বৃহস্পতিবার আরিয়ান খানের জামিনের শুনানিতে বারবার উঠে এল রিয়া চক্রবর্তী ও শৌভিক চক্রবর্তীর মাদক মামলার প্রসঙ্গ। এদিন বিশেষ এনডিপিএস আদালতে এনসিবির পক্ষ রাখেন অ্যাডিশন্যাল সলিসিটার জেনারেল, অনিল সিং। তিনি বিচারককে বলেন, আরিয়ানের কাছ থেকে মাদক উদ্ধার হয়নি, এই শর্তে তাঁকে জামিন দেওয়া অনুচিত। এক্ষেত্রে তিনি টেনে আনেন রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তীর উদাহরণ, তাঁর কাছ থেকেও উদ্ধার হয়নি মাদক, কিন্তু মাদকচক্রের সঙ্গে যোগসাজশের প্রমাণ মেলায় তাঁর জামিন খারিজ হয়েছিল সেশন কোর্টে।
তিনি আরও যোগ করেন, আরিয়ান খান বহুবছর ধরে নিয়মিত ড্রাগস সেবন করত। ‘ওদের বয়স কম, বাচ্চা ছেলে', ডিফেন্সের এই যুক্তি এখানে খাটে না, ওরাই তো দেশের ভবিষ্যত', এনডিপিএস আদালতকে জানালো এএসজি। অনিল সিং যোগ করেন, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে উঠে এসেছে মাদকচক্রীদের সঙ্গে সরাসরি ড্রাগস কেনাবেচার কথা বলেছে, সেখানে টাকার লেনদেনের কথাও হয়েছে। কোনওভাবেই ওকে ‘বেনিফিট অফ ডাউট’ দেওয়া যায় না।
আরিয়ান খানের জামিনের বিরোধিতা করে এদিন অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল কোর্টকে আরও জানান, আরিয়ান খানের কাছ থেকে কোনও মাদক উদ্ধার হয়নি বলে যে সাফাই গাইছে তাঁর আইনজীবীরা তা সম্পূর্ণ ভুল। তাঁরা (আরবাজ ও আরিয়ান) ওই ক্রুজে পৌঁছেছিল পার্টি করতে, তার উল্লেখ রয়েছে পঞ্চনামায়। সেখানে আরিয়ান স্পষ্ট বলেছে আরবাজের কাছে থাকা ওই নিষিদ্ধ মাদক তাঁদের দুজনের ব্যবহারের জন্য ছিল। মাদকচক্রের সঙ্গে যোগ প্রমাণিত হলে মাদকের পরিমাণ কত ছিল বা আদৌ মাদক সঙ্গে ছিল কিনা, তা জরুরি নয় বলে জানান এএসজি। উপযুক্ত ধারা এনডিপিএস আইনে মজুত রয়েছে। বেআইনি মাদকচক্রের সঙ্গে আরিয়ান, আরবাজরা যুক্ত, সেই যোগসূত্র প্রমাণের জন্য সময় চাই তদন্তকারীদের। এব্যাপারে বিদেশ মন্ত্রকের সাহায্য নিয়ে আরিয়ানের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে পাওয়া বিদেশি নাগরিকদের খোঁজ চালাচ্ছে এনসিবি।
এদিন অনিল সিং জানান, এনডিপিএস আইনের আওতায়, অভিযুক্ত নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত এজেন্সির দাবিই সঠিক হবে ধরতে হবে। এখানে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত নির্দোষ, এই যুক্তি খাটে না।
আরিয়ানের আইনজীবীদের পালটা যুক্তি ড্রাগস চ্যাটের পরিপ্রেক্ষিত বিচার করতে হবে, হয়ত তরুণ ছেলেরা অন্য কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিল, যা ড্রাগস চ্যাট বলে ধরে নিচ্ছে এনসিবি। আজকের প্রজন্ম তো আর যথাযথ ইংরাজি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট করে না। আরিয়ানের জামিন পেলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনও বাধা আসবে না, তেমনটাও জানান আরিয়ানের কৌঁসুলি।
দুই পক্ষের সওয়াল-জবাব শুনে রায় সংরক্ষিত রেখেছে আদালত, দশেরার ছুটির পর আগামী বুধবার খুলবে কোর্ট। সেইদিন আরিয়ান-সহ আরবাজ ও মুনমুন ধমেচার জামিনের আবেদনের রায় ঘোষণা করবে সেশন কোর্ট।