পানভেলের ফার্মহাউজে বলিউড সুপারস্টার সলমন খানকে খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া দুই ব্যক্তির জামিন মঞ্জুর করল বম্বে হাইকোর্ট। যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল এবং আলোচনা করা হয়েছিল, সেখানে অভিযুক্তদের উপস্থিতি ছাড়া আর কোনও উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি, আদালত উল্লেখ করেছে।
২০২৪ সালের ১৪ এপ্রিল বান্দ্রায় অভিনেতার বাড়ির বাইরে গুলি চালানোর ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে তাঁর ফার্মহাউসে হামলার ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পারে পুলিশ। অভিযুক্ত ভাস্পি মেহমুদ খান ওরফে ভাসিম চিকনা এবং গৌরব বিনোদ ভাটিয়া ওরফে সন্দীপ বিষ্ণোইকে গুলি চালানোর ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর এরপরই পানভেল পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত অজয় কাশ্যপের সম্পর্কে, যিনি সলমন খানের ফার্মহাউসে রেইকি করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য ভাসপি ও গৌরবের সঙ্গে কাশ্যপের যোগাযোগ ছিল।
পানভেল পুলিশ সহ-অভিযুক্ত অজয় কাশ্যপের সম্পর্কে গোপন তথ্য পেয়েছিল, যিনি ফার্মহাউসে রেকি করেছিলেন বলে অভিযোগ। জামিনের শুনানি চলাকালীন ভাসপি এবং গৌরব দাবি করে যে, অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী তনভীর আজিজ প্যাটেল এবং অসিত যশবন্ত চাওয়ার বলেন, এই মামলায় সলমন জড়িত থাকার কারণে এবং মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার কারণে দায়রা আদালত তাদের জামিনের আবেদন আগেই খারিজ করে দিয়েছিল।
আইনজীবীরা আরও দাবি করেন যে, তাঁদের ক্লায়েন্টদের বিরুদ্ধে একমাত্র অভিযোগ হ'ল হোয়াটসঅ্যাপ চ্যেটে উপস্থিতি, যেখানে কথিত ষড়যন্ত্রটি করা হয়েছিল। এক অভিযুক্ত দীপক গগৈ ইতিমধ্যেই জামিন পেয়েছেন। এরপর আইনজীবীরা আদালতের কাছে তাদের মক্কেলদের জন্য স্বস্তি চান এবং জোর দিয়ে বলেন যে, তারা লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের অংশ ছিলেন না বা ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন না।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর গীতা পি মুলেকার অবশ্য অপরাধের গুরুত্ব এবং অভিযুক্ত জুটি এবং লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের মধ্যে কথিত সংযোগের উপর জোর দিয়েছিলেন। মুলেকর জানান, দু'জনেই একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য ছিলেন, যেখানে পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের সদস্যরাও ছিলেন এবং তারা অপরাধ সমন্বয় করার জন্য একাধিক ফোন কলও করে।
উভয় পক্ষের শুনানির পরে, বিচারপতি এনআর বোরকারের একক বেঞ্চ অভিযুক্তদের জামিন মঞ্জুর করে উল্লেখ করে যে, আরেক সহ-অভিযুক্ত দীপক গগৈকে ২০২৪ সালে দায়রা আদালত জামিন দিয়েছিল। তাই সমতা রক্ষার্থেই এই রায়। আদালত উল্লেখ করেছে যে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে উপস্থিতি ছাড়া দুজনের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই।
‘তাদের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তিকর তথ্য এখনও জোগাড় করতে পারেনি মুম্বই পুলিশ। এমনকী হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটগুলিও অস্পষ্ট’, আদালত উল্লেখ করেছে। তবে আদালতের তরফে এই দুজনের গতিবিধি নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের মুম্বই শহর এবং শহরতলির জেলাগুলিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।