাল) রোহিত রাজবীর সিং বলেন, ‘তদন্তের জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।’
এদিকে যখন এই আমানবিক কাজের জন্য এই অরুনাচলী গায়কের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সোচ্চার চারদিক, তখন ইভেন্টের আয়োজকরা এই ‘অমানবিক কাজের ব্যাপারে জানতেন না’ বলেই দাবি করেছেন। এমনকী, তাঁরা জানিয়েছে, শোয়ের আগে জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করতে দিতে একেবারেই সম্মত ছিলেন না তাঁরা।
PETA ইন্ডিয়ার ক্রুয়েলটি রেসপন্স কো-অর্ডিনেটর, সিঞ্চনা সুব্রমণ্যনকে এই নিয়ে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আপনি যদি এমন একজন শিল্পী হন যিনি পশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতা দেখিয়ে জনপ্রিয় হওয়ার কথা ভাবছেন, তাহলে আপনার সময় এসেছে অন্য কাজ খুঁজে নেওয়ার। প্রকৃত শিল্পীরা তাদের প্রতিভার উপর নির্ভর করে নজর কাড়তে।’
The Animal Rights Group জানিয়েছে, যে লোকেরা পশুদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে, তাঁদের মানসিক অবস্থার মূল্যায়ন করা উচিত এবং কাউন্সেলিং করা উচিত। ‘গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে লোকেরা, প্রাণীদের উপরে নিষ্ঠুর ব্যবহার করে, তাঁদের মধ্যে প্রায়শই মানুষ-সহ অন্য প্রাণীদের আঘাত করার প্রবণতা দেখা যায়।’
‘যারা প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুর, তারা খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, হামলা, হয়রানি, হুমকি এবং মাদক/দ্রব্যের অপব্যবহার সহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে সাধারণত জড়িয়ে পড়ে’, সম্প্রতি এরকমই উল্লেখ আছে ফরেনসিক রিসার্চ অ্যান্ড ক্রিমিনোলজি ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে।