আরিয়ান খান মাদক মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা এনসিবি আধিকারিক সমীর ওয়াংখেড়েকে নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে দিন কয়েক ধরেই। লাগাতার মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নবাব মালিক খোঁচা দিয়েছেন এনসিবির জোনাল ডিরেক্টরকে। এর মাঝেই রবিবার আরিয়ান মামলার এক সাক্ষী বয়ান থেকে সরে দাঁড়িয়ে পালটা অভিযোগ আনেন ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে। সাদা পাতায় জোর করে তাঁকে দিয়ে সই করানো হয়েছে থেকে ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে তোলাবাজির মতো বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন প্রভাকর সেইল।
পরিস্থিতি ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিল, লাগাতার ব্যক্তি আক্রমণ সহ্য করতে না পেরে এবার আইনের পথে হাঁটলেন সমীর ওয়াংখেড়ে। সোমবার মুম্বইয়ের সেশন কোর্টের দ্বারস্থ হলেন এনসিবির মুম্বইয়ের জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে।
এদিন বিশেষ এনডিপিএস আদালতে দায়ের আবেদনে এই এনসিবি কর্তা জানিয়েছেন, 'আমার পরিবার, আমার বোন, এমনকী আমার স্বর্গীয় মা-কে আক্রমণ করা হচ্ছে। তাঁর আশঙ্কা যে কোনও সময় গ্রেফতার করা হতে পারে তাঁকে। হলফনামায়, সমীর ওয়াংখেড়ে জানিয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধে আনা তোলাবাজির অভিযোগের জন্য সবরকমের তদন্তের জন্য প্রস্তুত তিনি। কিন্তু ব্যক্তি আক্রমণ থেকে রেহাই দেওয়া হোক তাঁকে। তাঁর প্রশ্ন, ‘আমার পরিবারের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ তোলা হচ্ছে? কারণ আমার পজিশনের জন্য, তাই না? এর মাধ্যমে আমাকে তদন্তের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে, যাতে আমি আদালতে সত্য প্রমাণে ব্যর্থ হই’।
এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছেও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে নিজের পক্ষ রাখেন এনসিবির এই দুঁদে অফিসার। সমীর ওয়াংখেড়ের জন্মের ‘ভুয়ো’ শংসাপত্র টুইট করে নবাব মালিক দাবি করেন এনসিবি আধিকারিকের বাবার নাম দাউদ ওয়াংখেড়ে, কিন্তু চাকরির পরীক্ষায় তিনি বাবার নাম ধ্যানদেব ওয়াংখেড়ে লিখেছেন। ‘ধর্ম’ লুকিয়ে চাকরি পেয়েছেন তিনি, এমন অভিযোগ করেন উদ্ধব সরকারের সংখ্যা লঘু উন্নয়ন মন্ত্রী।
এই অভিযোগের জবাবে সমীর ওয়াংখেড়ে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর বাবা ধ্যানদেব কাচরুজি ওয়াংখেড়ে একজন হিন্দু। তাঁর স্বর্গীয় মা, জাহিদা ছিলেন মুসলিম। তিনি সর্ব ধর্ম সমন্বয়ের আদর্শের মাঝে বড়ো হওয়া একজন ভারতীয় এবং নিজের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে গর্বিত।
ওয়াংখেড়ের দুটো বিয়ে নিয়ে যে কটাক্ষ করেছেন নবাব মালিক, তার জবাবও দিয়েছেন এই অফিসার। তিনি বলেন, ২০০৬ সালে স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টের অধীনে ডঃ শাবানা কুরেশিকে বিয়ে করেছিলেন তিনি, ২০১৬ সালে আইনি বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। পরের বছর অভিনেত্রী ক্রান্তি রেডকর-এর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তিনি।
নবাব মালিকের উদ্দেশে সমীর ওয়াংখেড়ের বার্তা, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে যে তথ্য মাননীয় মন্ত্রী ফাঁস করছেন তা মানহানিকর এবং পারিবারিক গোপনীয়তাকে লঙ্ঘন করছে। এই ধরণের ব্যক্তি আক্রমণে তিনি সর্বতোভাবে ব্যাথিত বলে উল্লেখ করেন সমীর ওয়াংখেড়ে।