রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডে জোর কদমে চলছে তদন্ত। এই ঘটনায় এবার কলম ধরলেন কবি জয় গোস্বামী। প্রকাশিত হল তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘দগ্ধ’। গুরুচণ্ডালী প্রকাশনীর থেকে প্রকাশিত হয় এই বই। বগটুইয়ের হত্যাকাণ্ড বিষণ্ণ করে তুলেছে কবির মনকে। রামপুরহাটের বগটুই-কাণ্ডের পর জয় গোস্বামী লিখলেন কাব্যগ্রন্থ ‘দগ্ধ’। প্রশ্ন করছেন, ‘এই ঘটনার পর কবিতা বলে কি কিছু বাকি থাকে নাকি?’
বগটুইয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে অবশ্য বিশেষ মন্তব্য করতে দেখা যায়নি বাংলার বুদ্ধিজীবী মহলকে। জয়ের নতুন এই কাব্যগ্রন্থে রয়েছে আটটি কবিতা। তাতে অবশ্য শাসকের বিরুদ্ধে কোনও শব্দ লেখা নেই। প্রতিটি কবিতার মধ্যে রয়েছে ভয়াবহতা, পুড়ে যাওয়ার যন্ত্রণা। প্রায় দেড় দশক আগে নন্দীগ্রামকাণ্ডের পর প্রকাশিত হয়েছিল জয়ের কাব্যগ্রন্থ ‘শাসকের প্রতি’। ‘দগ্ধ’-এ কবি লিখেছেন, ‘আমার লেখার ঘরে মেঝেভর্তি করে/ একজনের উপর একজন/ ওরা স্তূপীকৃত হয়ে আছে…/ ওদের দাফন করব এখন কোথায়?’
'কাব্যগ্রন্থ'-এর ভূমিকাতে লেখা রয়েছে, ‘রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে প্রতিশোধের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল একদল নিরপরাধ মানুষ। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ওরা কেউ ঘুণাক্ষরেও ভাবেনি, এই ঘুম ভাঙবে না আর। মানুষ পোড়া কটু গন্ধ নাকে নিয়ে যে রাতে ওদের সন্ত্রস্ত প্রতিবেশীরা গ্রাম ছাড়ছে, এই কবিতাগুলি সেই বিনিদ্র রজনীর সন্তান। যে শিশু, যে মা জীবদ্দশায় জানতে পারেনি কোন গোষ্ঠীর হাতে তার বাঁচা-মরার অধিকার ন্যস্ত, এ কবিতাগুচ্ছ তারই নিরুপায় শোকগাথা।’।
উল্লেখ্য, ২১ মার্চ রাতে বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে গ্রামের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হয়েছিলেন বোমা হামলায়। এরপরই সেই গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় সোনা শেখ এবং আরও বেশ কয়েকজনের বাড়ির উপর চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। আগুন ধরিয়ে দেওয়া বাড়িগুলিতে। এর মধ্যে সোনা শেখের বাড়িতে বেশ কয়েকজন মহিলা ও শিশুসহ মোট সাত জন পুড়ে মারা যায়।